Junior Doctors Protest,ভাঙা শরীরেও অনশনে দাঁড়ি টানছেন না ওঁরা, হাসপাতালে ভর্তি ৬ – six junior doctors admitted to hospital on hunger strike


এই সময়: আন্দোলনরত জুনিয়র ডাক্তাররা অনড় ১০ দফা দাবিতে। সেই লক্ষ্যেই গত ৫ অক্টোবর থেকে এখনও পর্যন্ত মোট ১২ জন জুনিয়র ডাক্তার আমরণ অনশনে বসেছেন। যাদের মধ্যে কলকাতার ৯ জন এবং শিলিগুড়িতে ৩ জন। কিন্তু দীর্ঘ অনশনের জেরে একে-একে ৬ জন অনশন মঞ্চ ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন।ভয়াবহ জলশূন্যতা, একাধিক অভ্যন্তরীন অঙ্গের গোলযোগ আর রক্তে বিষাক্ত রাসায়নিকের উপস্থিতির পাশাপাশি তলানিতে চলে যাওয়া রক্তচাপ ও ব্লাডসুগার লেভেল নিয়ে তাঁদের সকলেরই ঠাঁই হয়েছে আরজি কর, কলকাতা মেডিক্যাল, এনআরএস অথবা উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালের ক্রিটিক্যাল কেয়ার ইউনিটে (সিসিইউ)। তবে আশার কথা, প্রত্যেকেই চিকিৎসায় সাড়া দিতে শুরু করেছেন। এদের মধ্যে সর্বশেষ সংযোজন তনয়া পাঁজা।

সোমবার সকালেই ধর্মতলার অনশন মঞ্চে অসুস্থ হয়ে পড়েন কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের ইএনটি সিনিয়র রেসিডেন্ট তনয়া। তাঁর রক্তচাপ ও ব্লাডসুগার কমে যাওয়ার পাশাপাশি মূত্রে মিলেছে বিষাক্ত কিটোন। সঙ্গে রয়েছে জলশূন্যতা, দুর্বলতা ও মাথা ঘোরার সমস্যা। কিন্তু তিনি দিনভর হাসপাতালে ভর্তি হতে না চাইলেও সন্ধ্যায় পরিস্থিতির ঘোর অবনতি হওয়ায় কলকাতা মেডিক্যালে ভর্তি করতে হয় তাঁকে।

অন্যদিকে, রক্তচাপ মারাত্মক ওঠা-নামা করায় ঝুঁকি না নিয়ে শিলিগুড়িতে অনশনরত উত্তরবঙ্গ ডেন্টাল কলেজের ইন্টার্ন সৌভিক বন্দ্যোপাধ্যায়কে সোমবারই ভর্তি করা হয় উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালের সিসিইউ-তে। শনিবার অনশনরত উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালের সাইকিয়াট্রি পিজিটি অলোককুমার ভার্মাকেও প্রবল জলশূন্যতা নিয়ে ভর্তি করা হয়েছে ওই হাসপাতালে-ই।

শনিবার রাতে ধর্মতলার অনশন মঞ্চ থেকে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের সিসিইউ-তে আশঙ্কাজনক অবস্থায় ভর্তি করতে হয় ওই কলেজের এন্ডোক্রিনোলজি বিভাগের পোস্ট-ডক্টরাল পড়ুয়া অনুষ্টুপ মুখোপাধ্যায়কে। আর রবিবার রাতে এনআরএসের সিসিইউ-তে ভর্তি হন ওই কলেজের অ্যানাস্থেশিয়া পিজিটি পুলস্ত্য আচার্য। অনুষ্টুপের পেট ব্যথার পাশাপাশি পায়ুদ্বার থেকে রক্ত বেরিয়ে আসছিল। পুলস্ত্যের ছিল পেট ব্যথা ও বমি ভাব। দু’ জনের শরীরে অস্বাভাবিক জলশূন্যতা এবং মূত্রে মেলে মাত্রাতিরিক্ত কিটোন। তবে সে সবই এখন বেশ কিছুটা নিয়ন্ত্রণে। অসুস্থ সকলের চিকিৎসাতেই মেডিক্যাল বোর্ড গড়া হয়েছে। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, প্রত্যেকের সুস্থ হয়ে উঠতে সময় লাগবে।

গত ৫ অক্টোবর ধর্মতলায় আমরণ অনশন শুরু করেন কলকাতা মেডিক্যালের অনুষ্টুপ মুখোপাধ্যায়, তনয়া পাঁজা ও স্নিগ্ধা হাজরা, এসএসকেএমের অর্ণব মুখোপাধ্যায়, এনআরএসের পুলস্ত্য আচার্য এবং কেপিসি-র সায়ন্তনী ঘোষ হাজরা। পরের দিন তাঁদের মঞ্চে যোগ দেন আরজি করের অ্যানাস্থেশিয়া পিজিটি অনিকেত মাহাতো। ওই দিনই শিলিগুড়িতে আমরণ অনশন শুরু করেন অলোককুমার ভার্মা ও সৌভিক বন্দ্যোপাধ্যায়। এর মধ্যে সকলের আগে অসুস্থ হয়ে পড়েন অনিকেত। উচ্চ রক্তচাপের পুরোনো রোগী অনিকেত গত বৃহস্পতিবার, মহাসপ্তমীর রাতে মূত্রে কিটোন এবং শরীরে ভয়াবহ জলশূন্যতা নিয়ে ভর্তি হন আরজি করের সিসিইউ-তে। এখন অনেকটাই স্থিতিশীল তিনি।

অনশনে অসুস্থ আরও ১, হাসপাতালে ভর্তি হতে নারাজ জুনিয়র ডাক্তার তনয়া

এর পরের দিন, শুক্রবার ধর্মতলার অনশন মঞ্চে যোগ দেন বিবেকানন্দ ইনস্টিটিউট অফ মেডিক্যাল সায়েন্সেসের ইএনটি পিজিটি পরিচয় পণ্ডা ও ন্যাশনাল মেডিক্যালের সার্জারি পিজিটি আলোলিকা ঘোড়ুই। আর সোমবারই শিলিগুড়িতে আমরণ অনশন শুরু করেন উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালের ইএনটি পিজিটি সন্দীপ মণ্ডল। অর্থাৎ, বর্তমানে ৬ জন জুনিয়র ডাক্তার অনশনরত। তবে কয়েক দিন অনশন চলার পরে কমবেশি প্রায় সকলেরই জলশূন্যতা, রক্তচাপ ও সুগার কমে যাওয়ার পাশাপাশি মূত্রে কিটোনের উপস্থিতি মিলেছে।

এন্ডোক্রিনোলজি বিশেষজ্ঞ সতীনাথ বন্দ্যোপাধ্যায় জানাচ্ছেন, খাবার না-খেলে শরীরে গ্লুকোজ তৈরির প্রক্রিয়া জারি রাখে লিভার। গ্লাইকোজেন ভেঙে গ্লুকোজ তৈরি হয়। কিন্তু সেই ভাঁড়ারেও টান পড়লে চর্বি ভেঙে নিওগ্লুকোজেনেসিস শুরু হয়। এই প্রক্রিয়ারই উপজাত পদার্থ হিসেবে কিটোন তৈরি হয় শরীরে, যা রক্তকে ক্রমেই অ্যাসিডিক করে তোলে। এতে মারাত্মক বিষক্রিয়া হয়। যা ভয়াবহ প্রভাব ফেলে লিভার, কিডনি, হার্ট ও ব্রেনে।



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *