Flood In Hooghly: ত্রাণের হাহাকার খানাকুল থেকে আরামবাগের সর্বত্র – khanakul to arambagh there were complaints about flood relief


এই সময়: সাদা চুনকাম করা বাড়ি। চিলেকোঠার পাশে সবুজ রঙের জলের ট্যাঙ্কটাও অক্ষত। মুহূর্তের মধ্যে সাজানো বাড়িটা হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়ল জলে। চোখের পলকে তীব্র স্রোতে ভেসে গেল কে জানে কার সাজানো সংসার!গত কয়েক দশকের সবচেয়ে ভয়াবহ বন্যায় বিধ্বস্ত আরামবাগ মহকুমা। সবচেয়ে খারাপ অবস্থা খানাকুলের। শুক্রবার সকালে খানাকুলের কিশোরপুর-১ গ্রাম পঞ্চায়েতের তালিত গ্রামে দ্বারকেশ্বর নদের বাঁধভাঙা জলে হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়ে আস্ত একটা বসত বাড়ি। এ দিন সকাল থেকে ছ’টি বসত বাড়ি ওই একই জায়গায় পরপর ভেঙে পড়ে। এ দিন পুরশুড়ার মাইতিপাড়ায় বন্যার জলে পড়ে গিয়ে মৃত্যু হয় এক ব্যক্তির। মৃতের নাম সুশান্ত মাইতি (৫০)।

বুধবারই পুরশুড়ায় গিয়ে ত্রাণ নিয়ে অভিযোগ শুনে এসেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রশাসনিক আধিকারিকদের এ নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী ধমক দেওয়ার পর বৃহস্পতিবার অনেক জায়গাতেই ত্রাণ বিলি নিয়ে সক্রিয় হয় প্রশাসন। কিন্তু তার পরেও বন্যার ত্রাণ নিয়ে দুর্গত বহু এলাকা থেকেই অভিযোগ উঠেছে শুক্রবারও।

ত্রাণের কাজে পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ তুলে আরামবাগের হরিণখোলা-২ গ্রাম পঞ্চায়েতের আমগ্রাম কানাদিঘিতে শাসক দলের পঞ্চায়েত সদস্যাকে আরামবাগ-চাঁপাডাঙা রাজ্য সড়কের উপর ঘিরে মহিলারা তুমুল বিক্ষোভ দেখান। ত্রাণ ও নৌকোর দাবিতে খানাকুলের পোল-২ গ্রাম পঞ্চায়েতে তালা ঝুলিয়ে বিক্ষোভ দেখান বন্যা দুর্গতরা। আরামবাগের দক্ষিণ নারায়ণপুর ব্লক গ্রামীণ হাসপাতাল জলমগ্ন। গোটা হাসপাতালে শুধুমাত্র দু’জন রোগী ভর্তি আছেন। আউটডোর পরিষেবা বন্ধ।

ডিভিসির ছাড়া জলে ভয়াবহ বন্যা পরিস্থিতি আমতা-২ ব্লকে। শুক্রবার সকাল থেকে উদয়নারায়ণপুরের বন্যা পরিস্থিতির সামান্য উন্নতি হলেও দুর্ভোগ কমেনি সাধারণ মানুষের। উদয়নারায়ণপুর ও আমতায় মোট ১৫৩টি ত্রাণ শিবির খোলা হয়েছে। প্রায় ১৪ হাজার দুর্গত মানুষ ওই সব শিবিরে আশ্রয় নিয়েছেন। উদয়নারায়ণপুর থানা এলাকার মধ্যে খলতপুরে আল আমিন মিশনের প্রধান কার্যালয়। সেখানকার আবাসিক হস্টেলে প্রায় দু’হাজার ছাত্রছাত্রীকে বাড়ি পাঠিয়ে দিয়েছেন মিশন কর্তৃপক্ষ।

শুক্রবার আমতা বিধানসভা এলাকায় যাতায়াতকারী ঝিকিরা-হাওড়া, মুচিঘাটা-করুণাময়ী রুটের বাস চলাচল বন্ধ। অমরাগড়ির বিবি ধর হাসপাতাল জলের তলায়। ইমার্জেন্সি থেকে আউটডোর, যাতায়াতের জন্য নৌকো চলছে হাসপাতালে। দুই ব্লকেই জলমগ্ন হাজার হাজার বিঘের চাষের জমি। ডিভিসির ছাড়া জলে ভেসে আসা কচুরিপানা সরাতে ক্রেন ব্যবহার করা হচ্ছে।

নতুন করে আর জল ছাড়া না হলেও পাঁশকুড়ার বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত। জল না নামায় পাঁশকুড়া পুরসভার ১৮টি ওয়ার্ড-সহ ১৪টি অঞ্চল জলমগ্ন। দুর্গত এলাকায় পর্যাপ্ত ত্রাণ ও পানীয় জলের সঙ্কট দেখা দিয়েছে। ত্রাণ লুটের অভিযোগও উঠেছে। এ দিন সকালে জলবন্দি পাঁশকুড়া পুরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ডের এক অসুস্থ শিশু ও তার মাকে উদ্ধার করে নিরাপদ আশ্রয়ে পৌঁছে দেয় পাঁশকুড়া থানার পুলিশ ও এনডিআরএফের উদ্ধারকারীরা। আশপাশের ব্লকে তিনটি কন্ট্রোলরুম খোলা হয়েছে।



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *