জানা গিয়েছে, বছর কয়েক আগে শালবনির বেউচা কাছারি রোড এলাকায় সিমেন্ট কারখানা গড়ে ওঠার পরে এলাকার মহিলাদের স্বনির্ভর করতে নানা রকমের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করে তারা। ফিনাইল, ধূপকাঠি, মোমবাতি, পশুপালন-এর সঙ্গে তাঁদের মাদুর তৈরির প্রশিক্ষণও দেওয়া হয়।
শালবনির মাদুর কি সবং-এর ব্যবসার ক্ষতি করবে? সবংয়ের মাদুরশিল্পী অশোক জানা বলেন, ‘শালবনিতে মাদুর তৈরি হচ্ছে খুবই ভালো কথা। তাতে আমাদের বিক্রি সামান্য হয়তো কমবে, কিন্তু এটা তো আর আটকানো যাবে না।’
সবংয়ের আরেক খ্যাতনামা শিল্পী নীশিকান্ত দাস বলেন, ‘মাদুর এবং মাদুরজাত সামগ্রী যত বেশি তৈরি হবে, বিক্রিও তত বাড়বে। প্লাস্টিকের মাদুর বাজার দখলের চেষ্টা করলেও মাদুর শিল্পের প্রচার অনেক বেড়েছে। শালবনিতেও মাদুর তৈরি হচ্ছে জেনে ভালো লাগছে। শালবনির মহিলা শিল্পীদের অভিনন্দন।’
মাস তিনেক প্রশিক্ষণ নেওয়ার পরে বছর ছত্রিশের প্রিয়া কদমা এখন রীতিমতো শিল্পী। তিনি বলেন, ‘সবই সম্ভব হয়েছে সিমেন্ট কোম্পানির জন্য। তাঁরা প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা না করলে আমরা কিছুতেই শিখতে পারতাম না। রোজগার কিছু হচ্ছে। ভালোও লাগছে। এমন কাজ আমরা শিখতে পারব, কখনও ভাবিনি। তবে মাদুর ও মাদুরকাঠি দিয়ে তৈরি অন্য সামগ্রীর বিক্রির ব্যবস্থা করলে আমাদের রোজগার আরও বাড়বে।’
মাইনো সোরেন বলেন, ‘মাদুর তৈরি আগে কোনওদিন দেখিনি। কাজ করে কিছু রোজগার করে স্বামীকে সাহায্য করার চেষ্টা করছি।’ ওই সিমেন্ট কোম্পানির তরফে কপিলমুনি পাণ্ডে বলেন, ‘এই এলাকায় শিল্প গড়ার সঙ্গে সঙ্গে এলাকার মানুষের জীবন-জীবিকার উন্নতি, তাঁদের স্বনির্ভর করার জন্য নানা ধরণের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছিল। তাঁদের মধ্যে এলাকার ১২৬ জন মহিলা মাদুর তৈরির প্রশিক্ষণ নিয়েছেন। প্রশিক্ষণ দিয়েছেন সবংয়ের খ্যাতনামা শিল্পীরাই। মাদুরকাঠি বা কাঁচামাল আনা হচ্ছে কিন্তু সবং থেকেই।’ তিনি বলেন, ‘জঙ্গলমহলের মহিলারা অনেক ভালো ভালো জিনিস তৈরি করছেন। এ বার বাজার তৈরিতে জোর দিতে হবে আমাদের।’