Mamata Banerjee: ‘নগরবন’ এখন থেকে ‘শ্রাবণ্য’ – cm mamata banerjee changed the name of durgapur nagarban to sravanya


নীল আকাশে সাদা মেঘের ভেলা ভাসলে মধু খেতেও ভুলে যায় ভ্রমর। শরতের উৎসবের মেজাজে মন তো ঘরেই থাকতে চায় না। এমনই উৎসবের পটে মুখ্যমন্ত্রীর ইচ্ছায় নগরবন পাল্টে হলো শ্রাবণ্য।দুর্গাপুর সার্কিট হাউসের সামনেই ক্ষুদিরাম সরণির ডবল লেনের রাস্তার ধারে ২৫ হেক্টর জমিতে গড়ে উঠেছিল নগরবন। শাল, শিরীষ, কাজুর বনে রয়েছে প্রাকৃতিক জলাশয়ও। সার্কিট হাউসের দোতলার রুম ও ব্যালকনি থেকে যতদূর চোখ যায় শুধু সবুজ আর সবুজ।

বন্যা পরিস্থিতির পর জেলা পরিদর্শনে গত সোমবার দুর্গাপুর সার্কিট হাউসে এসেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখানে বারান্দা থেকে সবুজের সমারোহ দেখে মুগ্ধ হয়ে যান তিনি। এমন পরিবেশই তো বাঁশি বাজিয়ে সকল বেলা কাটানোর সময়। মোহিত হয়ে মুখ্যমন্ত্রী নগরবনের নাম পাল্টে শ্রাবণ্য করার সিদ্ধান্ত নেন। মঙ্গলবার সার্কিট হাউস থেকে বোলপুরে রওনা দেওয়ার আগে প্রশাসনের আধিকারিকদের ডেকে তিনি তাঁর সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে দেন।

শ্রাবণ্য নামকরণ কেন? ব্যাখ্যা করে মহকুমাশাসক সৌরভ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘সার্কিট হাউস থেকে নগরবন দেখেছেন মুখ্যমন্ত্রী। সেই সময়ে নীল আকাশে সাদা মেঘ জমেছিল। সামনে বিস্তীর্ণ নগরবনের সুবজ গাছ। শ্রাবণ মাসের বারিধারায় নগরবনের সৌন্দর্য কতটা অপরূপ হবে সেটা কল্পনা করে মুখ্যমন্ত্রী এর নামকরণ করেছেন শ্রাবণ্য। এখন সৌন্দর্যায়নের কাজ চলছে। মুখ্যমন্ত্রীর সিদ্ধান্ত অনুযায়ী নগরবনের প্রবেশপথে শ্রাবণ্য নামফলক বসানো হবে।’ মহকুমাশাসক জানিয়েছেন, সৌন্দর্যায়নের কাজ আরও কিছুটা এগোলে তার পরে জনসাধারণের জন্য খুলে দেওয়া হবে শ্রাবণ্য।

ক্ষুদিরাম সরণি ধরে সিটি সেন্টার থেকে ডিভিসি মোড়ে যাওয়ার পথে ডান দিকে নগরবন। জঙ্গলের মাঝে একটি জলাশয়ও রয়েছে। এক সময়ে জঙ্গলের মাঝে শুয়োরের খোঁয়াড় ছিল। বাসিন্দারা তখন আপত্তি তুলে জানিয়েছিলেন, শহরে প্রবেশ ও প্রস্থানের মুখে শুয়োরের খোঁয়াড় বড়ই দৃষ্টিকটু। পরবর্তী সময়ে জঙ্গলের উল্টো দিকে সার্কিট হাউস তৈরির সিদ্ধান্ত হয়। তখনই জঙ্গল থেকে তুলে দেওয়া হয় শুয়োরের খোঁয়াড়।

সিদ্ধান্ত হয়, ওই জঙ্গল সাজিয়ে তৈরি করা হবে নগরবন। সেই মতো কাজ শুরু করে বন দপ্তর। ইতিমধ্যে জঙ্গলের ভিতরে হাঁটার জন্য রাস্তা তৈরি করা হয়েছে। বসার জন্য রাখা হয়েছে চেয়ার। জঙ্গলের পথে আলো দিয়ে সাজানো হয়েছে। সরু লোহার রড ও ফাইবার দিয়ে তৈরি করা হচ্ছে বিভিন্ন বন্যপ্রাণীর মডেল।

দুর্গাপুরের ডিএফও অনুপম খাঁ জানাচ্ছেন, বন দপ্তরের পার্কস অ্যান্ড গার্ডেন্স শাখা নগরবনের সৌন্দর্যায়নের কাজ করছে। তিনি বলেন, ‘শহরের মধ্যে বনের কনসেপ্ট বজায় রেখে সাজানো হচ্ছে। বেশ কিছু কাজ হয়ে গিয়েছে। আরও কাজ করা হবে। বিভিন্ন নালা থেকে প্রবাহিত জলধারায় একটি জলাশয় ছিল। তার সঙ্গে আরও একটি জলাশয় তৈরি করা হয়েছে।’

নগরবনের ভিতরে আলো লাগিয়েছে দুর্গাপুর পুরসভা। নগরবনের নতুন নামকরণে খুশি পুরসভার মুখ্য প্রশাসক অনিন্দিতা মুখোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ‘দুর্গাপুরে নগরবনের খুব সুন্দর নামকরণ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। ভিতরটা আমরা আলো দিয়ে সাজিয়ে দিয়েছি। বাইরেটাও আলো দিয়ে সাজিয়ে দেওয়া হবে। প্রশাসন থেকে যেমন বলবে সেই মতো কাজ করে দেবে পুরসভা।’ তখন যাবে না কেউ ঘরে, তখন শ্রাবণ্যে শুধুই লুকোচুরি খেলা।



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *