তিনিও দেহদানের অঙ্গীকার করেছিলেন জানিয়ে বলেন, ‘এ সব দেখে এখন ভাবছি, সেই অঙ্গীকার ফিরিয়ে নেব কিনা। মানুষের মৃত্যুকেও এরা সম্মান দিতে জানে না।’ দেহদানের অঙ্গীকার করেছেন বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন সহ-রেজিস্ট্রার দেবমাল্য ঘোষ। তাঁর কথায়, ‘ডাক্তারি শাস্ত্রে কাজে লাগবে বলে দেহদানের অঙ্গীকার করেছিলাম। এখন আমি সত্যিই এটা নিয়ে ভাবছি।’
চিকিৎসা বিজ্ঞানে অগ্রগতির জন্য এক সময়ে দেহদান আন্দোলন গড়ে ওঠে রাজ্যে। মৃত্যুর পরে দাহ না করে গবেষণার জন্য দেহদানের আবেদন করেছিলেন চিকিৎসক, সমাজকর্মী থেকে বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা। পরে বিষয়টি একটি সামাজিক আন্দোলনের রূপ নেয়। ধারাবাহিক প্রচারে বহু মানুষ দেহদান করতে এগিয়ে আসেন। সেখানে অ্যানাটমি বিভাগ থেকে দেহ পাচারের ঘটনায় তাঁরা ব্যথিত।
বিশিষ্ট শল্য চিকিৎসক সৈকত সরকার বলেন, ‘অ্যানাটমি বুঝতে এমবিবিএস কোর্সে ক্যাডাভেরিক ডিসেকশন পড়ানো হয়। বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজের ঘটনায় আমরাও চিন্তিত।’ লেখক মানব বন্দ্যোপাধ্যায় বলছেন, ‘এ বার দেহদানের অঙ্গীকারপত্রে সই করার সময়ে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের কাছে আমরা লিখিত ভাবে জানতে চাইব যে, মৃত্যুর পরে দেহ পাচার হবে না।’
এ নিয়ে সরকারের কঠোর পদক্ষেপ করা উচিত বলে জানিয়েছেন অ্যাসোসিয়েশন অফ হেল্থ সার্ভিসের যুগ্ম সম্পাদক সুবর্ণ গোস্বামী। তিনি বলেন, ‘এমন ঘটনার কথা মানুষ যত জানতে পারছেন, স্বাভাবিক ভাবেই তাঁরা দেহদান নিয়ে নতুন করে ভাবতে শুরু করেছেন। আমাকেও আজ সকাল থেকে অনেকে ফোন করেছেন। দীর্ঘদিন ধরে মেডিক্যাল ছাত্রদের পড়াশোনার সুবিধার্থে দেহদানের আন্দোলন চালিয়ে এসেছি আমরা। এমন ঘটনায় সেই আন্দোলন বাধাপ্রাপ্ত হবে। মানুষকে ফের নতুন করে বোঝাতে হবে। কঠোর পদক্ষেপ করে মানুষকে জানানো উচিত সরকারের।’