শান্ত নেই তরাই-ডুয়ার্সও। সেখানে বাগান-শ্রমিকদের ১৬ শতাংশ হারে বোনাস দেওয়ার সিদ্ধান্ত হলেও বহু বাগানেই মালিকপক্ষ ৯ শতাংশের বেশি বোনাস দিতে রাজি হচ্ছেন না বলে অভিযোগ। অনেক বাগান-মালিক আবার দু’কিস্তিতে বোনাস দেওয়ার কথা বলছেন। তাঁদের যুক্তি, খরা পরিস্থিতিতে বহু চা-বাগানে উৎপাদন মার খেয়েছে। মালিকদের মনোভাব দেখে ডুয়ার্সেও তাই প্রতিদিন কোনও না কোনও চা-বাগানে বিক্ষোভ চলছিল। মঙ্গলবার বানারহাটের বিভিন্ন চা-বাগানের শ্রমিকরা দিনভর জাতীয় সড়ক অবরোধ করে আন্দোলনকে অন্য মাত্রায় নিয়ে গিয়েছেন।
সকালে কেন্দ্রীয় সরকারের ভারীশিল্প মন্ত্রকের অধীন অ্যান্ড্রু ইউল কোম্পানির কারবালা, বানারহাট, নিউ ডুয়ার্স ও চুনাভাটি—এই চারটি চা বাগানের শ্রমিকরা প্রথমে গেট মিটিং করেন। তার পর সামিল হন সড়ক অবরোধ কর্মসূচিতে। জাতীয় সড়ক, ভারত-ভুটান সড়কের চারটি স্থানে অবরোধ হয়। বানারহাট ব্লক কার্যত স্তব্ধ হয়ে যায়। ধূপগুড়ির এসডিপিও গিলসন লেপচা, বানারহাটের বিডিও নিরঞ্জন বর্মন, বানারহাট থানার আইসি শান্তনু সরকার শ্রমিক ইউনিয়নের নেতৃত্বের সঙ্গে বোনাস নিয়ে আলোচনায় বসার আশ্বাস দিলেও শ্রমিকরা অবরোধে অনড় থাকেন।
বিকেল নাগাদ সেন্ট্রাল লেবার কমিশনার রূপা ভারতি মোবাইলে ইউনিয়ন নেতৃত্বের সঙ্গে কথা বলেন। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গেও কথা বলার আশ্বাস দিলে আন্দোলনকারীরা অবরোধ তোলার বিষয়ে চিন্তাভাবনা শুরু করেন। যদিও সন্ধ্যাতেও অবরোধ চলেছে।
মালিকপক্ষের সংগঠন ডিবিআইটিএ-র সেক্রেটারি শুভাশিস মুখোপাধ্যায়ের বক্তব্য, অ্যান্ড্রু ইউল কোম্পানির অধীন চারটি চা-বাগানে আর্থিক সমস্যা থাকায় ১৬ শতাংস বোনাস দু’টি কিস্তিতে দেওয়ার কথা জানানো হয়েছিল। শ্রমিকরা তা মানতে চাইছেন না। এক কিস্তিতে বোনাস দেওয়ার দাবি নিয়ে আলোচনা চলছে। নিউ ডুয়ার্স চা-বাগানের শ্রমিক মিনতি গোপ বলেন, ‘আমরা ১৬ শতাংশ বোনাস এক কিস্তিতেই চাই।’
চুনাভাটি চা-বাগানের শ্রমিক ললিতা ওঁরাও বলেন, ‘পুজোর আর কটা দিনই বা বাকি। আমাদের এখনও বোনাস হয়নি। এর পর দু’কিস্তিতে বোনাস নিয়ে কী করব? সারা বছর কাজ করে যদি বাচ্চাদের নতুন জামা-কাপড় দিতে না পারি তা হলে কী লাভ বোনাসে!’