এই সময়: এক এক পা এগনোর সময়ে নিজের প্রতিবিম্বকে ক্রমশ চুরমার হতে দেখবেন দর্শনার্থীরা। মণ্ডপের গর্ভগৃহ, অর্থাৎ যেখানে প্রতিমা রয়েছেন, সেই জায়গা যেন একেবারে ক্যালাইডোস্কোপ। দর্শক যে দিকে তাকাবেন, সে দিকেই নিজেকে দেখতে পাবেন— তবে সেই প্রতিবিম্ব হবে এক-এক রকমের। ৮০তম বছরে চালতাবাগান সর্বজনীন এমন ভাবেই নিজেদের মণ্ডপ সাজানোর পরিকল্পনা করেছে।থিমের নাম ‘অন্তর্লোক’। অন্যর কাজের সমালোচনা নয়, আগে নিজেকে চিনুন— মণ্ডপের মাধ্যমে এমনটাই বার্তা দিতে চাইছেন এখানকার কমিটির উদ্যোক্তারা। চালতাবাগান সর্বজনীনের সাধারণ সম্পাদক মৌসম মুখোপাধ্যায় তাঁদের এ বছরের থিম সম্পর্কে বলছেন, ‘আমাদের চার পাশের পরিস্থিতি দেখার পর সকলেরই মনে হবে পারিপার্শ্বিক বদলানোর কথা। সবাই চাইবেন সমাজ বদলের কথা। কিন্তু নিজেকে না বদলালে আমরা সমাজ বদলাব কী করে? তাই মণ্ডপে আসা দর্শকদের সামনে আমরা আয়না ধরে বোঝাতে চাইছি আগে আত্মসমীক্ষা, পরে অন্যের সমালোচনা।’
মণ্ডপের মাধ্যমে এমন একটা কঠিন বিষয়কে তুলে ধরার কাজটা কত কঠিন হতে পারে? এ বার চালতাবাগানের মণ্ডপ নির্মাণের দায়িত্বে দুই শিল্পী সৌমিক-পিয়ালি। শিল্পী পিয়ালি সাধুখাঁ বলছেন, ‘একটা আয়নার সামনে অন্য একটা আয়না নিয়ে দাঁড়ালে অসংখ্য প্রতিবিম্ব তৈরি হয়। আবার খুব অল্প কোনও জায়গায় ছোট ছোট অনেক আয়না দিয়ে একটা প্রতিবিম্বকে অজস্র প্রতিবিম্বে ভেঙে ফেলা যায়। আমরা আয়না নিয়ে এমন নানা রকমের পরীক্ষা করেছি মণ্ডপে। কোথাও তৈরি হবে টানেল ভিশন, কোথাও আবার ক্যালাইডোস্কোপের মতো প্যাটার্ন দেখানো হবে।’
মণ্ডপের মাধ্যমে এমন একটা কঠিন বিষয়কে তুলে ধরার কাজটা কত কঠিন হতে পারে? এ বার চালতাবাগানের মণ্ডপ নির্মাণের দায়িত্বে দুই শিল্পী সৌমিক-পিয়ালি। শিল্পী পিয়ালি সাধুখাঁ বলছেন, ‘একটা আয়নার সামনে অন্য একটা আয়না নিয়ে দাঁড়ালে অসংখ্য প্রতিবিম্ব তৈরি হয়। আবার খুব অল্প কোনও জায়গায় ছোট ছোট অনেক আয়না দিয়ে একটা প্রতিবিম্বকে অজস্র প্রতিবিম্বে ভেঙে ফেলা যায়। আমরা আয়না নিয়ে এমন নানা রকমের পরীক্ষা করেছি মণ্ডপে। কোথাও তৈরি হবে টানেল ভিশন, কোথাও আবার ক্যালাইডোস্কোপের মতো প্যাটার্ন দেখানো হবে।’
মণ্ডপ-নির্মাণের কাজ একই সঙ্গে সৃজনশীল এবং অত্যন্ত পরিশ্রমসাধ্য। পরিশ্রমের ভাগ এতটা বেশি বলেই হয়তো বহু দিন ধরে মণ্ডপ-নির্মাণকে ‘মেনস জব’ বা পুরুষদের কাজ বলে মনে করা হতো। এই ধারণা কি মহিলা শিল্পীকে বাড়তি চ্যালেঞ্জের সামনে দাঁড় করিয়েছে? জবাবে পিয়ালি বলছেন, ‘আমি প্রতিমা তৈরি অনেক আগে থেকেই করতাম। মণ্ডপ তৈরির কাজ শুরু করেছি প্রায় দশ বছর। সুতরাং এখন ব্যাপারটা গা-সওয়া হয়ে গিয়েছে। তবে মহিলা মণ্ডপশিল্পী শুনে আজও অনেকে কৌতূহলী চোখে তাকান।’