অভিযোগ, মহালয়ার ভোরে দেবতনুর নেতৃত্বে হামলা চালানো হয়েছে কলেজ সংলগ্ন রেল কলোনির বাসিন্দা অজয় প্রসাদের উপর। তাঁকে এলোপাথাড়ি রড, বাঁশ দিয়ে মারধর করা হয়৷ অজয়ের আরও চার বন্ধুও ওই ঘটনায় আক্রান্ত হন। গত বুধবার মহালয়ার ভোরে পিকনিক শেষে বাজি ফাটানোকে ঘিরে গোলমাল বাধে। জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার রেল কলোনি এলাকায় রাতভর পিকনিকের আয়োজন করেছিলেন অজয় ও তাঁর বন্ধুরা৷ উল্টোদিকে কলেজের সামনে পার্টি অফিসে পিকনিকের আয়োজন করেছিল তৃণমূলের ছাত্র পরিষদ।
নিহত অজয়ের প্রতিবেশী রাজা কুইরি বলেন, পিকনিক করার পর মহালয়ার ভোরে তাঁরা রেল কলোনি থেকে বেরিয়ে পাড়ার মোড়ে বাজি ফাটাচ্ছিলেন। উল্টোদিকে দেবতনু, বাবুনরা পিকনিক করছিলেন পার্টি অফিসের মধ্যে। বাজির একটা টুকরো ছিটকে তাঁদের একজনের পায়ের কাছে গিয়ে পড়ে। সঙ্গে সঙ্গে ভুল স্বীকারও করা হয়। কিন্তু আচমকা দেবতনুর নেতৃত্বে ২০-২৫ টি ছেলে তাঁদের উপর চড়াও হয়। এলোপাথাড়ি মারধর করে। আশঙ্কাজনক অবস্থায় ব্যারাকপুরের বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিল অজয়। কোমায় চলে গিয়েছিলেন তিনি। শুক্রবার রাতে তাঁর অস্ত্রোপচার হলেও শেষরক্ষা হয়নি।
স্থানীয়দের অভিযোগ, বহিরাগতদের নিয়ে আরবিসি কলেজের সামনে রীতিমতো আড্ডাখানা বানিয়ে রেখেছিলেন দেবতনু। অসামাজিক কাজেও মদত দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে। অর্পিতা কর নামে অজয়ের এক প্রতিবেশী বলেন, ‘বাইরে থেকে ছেলে নিয়ে এসে অজয়কে মেরেছে দেবতনু ও তার দলবল। পুলিশ ওকে আমাদের হাতে ছেড়ে দিক। বুঝে নেব ওকে আমরা।’ নিহত অজয়ের স্ত্রী পূজা প্রসাদ বলেন, ‘পরিবারের একমাত্র রোজগেরে ছিল। দুটো ছোট বাচ্চা রয়েছে। সামান্য একটি ঘটনার জন্য ওরা আমার স্বামীকে পিটিয়ে মেরে দিল। অভিযুক্তদের যেন কঠোর শাস্তি হয়।’
পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনায় তিন অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বাকিদের খোঁজ চলছে। বিষয়টি নিয়ে নৈহাটির বাসিন্দা তথা ব্যারাকপুরের সাংসদ পার্থ ভৌমিক বলেন, ‘খুবই দুর্ভাগ্যজনক ঘটনা। যেই-ই অন্যায় করুক কেউ পার পাবে না। পুলিশ ইতিমধ্যে তিন জনকে গ্রেপ্তার করেছে। আমি নিহতের পরিবারের পাশে আছি। ওই পরিবারের দায়িত্ব আমার।’