জনস্বাস্থ্য ও কারিগরি দপ্তরের (পিএইচই) দু’টি জলপ্রকল্প রয়েছে কল্যাণেশ্বরীতে। তার মধ্যে একটি ১৯৭৫ সাল থেকে। আরও একটি জল প্রকল্পের কাজ শুরু করার কথা অক্টোবরে। তা ছাড়া কল্যাণেশ্বরীতে ৪৭৮ কোটি টাকার আরও একটি নতুন জলপ্রকল্পের অনুমোদন মিলেছে। ওই প্রকল্প চালু হলে সেখান থেকে জল সরবরাহ করা হবে পাণ্ডবেশ্বর, রানিগঞ্জ, উখড়া ও অন্ডালে।
আসানসোল পুরনিগম এলাকার বহু ওয়ার্ড-ও জল সরবরাহের জন্য নির্ভরশীল এই দামোদরের উপর। সব মিলিয়ে প্রায় ১৫ লক্ষ মানুষ দামোদরের জলে উপকৃত। তা ছাড়া, আসানসোল শিল্পাঞ্চলে থাকা রেল, ইসিএল ও ইসকো-র কারখানার কাজে লাগছে দামোদরের জল। আসানসোল শিল্পাঞ্চলে ডিভিসি রোজ ১৫০০ কিউসেক জল দেয়।
ডিভিসি-র জল ছাড়া নিয়ে দিন কয়েক আগে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ক্ষুব্ধ হন। তিনি সরাসরি ডিভিসি-র সঙ্গে সব সম্পর্ক ছিন্ন করার হুঁশিয়ারি দেন। গত বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে বাংলা-ঝাড়খণ্ড সীমানা সিল করে দেওয়া হয়। তার পর অবশ্য বৃষ্টি না-হওয়ায় মাইথন ও পাঞ্চেত জলাধার থেকে জল ছাড়া অনেকটাই কমানো হয়েছে।
তবে কল্যাণেশ্বরীর জল প্রকল্পের দায়িত্বে থাকা এক ইঞ্জিনিয়ার বলেন, ‘আমাদের সঙ্গে ডিভিসি-র চুক্তি রয়েছে। আমরা জল নিই, সে জন্য ওদের টাকা দিই। আশা করি, কোনও সমস্যা হবে না।’ ডিভিসি-র সঙ্গে একই রকম চুক্তির কথা উল্লেখ করে একই বক্তব্য আসানসোল পুরনিগমের চেয়ারম্যান অমরনাথ চট্টোপাধ্যায়েরও।
ডিভিসি-র এগজ়িকিউটিভ ডিরেক্টর (সিভিল) আঞ্জনিকুমার দুবের বক্তব্য, ‘এখনই আশঙ্কা করার মতো কিছু নেই। এই বিষয়ে কোনও আলোচনাই হয়নি। আমরা আসানসোল শিল্পাঞ্চলে পুরসভা-সহ বিভিন্ন এলাকায় প্রতিদিন ১৫০০ কিউসেক জল দিই।’
এই অবস্থায় রাজনীতির জলও ঘোলা হচ্ছে। কুলটির বিধায়ক, বিজেপির অজয় পোদ্দার বলছেন, ‘এমন কোনও পদক্ষেপ করা উচিত নয়, যাতে সাধারণ মানুষ বিপদে পড়েন। মুখ্যমন্ত্রী সব কিছু নিয়ে রাজনীতি করেন। জল ছাড়ার বিরোধিতা করে বাংলা-ঝাড়খণ্ড সীমানা সিল করে দেওয়ায় সাধারণ মানুষেরই ক্ষতি হলো।’ তৃণমূলের জেলা চেয়ারম্যান উজ্জ্বল চট্টোপাধ্যায়ের বক্তব্য, ‘বিজেপি সব কিছুতেই বাংলা-বিরোধী চক্রান্ত করে। জল ছাড়া নিয়ে ওরা এখন নতুন করে রাজনীতি করছে।’