আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের ঘটনার পর আন্দোলনের আবহে পুজোর বাজার কতখানি জমবে, তা নিয়ে নিউ মার্কেট, গড়িয়াহাট বা হাতিবাগানের ব্যবসায়ীরা তো চিন্তিত ছিলেনই। দুশ্চিন্তায় পড়েন শহরের পরিবহণ ব্যবসায়ীদের একাংশও। এঁরা গাড়ি ভাড়া দেওয়ার ব্যবসা করেন।
একদিকে ওলা বা উবরের মতো অনলাইন সার্ভিস প্রোভাইডারদের মাধ্যমে গাড়ি ভাড়া দেন, আবার অন্য দিকে নিজেরাও ব্যবসা চালান। পুজোর চারদিন এঁদের জমিয়ে ব্যবসা চালানোর জন্য আদর্শ সময়। এ বাদে শহরে শীতের আমেজ পড়ার পর কলকাতা থেকে ১০০-১৫০ কিলোমিটার মধ্যে নানা ধরনের ফ্যামিলি ট্রিপ তো আছেই।
কিন্তু পুজো যত এগিয়ে আসছে, ততই দেখা যাচ্ছে, গাড়ির চাহিদা বাড়ছে ভালোই। যে কারণে অনিরুদ্ধদের মতো অনেকেই আচমকা পরিকল্পনা করে কোথাও যেতে গেলে ব্যবসায়ীদের পক্ষে গাড়ির বন্দোবস্ত করা কঠিন হয়ে দাঁড়াচ্ছে।
শহরের অ্যাপ-ক্যাব চালকদের সংগঠন ‘অনলাইন ক্যাব অপারেটর্স গিল্ড’-এর সাধারণ সম্পাদক ইন্দ্রনীল বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথায়, ‘যাঁরা আগে থেকে বেড়ানোর পরিকল্পনা করে রেখেছেন, তাঁরা পরিচিত গাড়ি-ব্যবসায়ীদের কাছে বুকিংও সেরে ফেলেছেন। কিন্তু যাঁরা হঠাৎ করে বেরোনোর কথা ভাবছেন, তাঁদের অ্যাপ ক্যাব বুক করা ছাড়া গতি নেই।’ তিনি জানান, পুজোর দিনগুলোয় কয়েক ঘণ্টার জন্য অ্যাপ-ক্যাব ভাড়া নিতে গেলেও ছ’হাজার টাকার কাছাকাছি পড়ে যাবে। অন্য সময়ে কয়েক ঘণ্টার রেন্টাল নিলে তিন থেকে সাড়ে তিন হাজার টাকায় হয়ে যায়।
সৈকত পাল নামে এক গাড়ি ব্যবসায়ীর বক্তব্য, ‘ষষ্ঠী থেকে নবমী — গাড়ি ভাড়া দেওয়া হচ্ছে দুটো স্লটে। সকাল ১০টা থেকে সন্ধে ৬টা আবার রাত ১০টা থেকে ভোর পর্যন্ত। এই সময়ে এক একটা স্লটে ভাড়া নিতে হলে ছোট গাড়ির ক্ষেত্রে চার হাজার এবং বড় গাড়ির ক্ষেত্রে পাঁচ হাজার টাকা পড়বে। অন্য সময়ে ওই স্লটে গাড়ি পাওয়া যায় আড়াই-তিন হাজারে।’
গাড়ির ব্যবসায়ীরা জানাচ্ছেন, সকাল ১০টা থেকে স্লট বুকিংয়ের পর্ব শুরু হচ্ছে বলে তার আগের স্লটে এ বার গত বছরের তুলনায় রেট কিছুটা বেড়েছে। যার অন্যতম কারণ জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধি। আরজি করের আবহেও গাড়ি বুকিংয়ের প্রবণতা মোটের উপর একই আছে। তবে এ বার বুকিং শুরু হয়েছে অন্য বছরের তুলনায় কিছুটা দেরিতে।