শ্রীরামপুর রেললাইন লাগোয়া চাতরায় দেশগুরু ভট্টাচার্যের বাড়ি। রামমোহন রায়ের বাবা রামকান্ত রায়ের সঙ্গে বিয়ে হয়েছিল পরিবারের মেয়ে তারিণী দেবীর। তাই ছেলেবেলায় মায়ের সঙ্গে শ্রীরামপুরের মামাবাড়িতে বেশ কয়েকবার এসেছেন রামমোহন। সেই স্মৃতি এখনও রয়েছে ভট্টাচার্য বাড়ির আনাচেকানাচে।

পরিবারের বর্তমান প্রজন্মের অন্যতম শুভপ্রসাদ ভট্টাচার্য বলেন, ‘আমার বাবা প্রয়াত পিনাকীপ্রসাদ ভট্টাচার্য বাড়ির পরম্পরা মেনেই দুর্গা দালানে মায়ের পুজো করতেন নিষ্ঠার সঙ্গে। বাবার অকাল প্রয়াণের পরেও আমরা সেই ধারা বজায় রেখেছি। রথযাত্রার দিন কাঠামো পুজো দিয়ে বাড়ির পুজো শুরু হয়। আমডাঙা থেকে মুসলিম প্রজারা পুজোর সামগ্রী নিয়ে হাজির হতেই পুজোর ষোলো কলা পূর্ণ হয়।’
উত্তর ২৪ পরগনার আমডাঙার আদাহাটায় জমিদারি ছিল শ্রীরামপুরের চাতরার ভট্টাচার্যদের। গ্রামের সিংহভাগ প্রজা ছিল মুসলমান। তাঁরাই পুজোর একটা বড় খরচ বহন করতেন। ঐতিহ্য ও পরম্পরা মেনেই এখনও আলি, আফজ়ল ও রাকিবরা পুজোর ফলমূল নিয়ে হাজির হন পঞ্চমীতে। বর্তমানে যখন দেশে বা পৃথিবীর নানা প্রান্তে জাতি বিদ্বেষের আগুন জ্বলছে, তখন ভট্টাচার্য বাড়ির একচালার দুর্গা প্রতিমা এ ভাবেই বর্ণ-ধর্ম-সম্প্রদায়ের মধ্যে একাত্মতা ও ভালোবাসার সেতুবন্ধন করে আসছে যুগ যুগ ধরে।