যদি সেখানে মৃতদেহটা সৎকার করা যায়। অবশেষে অনুমতি মেলে এক আত্মীয়ের গ্রামে। বাড়ি থেকে ডিঙিতে করে মৃতদেহ নিয়ে আসা হয় ডাঙায়। সেখান থেকে শববাহী গাড়িতে চাপিয়ে মৃতদেহ নিয়ে যাওয়া হয় প্রায় ১০ কিলোমিটার দূরে দাসপুরের বেলেঘাটায়। সেখানে আত্মীয়দের গ্রামের শ্মশানেই প্রতিমা দেবীর মৃতদেহ দাহ করেন প্রিয়জনেরা। বন্যা পরিস্থিতিতে ঘাটালে এমন ঘটনা একাধিক।
মৃতার দেওর রাজকুমার চৌধুরী বলেন, ‘বৌদিকে কোথায় দাহ করব, তা নিয়ে টেনশন হতে শুরু করেছিল। সব আত্মীয়কে ফোন করে শ্মশান খোঁজার চেষ্টা করেছি। অবশেষে এক আত্মীয় গ্রামের লোকজনের সঙ্গে কথা বলে মৃতদেহ দাহ করার ব্যবস্থা করেন দূরের শ্মশানে। অনেক কসরৎ করে দেহ নিয়ে যেতে হয়েছে।’ মৃতার ভাগ্নে সঞ্জয় মান্না বলেন, ‘ঘাটালে ফি বছর বন্যা হলেই শ্মশান ডুবে যায়। আর তার মধ্যে কেউ মারা গেলে কী যন্ত্রণা পেতে হয়, তা বলে বোঝানো যাবে না।’
সোমবার রাতেও ঘাটালের আজবনগর-১ গ্রাম পঞ্চায়েতের ব্যাংরাল এলাকায় মৃত্যু হয় এক ব্যক্তির। গোটা এলাকা জলে ডুবে থাকায় দাহ করার জায়গা না পেয়ে মৃতদেহ ফেলে রাখতে হয় মঙ্গলবার পর্যন্ত। পরে স্থানীয় জনপ্রতিনিধির সাহায্য মেলে। এনডিআরএফ-এর বোট পাঠিয়ে মৃতদেহ তুলে নিয়ে যাওয়া হয় দূরের এক শ্মশানে।
ঘাটালের মহকুমাশাসক সুমন বিশ্বাস বলেন, ‘জলমগ্ন এলাকায় অসুস্থ রোগী, প্রসূতি, মৃতদেহ সৎকার নিয়ে নানা সমস্যা হচ্ছে। জানতে পারলেই সেখানে নৌকো বা স্পিড বোট পাঠানো হচ্ছে। দুর্গত মানুষকে যতটা সম্ভব সহযোগিতা করার চেষ্টা করছি।’
ঘাটাল পঞ্চায়েত সমিতির প্রাক্তন সহকারী সভাপতি তথা ব্লক তৃণমূলের সভাপতি দিলীপ মাজি বলেন, ‘ঘাটালের মানুষের এই যন্ত্রণা সত্যি কঠিন। দূরে হলেও আমরা কয়েকটি শ্মশান চুল্লি তৈরি করেছি। কেউ মারা গেলে এনডিআরএফ পাঠিয়ে বোট বা নৌকো করে মৃতদেহ উদ্ধার করে আনতে হচ্ছে সৎকার করার জন্য। এছাড়া উপায় তো কিছু নেই।’