বৃত্ত যেন সম্পূর্ণ হল অন্য ভাবেও। চিড়িয়াখানার সেমিনার হলের পাশে মঙ্গলবার রামব্রহ্ম সান্যালের মূর্তি উন্মোচন করা হল। মূর্তিতে মালা দিলেন সোমনাথ সান্যাল। রামব্রহ্মের সঙ্গে তাঁর রক্তের সম্পর্ক। তিনি সোমনাথের ঠাকুরদার বাবা। দেশের প্রাচীনতম চিড়িয়াখানার প্রথম বাঙালি অধিকর্তা রামব্রহ্মের হাতেই শুরু হয়েছিল বিভিন্ন চিড়িয়াখানা থেকে এবং বিদেশ থেকে কলকাতায় নানা জীবজন্তু ও পাখি আমদানির কাজ। সেই ধারা আজ ‘ফ্রেন্ডলি এক্সচেঞ্জ’ নামে পরিচিত।
মঙ্গলবার চিড়িয়াখানার ১৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে যে বিশেষ অনুষ্ঠান শুরু হল, সেটা চলবে এক বছর ধরে। এ দিন চিড়িয়াখানায় উপস্থিত ছিলেন বনমন্ত্রী বিরবাহা হাঁসদা, কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম এবং আরও বিশিষ্টরা। গত পাঁচ দশক ধরে যাঁরা বিভিন্ন সময়ে আলিপুর চিড়িয়াখানার ডিরেক্টরের পদ সামলেছেন, আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল তাঁদেরও।
১৫০ বছরের জন্মদিনে চিড়িয়াখানার আলিপুর রোড ও ন্যাশনাল লাইব্রেরি রোডে দু’টি নতুন গেটের উদ্বোধন করা হয়। এ ছাড়াও বেঙ্গল ফক্স ও লেপার্ড ক্যাটের এনক্লোজ়ার দু’টির উদ্বোধন করা হয়। প্রকাশ করা হয় দু’টি বই। এর মধ্যে একটি বই চিড়িয়াখানার ইতিহাস সম্পর্কিত স্মারক গ্রন্থ। অন্যটি চিড়িয়াখানারই প্রাক্তন অধিকর্তা আশিসকুমার সামন্তর লেখা ‘আলিপুর চিড়িয়াখানার সাতকাহন’। দু’টি বইতেই চিড়িয়াখানার বহু অজানা গল্পের উল্লেখ রয়েছে।
চিড়িয়াখানায় বিভিন্ন পশুপাখিকে ‘দত্তক’ নেওয়ার যে প্রথা প্রচলিত রয়েছে, মঙ্গলবারের বিশেষ অনুষ্ঠানে সেই তালিকায় নিজের নাম তুললেন মন্ত্রী বিরবাহা। তিনি একটি মালয়ান তাপির এবং চারটি মাউজ় ডিয়ার দত্তক নেন। চিড়িয়াখানার ডিরেক্টর শুভঙ্কর সেনগুপ্ত বলেন, ‘এখন এখানে ১২০টি এনক্লোজ়ারে ১৫০ প্রজাতির দু’হাজারের বেশি পশুপাখি রয়েছে। বছরে গড়ে ৩৪ লক্ষ দর্শক চিড়িয়াখানায় আসেন।’ ডিরেক্টর জানিয়েছেন, খুব তাড়াতাড়ি চিড়িয়াখানায় আফ্রিকান লায়ন, গ্রিন অ্যানাকোন্ডা আসবে। সিল আনার পরিকল্পনাও রয়েছে।