Balurghat Child Death: কর্মবিরতি নয়, বালকের মৃত্যু স্রেফ অবহেলায় – balurghat a family claims their 9 years old child lost life due to doctors negligence


জুনিয়র ডাক্তারদের কর্মবিরতির কারণে নয়, কর্তব্যরত চিকিৎসকের গাফিলতিতেই তাঁদের ছেলের মৃত্যু হয়েছে! এমনই দাবি বালুরঘাটের দুর্ঘটনায় মৃত বালকের পরিবারের।

কর্মবিরতির ফলে রাজ্যে বিনা চিকিৎসায় ২৯ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে সম্প্রতি ঘোষণা করা হয়েছে। গত ৯ সেপ্টেম্বর সুপ্রিম কোর্টে আরজি কর কাণ্ডের শুনানিতে ওই ২৯ জনের মধ্যে ২৪ জনের তালিকা জমা দেওয়া হয় রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে। দাবি করা হয়, জুনিয়র চিকিৎসকদের কর্মবিরতির কারণেই ওই ২৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। সেই তালিকায় ছিল বালুরঘাটের এই বালকের নাম। তার পর থেকে আরও পাঁচ জনের নাম যুক্ত হয়েছে ওই তালিকায়।

এই ২৯টি পরিবারকে দু’লক্ষ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে বলে ঘোষণাও করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। যদিও প্রশাসন সূত্রের খবর, সেই ঘোষণা সংক্রান্ত কোনও সরকারি নির্দেশিকা এখনও প্রকাশিত হয়নি।

সেই ২৯ জনের তালিকায় প্রথমেই নাম রয়েছে বালুরঘাটের শিবম শর্মা (৯)-র। গত ১২ অগস্ট মৃত্যু হয়েছিল তার। ‘বিনা চিকিৎসায় মৃত্যু’-র সরকারি তালিকায় নাম থাকলেও পরিবারের তরফে সোমবার জানানো হয়েছে, শিবমের মৃত্যুর সঙ্গে আরজি কর সংক্রান্ত আন্দোলনের কোনও যোগ নেই। মোটেও কর্মবিরতির জেরে মৃত্যু হয়নি তার।

পরিবারের আরও দাবি, এই মৃত্যুর জন্য সরকারের পক্ষ থেকে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার কথা প্রশাসনের কেউ তাদের সরাসরি জানাননি। তারা তৃণমূলের আইটি সেলের করা সোস্যাল মিডিয়ার পোস্ট থেকে বিষয়টি জানতে পারেন। পরিবারের দাবি, যোগাযোগ করা হলেও তারা সেই ক্ষতিপূরণ নেবে না।

বিনা চিকিৎসায় মৃতদের পরিবারকে ২ লক্ষ টাকা আর্থিক সাহায্যের ঘোষণা মুখ্যমন্ত্রীর
স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, এই মৃত্যুর জন্য জুনিয়র ডাক্তারদের যে আন্দোলনের দিকে আঙুল তোলা হয়েছে, তা বালুরঘাট কেন, দক্ষিণ দিনাজপুরের গোটা জেলার কোথাওই হয়নি। তার কারণ এই জেলায় কোনও মেডিক্যাল কলেজই নেই। ফলে কোনও জুনিয়র ডাক্তারও নেই। কাজেই তাঁদের কর্মবিরতির প্রভাব বালুরঘাট জেলা হাসপাতালে পড়ার কোনও প্রশ্নই ওঠে না।

সোমবার এ কথা জানিয়ে মৃত শিবমের দিদি রিঙ্কি শর্মাও বলেন, ‘জুনিয়র ডাক্তারদের আন্দোলনের জেরে আমার ভাইয়ের মৃত্যু হয়েছে বলে যে প্রচার করা হচ্ছে, তা মিথ্যে। আমরা টাকা চাই না, আমরা বিচার চাই, ওই চিকিৎসক (যাঁর বিরুদ্ধে গাফিলতির অভিযোগ উঠেছে) শাস্তি চাই।’

আরজি করের ঘটনার ঠিক তিন দিন পরে বড়দের সঙ্গে শিবের মাথায় জল ঢালতে যাচ্ছিল ক্লাস থ্রি-র ছাত্র শিবম। পতিরামের রাস্তায় হঠাৎই একটি টোটো নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে উল্টে যায়। তাতেই চাপা পড়ে গুরুতর জখম হয় শিবম। তড়িঘড়ি তাকে বালুরঘাট জেলা হাসপাতালে আনা হলেও ঘণ্টাদুয়েক কোনও চিকিৎসক দেখতে আসেননি বলে পরিবারের অভিযোগ। পরে শিবমের মৃত্যু হলে প্রতিবাদে সার্জিক্যাল ওয়ার্ডে ভাঙচুর চালান পরিবারের লোকেরা। প্রায় ঘণ্টা তিনেক পরে তার মৃত্যুর কথা ঘোষণা করে হাসপাতাল।

‘সরকারি হাসপাতালে কর্মবিরতির জেরে পরিষেবায় ত্রুটি হয়নি’, দাবি মৃতের পরিবারের
বালুরঘাট জেলা হাসপাতালের সুপার কৃষ্ণেন্দুবিকাশ বাগ সে দিনই বলেছিলেন, ‘রোগীর অবস্থা খারাপ ছিল। তবে দায়িত্বে থাকা চিকিৎসক দেরিতে এসেছিলেন।’ শিবমের কাকা আনন্দ শর্মার দাবি, ‘চিকিৎসা না পেয়ে আমার ভাইপোর মৃত্যু হয়েছে। এর জন্য দায়ী শুধুমাত্র ওই চিকিৎসক এস হাসান।’ অভিযুক্ত চিকিৎসক এ নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি।

শিবমের পিসতুতো দাদা পবিত্র সূত্রধরের কথায়, ‘অভিযুক্ত ডাক্তারকে আড়াল করতে থানা আমাদের এফআইআর পর্যন্ত নেয়নি। পরে ডাকযোগে পুলিশ সুপারের মাধ্যমে অভিযোগ জমা করি। কিন্তু আজ পর্যন্ত তদন্তই শুরু হয়নি। আমাদের সঙ্গে পুলিশের কেউ এসে কথা বলেননি। হাসপাতালেও রোগী ভর্তি সংক্রান্ত কোনও কাগজ দেওয়া হয়নি। টাকা নয়, আমরা বিচার চাই।’

হাসপাতালের সুপার এবং জেলা স্বাস্থ্য আধিকারিকের কাছেও লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছিল পরিবার। জেলা স্বাস্থ্য দপ্তর ওই চিকিৎসকের বিরুদ্ধে কমিটিও তৈরি করে। কিন্তু সেই চিকিৎসকের বিরুদ্ধে কী পদক্ষেপ করা হয়েছে, তা তাঁদের জানানো হয়নি বলেও দাবি করেছে পরিবার।

বালুরঘাট থানার আইসি শান্তিনাথ পাঁজা সোমবার বলেন, ‘থানায় অভিযোগ হয়েছে। তদন্ত কমিটির বিষয়টি সিএমওএইচ দেখছেন। তিনিই বলতে পারবেন।’ সিএমওএইচ সুদীপ দাস বলেন, ‘বিষয়টি নিয়ে তদন্ত হয়েছে। তদন্ত রিপোর্ট স্টেট অথরিটির কাছে পাঠানো হয়েছে।’ আর হাসপাতালের সুপার বলেন, ‘তদন্ত রিপোর্ট স্বাস্থ্য ভবনে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে।’



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *