Durga Puja: বোধনের আগেই বিষাদের সুর, ছাড়তে হবে ভিটে – durga puja to be celebrated for the last time in jayanti


পিনাকী চক্রবর্তী, আলিপুরদুয়ার
৪২-এর ‘ভারত ছাড়ো’ আন্দোলনের সময়ে শুরু হয়েছিল দুর্গাপুজো। তারপর আর ছেদ পড়েনি পাহাড়-জঙ্গলে ঘেরা জয়ন্তীতে। কিন্তু বন দপ্তরের সিদ্ধান্তে এ বারই পুজোয় ইতি টানতে হবে। আলিপুরদুয়ার শহর থেকে রাজাভাতখাওয়ার দূরত্ব ১৮ কিলোমিটার। বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পের অধীনে থাকা সেই রাজাভাতখাওয়া গেট থেকে জঙ্গল পথে জয়ন্তীর দূরত্ব আরও ১২ কিলোমিটার। ফি বছর বনের গভীরে থাকা বনবস্তির বাসিন্দারা মেতে উঠতেন আগমনির আনন্দে।এ বার আনন্দের সঙ্গে মিশে রয়েছে বিষাদের সুর। কারণ ওই সুন্দর বনবস্তির আর কোনও অস্তিত্বই থাকবে না। বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পে ভিন রাজ্য থেকে বাঘ আনার পরিকল্পনায় বাাঘবনের কোর এলাকায় থাকা বনবস্তি অন্যত্র সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার শর্ত দিয়েছে ন্যাশনাল টাইগার কনজ়ারভেশন অথরিটির। সেই নির্দেশ মেনে ইতিমধ্যেই ভুটিয়া বস্তি ও গাঙ্গুটিয়ার বাসিন্দাদের পুনর্বাসন দিয়েছে রাজ্য সরকার। জয়ন্তীর ক্ষেত্রেও একই নিয়ম প্রযোজ্য হবে।

ইতিমধ্যে সমীক্ষার কাজ শেষ করেছে আলিপুরদুয়ার জেলা প্রশাসন ও বনদপ্তর। তাতে দেখা যাচ্ছে জয়ন্তীর ৪৪৯ জন উপভোক্তার মধ্যে ৪২৭ জন পুনর্বাসন প্যাকেজের জন্য আবেদন করেছেন। বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পের ক্ষেত্র অধিকর্তা অপূর্ব সেন বলেন, ‘ইতিমধ্যেই আমরা সমস্ত নথি রাজ্য সরকারের কাছে পাঠিয়ে দিয়েছি। অনুমোদন মিললেই পুনর্বাসন প্রক্রিয়া শুরু হয়ে যাবে। এখন শুধু সময়ের অপেক্ষা।’

Durga Puja: আরজি করের পর বন্যা, স্পনসররা মুখ ফেরানোয় পুজোর বাজেটে টান
পুজো কমিটির সম্পাদক রাজীব লামা বলেন, ‘সত্যিই মনটা খুবই খারাপ হয়ে আছে। কিন্তু আবেগ আর বাস্তবকে গুলিয়ে ফেললে চলবে না। বনবস্তির জীবন অনেক কঠিন। তাই আমরা অন্যত্র যেতে রাজি হয়েছি। তবে প্রশাসনের কাছে আমাদের একটাই অনুরোধ, যেখানে আমাদের পুনর্বাসন দেওয়া হবে, সেই জনপদটির নামকরণ যেন ‘জয়ন্তী’ রাখা হয়।’

জয়ন্তীর পুজোর প্রতিবছর সামিল হন বক্সা, লেপচাখা, তাসিগাঁও, আদমা-সহ অন্য বনবস্তির বাসিন্দারা। হাইস্কুল মাঠে থাকা স্থায়ী মন্দিরে ঘটা করে পুজো হতো। চার দিন সবাই মিলেমিশে মেতে উঠতেন দুর্গোৎসবে। স্থানীয় হাইস্কুলের শিক্ষক অরুণ শর্মা বলেন, ‘যখনই ভাবি জয়ন্তীর মাটিতে এ বার শেষ বারের মতো পুজোর আয়োজন, তখনই মনটা কেঁদে ওঠে। কিন্তু আমাদের সমাজের মূল স্রোতে ফেরাটাও জরুরি। সময়ের দাবিকে মানতেই হবে। তবে যত বিষাদই থাক না কেন, এ বার পুজোর আনন্দে কোনও খামতি থাকবে না।’



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *