অথচ, কয়েক দিন আগেই পরীক্ষায় অন্যায্য ভাবে নম্বর বাড়ানোর যে অভিযোগ রাজ্য স্বাস্থ্যবিজ্ঞান বিশ্ববিদ্যালয়ে জমা পড়েছে, সেটা করেছিলেন রামপুরহাট মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ করবী বড়াল এবং ইন্দ্রজিতই! সেই অভিযোগের ভিত্তিতেই এমবিবিএস পরীক্ষায় ওঠা দুর্নীতির অভিযোগের তদন্তে ১০ সদস্যের তথ্যানুসন্ধান কমিটি গঠন করেছে রাজ্য স্বাস্থ্যবিজ্ঞান বিশ্ববিদ্যালয়। সেই কমিটির মাথায় কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ ইন্দ্রনীল বিশ্বাস। উল্লেখ্য, দুর্নীতিতে ‘মদত’ দিতেন বলে করবীর বিরুদ্ধেও বার বার অভিযোগ উঠেছে।
ইন্দ্রজিতের বিরুদ্ধে অনেক দিন ধরেই সরব ছিলেন উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালের শিক্ষক-চিকিৎসকরা। স্বাস্থ্য বিশ্ববিদ্যালয় তাতে সাড়া না-দেওয়ায় এ বার বেশ কয়েকজন বিভাগীয় প্রধান-সহ ফ্যাকাল্টিরা চিঠি পাঠালেন ভারপ্রাপ্ত স্বাস্থ্য-শিক্ষা অধিকর্তাকে। অভিযোগকারীদের অন্যতম অর্থোপেডিক বিভাগের প্রধান পার্থসারথি সরকারের কথায়, ‘কিছু দিনের মধ্যেই এমবিবিএস স্তরের পরীক্ষা হবে। তার আগেই যদি দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না-নেওয়া হয়, তা হলে এ বারও পরীক্ষার নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন উঠবেই।’
গত মাসের গোড়ায় উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালের ছাত্রছাত্রীরা পরীক্ষা-দুর্নীতি সংক্রান্ত অভিযোগে ইন্দ্রজিতকে ঘেরাও করেন। অধ্যক্ষ তখন একটি তদন্ত কমিটিও গঠন করে দেন। কিন্তু খোদ অধ্যক্ষের বিরুদ্ধেই যেখানে অভিযোগ, সেখানে অধ্যক্ষের অধীনস্থ কমিটি কী করে তদন্ত করবে, তা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। শেষ পর্যন্ত অধ্যক্ষ ছাত্রছাত্রীদের অভিযোগপত্রটি স্বাস্থ্য বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঠান। এরই মধ্যে অধ্যক্ষের গঠিত তদন্ত কমিটির রিপোর্টের ভিত্তিতে কলেজের ডিন ও সহকারী ডিন পদত্যাগ করতে বাধ্য হন। বিতর্কিত চিকিৎসক অভীক দে-র বিরুদ্ধে মেডিক্যাল কলেজে ঢোকায় নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়।
সেই সময়ে সৌরভ ভার্মা নামে এক স্নাতকোত্তর পড়ুয়া স্বীকার করেন, তিনি ও কয়েকজন পড়ুয়া নম্বর বাড়ানোর ঘটনায় জড়িত। এ নিয়ে তাঁকে নাকি নির্দেশ দিয়েছিলেন খোদ অধ্যক্ষই। সৌরভের ওই স্বীকারোক্তির ভিত্তিতে ছাত্র ও শিক্ষকদের মধ্যে ক্ষোভ চরমে ওঠে। অধ্যক্ষ ইন্দ্রজিতের বিরুদ্ধে তদন্তের দাবি জোরালো হয়। এ বার তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের তদন্ত করবে ১০ সদস্যের কমিটি। মেডিক্যালে পরীক্ষা ব্যবস্থার দুর্বলতা খুঁজে দেখতে এই কমিটি গড়া হয়েছে। যাকে স্বাগত জানিয়েছেন রামপুরহাট মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের অধ্যক্ষ করবী বড়াল।