Balurghat Incident: নাবালিকার স্বীকারোক্তিতে অবাক বিচারক, আইনজীবী – balurghat judge and lawyer surprised by a minor confession


বিনয় আগরওয়াল, বালুরঘাট: প্রেমিকের সঙ্গে ফোনে কথা বলার জন্য মেয়েকে বকাঝকা করেছিলেন বাবা-মা। ‘বদলা’ নিতে বাবা-মায়ের বিরুদ্ধে থানায় যৌন নিগ্রহের অভিযোগ করেছিল ১৭ বছরের নাবালিকা। গত ১৭ জুন গঙ্গারামপুর থানায় নাবালিকার যৌন নিগ্রহের লিখিত অভিযোগ পেয়ে মাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। বাবা বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে যান আত্মীয়ের বাড়িতে। নাবালিকাকে সরকারি হোমে পাঠানো হয়।ওই ঘটনার প্রায় ৮৮ দিন পরে গঙ্গারামপুর মহকুমা আদালতে নাবালিকাকে হাজির করা হলে তার বক্তব্য শুনে হতবাক হয়ে যান বিচারক থেকে শুরু করে আইনজীবীরা। মেয়েটি কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে বলে, প্রেমে বাধা হয়ে দাঁড়ানোয় সে বাবা-মায়ের নামে যৌন নির্যাতনের অভিযোগ করেছিল।

আসল ঘটনা শোনার পরে মায়ের জামিন মঞ্জুর করেন বিচারক। কিশোরীর স্বীকারোক্তি শুনে আদালতে হাজির থাকা আইনজীবীরা বলতে শুরু করেন, ‘প্রেমে বাধা দিলে কোনও মেয়ে তার মা-বাবার বিরুদ্ধে এ রকম মিথ্যা মামলা করতে পারে? মনে হচ্ছে যৌন নিগ্রহের অভিযোগ তার কাছে ছেলেখেলা।’

আদালত ও পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই নাবালিকার সঙ্গে গ্রামের এক তরুণের সম্পর্ক গড়ে ওঠে মাস ছ’য়েক আগে। প্রেমিকের সঙ্গে বেশিরভাগ সময়ে ফোনে ব্যস্ত থাকত সে। পড়াশোনায় ক্ষতি হওয়ায় মেয়ের এই সম্পর্ক মেনে নিতে পারেননি বাবা-মা। প্রেমিকের সঙ্গে মোবাইলে কথা বলা বন্ধ করতে ১৫ জুন মেয়ের কাছ থেকে ফোন কেড়ে নেন তাঁরা। বকাঝকাও করেন। কেন মোবাইল কেড়ে নিয়েছো? কেন কথা বলতে দেবে না?

চিৎকার করে বাড়ি মাথায় করে সে। এর দু’দিন পরে গঙ্গারামপুর থানায় বাবা-মায়ের নামে যৌন নিগ্রহের অভিযোগ দায়ের করে নাবালিকা। পুলিশ ৩০ জুন মামলা রুজু করার পরে নাবালিকার মাকে গ্রেপ্তার করে। বাবা বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে যান।

বারুইপুরে নাবালিকা ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগে গ্রেপ্তার রেলকর্মী
গত বুধবার নাবালিকার মাকে গঙ্গারামপুর মহকুমা আদালতে শুনানির জন্য হাজির করা হয়। হোম থেকে নিয়ে আসা হয় তাঁর নাবালিকা মেয়েকেও। ৮৮ দিন পর আদালতে মাকে সামনা সামনি দেখার পরে কান্নায় ভেঙে পড়ে নাবালিকা। এরপরে আদালতের সামনে আর মিথ্যা বলতে পারেনি সে। তার স্বীকারোক্তি, ‘আমি বাবা-মায়ের নামে মিথ্যা অভিযোগ করেছিলাম।’

নাবালিকার কথা শুনে বিচারক পাল্টা বলেন, ‘কেন অভিযোগ করেছিলে?’ তখন নাবালিকা বলে, ‘একটি ছেলের সঙ্গে আমার প্রেম ছিল। প্রেমিকের সঙ্গে মোবাইলে কথা হতো। সেই মোবাইল বাবা-মা কেড়ে নিয়েছিল। সেই রাগে প্রেমিকের সঙ্গে কথা বলা বন্ধ হওয়ায় বাবা-মায়ের নামে যৌন নির্যাতনের অভিযোগ দায়ের করেছিলাম। ভেবেছিলাম, মা-বাবাকে পুলিশ ধরে নিয়ে গেলে সহজেই প্রেমিকের কাছে যেতে পারব।’

তার কথা শুনে হতবাক হয়ে যান উপস্থিত সকলে। গঙ্গারামপুর মহকুমা আদালতের আইনজীবী জুলফিকার আলি বলেন, ‘আসল ঘটনা শোনার পরে বিচারক থেকে শুরু করে আমরা সকলে সত্যিই অবাক হই। প্রেমিকের সঙ্গে কথা বলতে না দেওয়ার জন্য কোনও মেয়ে যে এ ভাবে বাবা-মায়ের বিরুদ্ধে যৌন নির্যাতনের মিথ্যা অভিযোগ দায়ের করতে পারে, তা ভাবতে পারিনি।’ সব শুনে নাবালিকার মাকে জামিন দিয়েছে আদালত।



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *