Rg Kar Protest,৪৭ জন সিনিয়রের প্রতীকী গণইস্তফা, পুলিশের অনুমতি ছাড়াই মিছিলে জনসমর্থন – rg kar 47 senior doctors give symbolic mass resignation


এই সময়: মিছিলের অনুমতি দেয়নি পুলিশ। জুনিয়র ডাক্তারদের দাবি মেনে তাঁদের আমরণ অনশন তুলতে সরকারও সে ভাবে সাড়া দিয়ে এগিয়ে আসেনি। এ দিকে মোটের উপর স্থিতিশীল থাকলেও একটু একটু করে রক্তচাপ কমছে অনশনকারীদের। একজনের স্বাস্থ্যের সামান্য অবনতিও হয়েছে। এমনই সন্ধিক্ষণে ‘সরকার অসংবেদনশীল’ দাবি করে মঙ্গলবার আরজি করের ৪৭ জন শিক্ষক-চিকিৎসক প্রতীকী গণইস্তফা দেন। কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ এবং পিজি হাসপাতালের শিক্ষক-চিকিৎসক ও সিনিয়র রেসিডেন্টদের একাংশ অবশ্য সরকারকে সংবেদনশীল হতে ২৪ ঘণ্টা সময় দিয়েছে। অন্যথায় তাঁরাও আরজি করের ফ্যাকাল্টিদের পথেই হাঁটবেন বলে জানিয়ে দিয়েছেন।এদিকে, অনশনের চতুর্থ দিনে অনশনকারী সাত জুনিয়র ডাক্তার ক্রমেই দুর্বল হয়ে পড়ছেন। দিনের অধিকাংশ সময় তাঁরা শুয়েই কাটিয়েছেন। শৌচাগার যাচ্ছেন হুইল চেয়ারে চেপে। পালস রেট সকলের ঠিক থাকলেও অনশনকারীদের মধ্যে মেডিক্যাল কলেজের জুনিয়র ডাক্তার স্নিগ্ধা হাজরার রক্তচাপ অনেকটাই কমে গিয়েছে। অনশনের ৭০ ঘণ্টার মাথায় তাঁর রক্তচাপ দাঁড়ায় ৯২/৬৮। এতটা না হলেও আরও তিন জন অনশনকারীর রক্তচাপও স্বাভাবিকের চেয়ে কিছুটা কম হয়ে গিয়েছে। এই অবস্থা দেখে শহরের অত্যন্ত প্রবীণ চিকিৎসকদের একাংশ দল বেঁধে এই টানাপড়েনের মীমাংসা করার আবেদন করেছে রাজ্য সরকারকে। পাশাপাশি, আন্দোলনকারীদেরও আমরণ অনশনের মতো মারাত্মক প্রাণঘাতী পথ প্রত্যাহারের অনুরোধ করেছেন তাঁরা।

মঙ্গলবার সন্ধ্যায় আয়োজিত প্রবীণ ডাক্তারদের সেই কনভেনশনে উপস্থিত ছিলেন সুকুমার মুখোপাধ্যায়, দেবেন্দ্রনাথ গুহ মজুমদার, অশোকানন্দ কোনার, অঞ্জনলাল দত্ত, সুজিত করপুরকায়স্থ, স্বাতী চক্রবর্তী, অজয় সরকার, অরবিন্দ মুখোপাধ্যায়ের মতো বর্ষীয়ান বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা। দেবেন্দ্রনাথবাবুর গলায় ঝরে পড়ে আশঙ্কা, ‘সরকার এত দেরি করলে কোনও বড় ক্ষতি না হয়ে যায়!’ অশোকানন্দবাবু জানান, এমন পরিস্থিতি কখনও চাক্ষুষ করেননি। উদ্ভুত পরিস্থিতিতে তাঁরা খুবই বিচলিত। সুকুমারবাবু আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, ‘এই অনশনে যদি কোনও অঘটন ঘটে যায়, তার দায় কে নেবে! তাই সরকার এগিয়ে আসুক, আন্দোলনকারীদের সঙ্গে আলোচনায় বসুক।’

একই সুর শোনা গিয়েছে অঞ্জনলালবাবুর গলাতেও। তিনি বলেন, ‘কারও যদি কিছু হয়ে যায়! এই অচলাবস্থা কাটুক। জুনিয়র ডাক্তাররা যেন আমরণ অনশনের রাস্তা থেকে সরে আসেন। সরকারও যেন এগিয়ে আসে আলোচনায়।’ সুজিতবাবু বলেন, ‘আমরা অন্যায়ের সঙ্গে মানিয়ে নিতে অভ্যস্ত হয়ে গিয়েছি। জুনিয়র ডাক্তাররা সেটা করেননি। তবে আমরণ অনশন ভয়ঙ্কর সিদ্ধান্ত, মেনে নেওয়া যায় না। সরকার কেন এগিয়ে আসছে না মীমাংসার জন্য! এ ভাবে ওদের মৃত্যুমুখে ঠেলে দেওয়া যায় না।’

বস্তুত এই একই প্রশ্ন তুলে গণইস্তফার রাস্তায় হাঁটছেন সিনিয়র ডাক্তারদের একাংশ। যদিও সরকারি সূত্রের খবর, এই রকম প্রতীকী গণইস্তফার কোনও মূল্য নেই সরকারি স্তরে। পদত্যাগ করতে হলে নিয়ম মেনেই করতে হয়। স্বাস্থ্যভবন ও নবান্নের আবার বক্তব্য, কোনও ইস্তফা সরকার পায়নি এ দিন সন্ধ্যা পর্যন্ত।

এ বার প্রতীকী গণ ইস্তফার হুঁশিয়ারি কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের সিনিয়র চিকিৎসকদের

পূর্ব নির্ধারিত কর্মসূচির অঙ্গ হিসেবেই মঙ্গলবার সব মেডিক্যাল কলেজেই ১২ ঘণ্টার প্রতীকী অনশন হয়। পুলিশের অনুমতি ছাড়াই হয় দু’টি মিছিলও। একটি কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ থেকে ধর্মতলা এবং অন্যটি এসএসকেএম থেকে ধর্মতলা। পুলিশ মহাপঞ্চমীর দিনে সাধারণ মানুষ ও দর্শনার্থীদের অসুবিধার কথা ভেবে মিছিলের অনুমতি দেয়নি। যদিও মধ্য কলকাতার দু’টি বড় পুজো কলেজ স্কোয়্যার এবং সন্তোষ মিত্র স্কোয়্যারের আশপাশে যাতে ব্যাঘাত না ঘটে, তাই কলেজ স্কোয়্যারের বদলে মেডিক্যাল থেকে চিত্তরঞ্জন অ্যাভিনিউ হয়ে মিছিল আসে ধর্মতলার ভিক্টোরিয়া হাউস পর্যন্ত।

ধর্মতলার অনশন মঞ্চেও চিকিৎসকদের পাশাপাশি সাধারণ লোকের ভিড় ছিল দেখার মতো। প্রবাসীরাও সহমর্মিতা জানান অনশনকারীদের। সংহতি জানায় ফেডারেশন অফ অল ইন্ডিয়া মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনও। আজ, বুধবারও চিকিৎসকদের যৌথ মঞ্চের তরফে একটি মিছিল আয়োজিত হতে পারে। সাত জন জুনিয়র ডাক্তারের পাশাপাশি অনশন মঞ্চে ১২ ঘণ্টার অনশনে সামিল হয়েছেন সঞ্জয় হোমচৌধুরী, রাজীব পাণ্ডে, প্রলয় বসু, শ্যামাশিস দাস, অনির্বাণ জয়সওয়াল, স্মিতা দোলুইয়ের মতো সিনিয়র ডাক্তাররাও। আজ, বুধবারও সিনিয়র ডাক্তারদের অন্তত ছ’জন প্রতিনিধি রিলে অনশনে সামিল হবেন।



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *