Khanakul Flood,প্রাক্তনী এসপির সূত্রে খানাকুলের পাশে নিট-আইআইএম – nit durgapur and iim ahmedabad support to hooghly khanakul flood victims


এখনও কোথাও প্রায় এক গলা জল, কোথাও কোমর ছাড়িয়ে। গত প্রায় ১২ দিন ধরে খানাকুল-১ ও ২ ব্লক জলের তলায়। প্রথম দিন থেকেই হুগলি গ্রামীণ পুলিশ দুর্গতদের পাশে। জেলার পুলিশ সুপার কামনাশিস সেনের নেতৃত্বে চলছে ড্রাই রেশন ও কমিউনিটি কিচেন খুলে বানভাসি মানুষজনকে খাওয়ানো।জেলা পুলিশের এই উদ্যোগ দেখে এগিয়ে এসেছেন অনেক ব্যক্তিই। তবে সব থেকে উল্লেখযোগ্য এনআইটি দুর্গাপুর অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের ২০০৬-এর গ্রুপ, দ্য সিন্ধিয়া স্কুল ওল্ড বয়েজ় অ্যাসোসিয়েশন (সোবা)-র কলকাতা চ্যাপ্টার ও আইআইএম আমেদাবাদের কলকাতা চ্যাপ্টারের পাশে দাঁড়ানো। এগুলো সবই প্রাক্তনীদের নিজস্ব উদ্যোগ। ঘটনাচক্রে জেলার পুলিশ সুপারও এই তিনটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানেরই প্রাক্তনী। ফলে কামনাশিসের সঙ্গে যোগাযোগ করে প্রয়োজন মতো ড্রাই রেশন, পানীয় জল, ওআরএস, জিওলিন-সহ কিট পাঠিয়েছে তারা।

সোবা-র প্রেসিডেন্ট অরুণ কুমার ভগত ‘এই সময়’কে বলেন, ‘১৯৭৮ সালের বন্যা আমি দেখেছি। তখন স্কুলে পড়ি। এ বার খানাকুলের অবস্থা তার থেকেও খারাপ।’ তিনি জানান, সোবা ইতিমধ্যেই পাঠিয়েছে ২৫০ বস্তা ড্রাই রেশন রিলিফ কিট।

এগিয়ে এসেছে এনআইটি দুর্গাপুর অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের ২০০৬-এর একটি গ্রুপ। এখানেও যোগসূত্র এসপি, আইআইএম আমেদাবাদের ক্ষেত্রেও তাই। এই দু’টি প্রতিষ্ঠান থেকে কামনাশিস যথাক্রমে বি-টেক ও এমবিএ পাশ করেছেন। প্রাক্তনীদের সাফ কথা, আর্থিক সামর্থ্য তো অনেকেরই রয়েছে। বহু ক্ষেত্রেই অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়াতে ইচ্ছা হলেও সঠিক জায়গা যোগাযোগ করা যায় না। তাই এ বার নিজেদের প্রাক্তনীকে পাওয়ায় নির্দ্বিধায় প্রয়োজনীয় ত্রাণ পাঠিয়েছেন তাঁরা।

শ্রীরামপুরের বাসিন্দা এনআইটি দুর্গাপুরের প্রাক্তনী অমিত মুখোপাধ্যায় ‘এই সময়’কে বললেন, ‘ফান্ড তোলা কোনও সমস্যা হয়নি। বরং চিন্তা ছিল লজিস্টিকস নিয়ে। সেটা পুলিশ দায়িত্ব নেওয়ায় সহজ হয়েছে। ৫০০টি পরিবারের মতো রিলিফ কিট দিতে পেরে সকলেই খুশি।’

আইআইএমএ-র কলকাতা চ্যাপ্টারের পক্ষে জানানো হয়েছে, তাদের বিভিন্ন প্রাক্তনী এখন দেশে-বিদেশের নানা প্রান্তে ছড়িয়ে রয়েছেন। তাঁরা প্রত্যেকেই নিজের সামর্থ্য মতো এগিয়ে এসেছেন। সেগুলো ইতিমধ্যে পুলিশের মাধ্যমে দুর্গতদের কাছে পৌঁছে গিয়েছে। এই প্রাক্তনীরা ছাড়াও নেসলে-র মতো কর্পোরেটও পাশে দাঁড়িয়েছে পুলিশ-প্রশাসনের। নেসলে কলকাতার এক শীর্ষ আধিকারিক বললেন, ‘আমরা এক হাজার পরিবারের জন্য ড্রাই রেশন দিচ্ছি। চার জনের পরিবারের অন্তত দিন দশেক যাতে যায়, সে ভাবেই ব্যবস্থা করা হয়েছে।’

ডুবেছে বাড়ি, গরম ভাতের টানে কলার ভেলাতেই পাড়ি

পুলিশকে পাশে পাওয়ায় খানাকুলের মানুষজন খুশি। রামনগর স্কুলের হেডমাস্টার অমিতকুমার আঢ্য বললেন, ‘বর্তমানে খানাকুল যেন একটা বিচ্ছিন্ন দ্বীপ। ত্রাণ নিয়ে মানুষের ক্ষোভ আছে। তবে পুলিশ-প্রশাসন সর্বতোভাবে সহযোগিতার চেষ্টা করে চলেছে।’ কামনাশিসের এক ব্যাচমেটের কথায়, ‘ভাগ্যিস এই সময়ে ওঁর এখানে পোস্টিং। বাকি জেলাগুলোর অবস্থা তো দেখছি!’

এসপি-র কথায়, ‘খানাকুলের দু’টো ব্লক মিলিয়ে প্রায় সাড়ে ৬ লক্ষ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত। তাই ওঁদের জন্য যত করা যায়, তত কম।’ তাঁর স্কুল-কলেজের এগিয়ে আসা প্রসঙ্গে প্রশ্ন করলে উত্তর এল, ‘ঘটনাচক্রে আমি এই জেলার দায়িত্বে। চেনা লোক থাকায় ওদের সুবিধা হয়েছে, তা সকলেরই হয়। আমি খুশি যে ওরা প্রত্যন্ত খানাকুলের জন্যও ভেবেছে।’



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *