West Bengal Government,’সরকারি হাসপাতালে কর্মবিরতির জেরে পরিষেবায় ত্রুটি হয়নি’, দাবি মৃতের পরিবারের – bankura sibu malakar family demand that bankura sammilani college doctors gave him good treatment


জুনিয়র ডাক্তারদের কর্মবিরতির জেরে চিকিৎসা না পেয়ে রাজ্যে যে ২৯ জনের মৃত্যু হয়েছে তাঁদের পরিবারের পাশে থাকার বার্তা দিয়েছিল রাজ্য। প্রত্যেকের পরিবারকে ২ লক্ষ টাকা আর্থিক সাহায্যের ঘোষণাও করা হয় সরকারের পক্ষ থেকে। এই ২৯ জনের তালিকায় নাম রয়েছে বাঁকুড়ার শিবু মালাকারের। কিন্তু তাঁর পরিবারের দাবি, আন্দোলনকারী জুনিয়র চিকিৎসকদের কর্মবিরতির জন্য শিবুর সরকারি হাসপাতালের চিকিৎসায় কোনও গাফিলতি হয়নি। এই দাবিকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক টানাপোড়েন শুরু হয়েছে।বাঁকুড়া পুরসভার ১৯ নম্বর ওয়ার্ডের বিবেকানন্দ পল্লির বাসিন্দা শিবু মালাকার। তিনি পেশায় ছিলেন মোটবাহক। গত ১১ অগস্ট সিভিয়র ব্রেন স্ট্রোকে আক্রান্ত হন শিবু। তড়িঘড়ি তাঁকে বাঁকুড়া সম্মিলনী মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে গত ১৬ অগস্ট পর্যন্ত চিকিৎসাধীন ছিলেন শিবু। চিকিৎসায় সাময়িক সুস্থ হয়ে ওঠায় তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হয় এবং তিনি বাড়ি ফিরে যান। পরে ফের তিনি অসুস্থ হয়ে পড়লে ফের তাঁকে নিকটবর্তী একটি নার্সিংহোমে ভর্তি করা হয়। সেই নার্সিংহোমেই চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত ২২ অগস্ট মৃত্যু হয় শিবুর।

মৃতের স্ত্রী সুমিত্রা মালাকার বলেন, ‘সরকারি হাসপাতালে ৪ দিন ভর্তি ছিল ও (শিবু)। পাঁচ দিনের মাথায় ওকে ছাড়া হয়। সেখানে ডাক্তারবাবুরা ওকে দেখেছিলেন। তাঁরা সিনিয়র না কি জুনিয়র, জানি না। নার্সরাও ওর দেখভাল করেন। সেখানে ডাক্তাররা ঠিকমতো চিকিৎসা করেছিলেন। বাড়িতে আনার পর দু’দিন ভালোই ছিল। পরে ওর খিঁচুনি হয়। একটা নার্সিংহোমে নিয়ে গিয়েছিলাম। সেখানেই ওর মৃত্যু হয়।’ সরকারি হাসপাতালের চিকিৎসকদের বিরুদ্ধে কোনও অভিযোগ তাঁর মুখে শোনা যায়নি। তবে রাজ্য আর্থিক সাহায্য করলে তিনি গ্রহণ করবেন বলে জানান। মৃতের মামা রঞ্জিত সাইনি বলেন, ‘সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা ব্যবস্থা ঠিকই ছিল।’

মৃতের পরিবারের এই মন্তব্য সামনে আসার পরেই সুর চড়াতে শুরু করেছেন বিরোধীরা। প্রাক্তন কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী সুভাষ সরকার রাজ্যকে বিঁধেছেন। তিনি বলেন, ‘শিবু মালাকার বাঁকুড়া মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি থাকার পর সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছিলেন। পরিবারেরও অভিযোগ নেই সরকারি হাসপাতালের ডাক্তারদের বিরুদ্ধে। এই বিষয়গুলি কিন্তু সুপ্রিম কোর্ট ধরে ফেলবে।’

সুভাষ সরকারের পাল্টা সুর চড়িয়েছেন শিবু মালাকারের ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর শেখ আজিজুল। তিনি আন্দোলনরত জুনিয়র ডাক্তারদের দুষেছেন। তাঁর কথায়, ‘সরকারি হাসপাতালে এই রোগীর কোনও চিকিৎসাই হয়নি। বরং তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হয়। সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা না পেয়ে তাঁর পরিবারের লোকজন দিশেহারা হয়ে নার্সিংহোমে নিয়ে যান। কেন পরিবার সরকারি হাসপাতালের গাফিলতির কথা বলছে না, তা বুঝতে পারছি না।’ সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা পাননি শিবু, এই দাবিতে অনড় এই তৃণমূল কাউন্সিলর।

এই ঘটনা প্রসঙ্গে বাঁকুড়া সম্মিলিনী মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ পঞ্চানন কুণ্ডু বলেন, ‘ওই রোগীর মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ হয়েছিল। ওকে ১৬ অগস্ট ছাড়া হয় আমাদের হাসপাতাল থেকে মোটের উপর স্থিতিশীল অবস্থায়। তারপর বাড়িতে গিয়ে রোগীর কী হয় তা আমরা জানি না। ওর মেডিক্যাল রিপোর্ট দেখে চিকিৎসার গাফিলতির কথা আমরা দেখতে পাচ্ছি না। তালিকায় শিবু মালাকারের নাম কীভাবে এল, তা জানি না। আমরাও অবাক।’

Trinamool Congress: পরের পর রোগী মৃত্যু, জোর প্রচারে তৃণমূল

বাঁকুড়া সম্মিলনী মেডিক্যাল কলেজের সুপার অর্পণ গোস্বামী বলেন, ‘জুনিয়র চিকিৎসকদের আন্দোলনের জন্য কোনও রোগীকে চিকিৎসা দেওয়া হয়নি এমন কিন্তু হয়নি। প্রথম থেকেই সিনিয়র ডাক্তাররা সক্রিয় থেকেছেন। আমাদের তরফে শিবু মালাকারের চিকিৎসায় কোনও গাফিলতি ছিল না।’



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *