বৃহস্পতিবার শ্যামবাজার ট্রাম ডিপোর জমায়েত অবশ্য অন্য কথাই বলল। ট্রাম বাঁচানোর এই জমায়েতে প্রবীণদের পাশাপাশি নজরে এল বহু তরুণ মুখ। এঁদের মধ্যেই ছিলেন জমায়েতের দুই উদ্যোক্তা কৌশিক দাস ও আরণ্যক চট্টোপাধ্যায়। কৌশিক ও আরণ্যক দু’জনেই কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র।
এ দিনের জমায়েত প্রসঙ্গে তাঁরা ‘এই সময়’-কে বলেন, ‘ট্রাম বন্ধ করে দেওয়াটা কোনও সমাধান নয়। আমাদের দেখতে হবে ট্রামকে কী করে আরও মডিফাই করে ব্যবহার করা যায়। আমরা ধর্মতলা-খিদিরপুর রুটে ট্রামের ওই নাম কা ওয়াস্তে হেরিটেজ রুট আমরা চাই না। আমাদের দাবি, বর্তমানে যে রুটগুলোতে ট্রাম চলছে, সেই রুটে ট্রাম রাখতেই হবে। একই সঙ্গে দেখতে হবে অন্য আর কোন রুটে ট্রাম চালানো যায়।’
ট্রামযাত্রীদের সংগঠন, ক্যালকাটা ট্রাম ইউজ়ার্স অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে দেবাশিস ভট্টাচার্য বলেন, ‘শহরের রাস্তায় ট্রাম চলবে কি না, সেই বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে মহামান্য হাইকোর্ট। পরিবহণমন্ত্রী সরকারি মনোভাব স্পষ্ট করে দিয়েছেন। তবে বিষয়টা এখনও বিচারাধীন। ট্রাম শুধু শহরের ঐতিহ্য বা ইতিহাসই নয়— নস্ট্যালজিয়াও। আমাদের ভরসা হাইকোর্ট কলকাতার এই ভালোবাসার জায়গাটা বহাল রাখবেন।’ ট্রাম টিকে থাকুক, এই নিয়ে অতীতে বহুবার নিজেদের মত প্রকাশ করেছেন বিশিষ্ট মানুষজন। এঁদের মধ্যে রয়েছেন সাহিত্যিক শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়।
তিনি বলেন, ‘দাবি করা হয়, ট্রামের জন্য নাকি ট্র্যাফিকের সমস্যা হচ্ছে। তেমন হলে ট্রামকে নিউ টাউনের মতো অপেক্ষাকৃত ফাঁকা কোনও জায়গায় চালানো যেতে পারে।’ অন্য দিকে পেশায় চিকিৎসক এবং নেশায় কলকাতার ইতিহাস নিয়ে গবেষণাকারী দেবাশিস বসুর মত, ‘পৃথিবীর বিভিন্ন শহরে ট্রাম বন্ধ করে দেওয়ার পরেও ফেরত আনা হয়েছে। কিছু দিন পরেই ওই তালিকায় কলকাতার নাম যোগ হবে। পরিকাঠামো থাকার পরেও আজ ট্রাম বাতিলের উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। কয়েক বছর পর বহু অর্থ ব্যয়ে আবার ট্রাম ফিরবে।’