পাশাপাশি কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে গুচ্ছ দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছিল কিছু দিন আগে। থ্রেট কালচার চালানোর পাশাপাশি সেই সব দুর্নীতির নেপথ্যে মেডিক্যালের রোগীকল্যাণ সমিতির প্রাক্তন চেয়ারম্যান সুদীপ্ত রায়ের ভূমিকা ছিল বলেও অভিযোগ ওঠে। তার মধ্যে ক্রিটিক্যাল কেয়ার ইউনিট-সহ বিভিন্ন ওয়ার্ডের বেড বিক্রি এবং হাসপাতালের সেন্ট্রাল ল্যাব ও বাইরের বেসরকারি ল্যাবের মধ্যে অশুভ আঁতাতের অভিযোগও ছিল।
এ বার ওই সব অভিযোগের তদন্ত করতে দু’টি পৃথক অনুসন্ধান কমিটি গঠন করলেন মেডিক্যাল কর্তৃপক্ষ। বেড বিক্রির চক্রের অস্তিত্ব ও কর্মপদ্ধতি খতিয়ে দেখবে মেডিসিন বিভাগের প্রধান চিকিৎসক সৌমিত্র ঘোষের নেতৃত্বাধীন ১১ সদস্যের কমিটি। আর ল্যাব দুর্নীতির তদন্ত করবে ফরেন্সিক মেডিসিনের প্রধান চিকিৎসক চন্দন বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বাধীন আরও একটি ১১ সদস্যের কমিটি।
হাসপাতাল সূত্রে খবর, কিছু দিন আগেই সুদীপ্তকে নিয়ে ভিজিল্যান্সে অভিযোগ জানানো হয়েছিল। গত শনিবার সেই অভিযোগ ফরওয়ার্ড হয়ে আসে মেডিক্যালে। তার পরেই সোমবার ওই দু’টি অনুসন্ধান কমিটি গঠিত হয়। অভিযোগ কী ছিল? মেডিক্যাল সূত্রে খবর, ক্রিটিক্যাল কেয়ার ইউনিট-সহ বিভিন্ন ওয়ার্ডে প্রায়ই যখন সাধারণ মানুষ বেড পান না, তখন একটি দালাল চক্রের মাধ্যমে সেই সব বেড বিক্রি হয়।
আবার অভিযোগ উঠেছে, সেন্ট্রাল ল্যাবের জন্য বরাদ্দ কিট পাচার হয়ে যেত মেডিক্যাল সংলগ্ন বিভিন্ন বেসরকারি ল্যাবে। সেই সব অসাধু চক্রের সম্পর্কে ওঠা অভিযোগেরই পৃথক ভাবে তদন্ত করবে ওই দু’টি কমিটি। মেডিক্যালের উপাধ্যক্ষ অঞ্জন অধিকারী বলেন, ‘অভিযোগ যখন উঠেছে, তখন স্বচ্ছতার স্বার্থে তদন্ত করে পুরো বিষয়টা দেখে নেওয়ারই পক্ষপাতী সরকার।’
এ দিকে আরজি কর হাসপাতালের থ্রেট কালচারের সঙ্গে যুক্ত অভিযুক্তদের গত সপ্তাহে দফায় দফায় তলব করে, তাঁদের বয়ান রেকর্ড করার পাশাপাশি অভিযোগকারীদের সাক্ষ্য গ্রহণও করা হয়েছে। অভিযোগ, ক্ষমতাবান একদলের প্রশ্রয়ে উত্তরবঙ্গ থেকে আরজি কর, প্রায় প্রতিটি হাসপাতালে একশ্রেণির চিকিৎসক, পিজিটি, এমনকী পড়ুয়ারাও হুমকির বাতাবরণ তৈরি করে রেখেছিলেন। বাকিরা কার্যত তাদের ভয়ে কাঁটা হয়ে থাকতেন।
আরজি করে তরুণী চিকিৎসকের ধর্ষণ ও খুনের পরে পাশা অনেকটাই পাল্টেছে। ভয়ে সিঁটিয়ে থাকা চিকিৎসক ও পড়ুয়ারা মুখ খুলতে শুরু করেছেন। আন্দোলনে তাঁদের অনেককেই প্রথম সারিতে দেখা যাচ্ছে।