এদিকে, মঙ্গলবার দ্রোহের কার্নিভালের পরে ডাক্তারদের আন্দোলন প্রসঙ্গে বুধবার ‘ব্রিগেড সমাবেশ’-এর ইঙ্গিত ঘিরে রাজনৈতিক জল্পনা শুরু হয়েছে। চিকিৎসকদের যৌথ মঞ্চের তরফে জারি করা একটি প্রেস বিবৃতিতে মঙ্গলবার দ্রোহের কার্নিভালে সাফল্যের জন্য আমজনতাকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করা হয়। তাতে লেখা হয়, ‘মনে রাখতে হবে, নির্যাতিতা বিচার পায়নি এখনও, আমাদের সন্তানেরা অভুক্ত আছে আর অপরাধী আজও ঘুরে বেড়াচ্ছে। ক্ষমতা পুলিশকে দিয়ে (হয়তো তাদের একটি অংশের অনিচ্ছা সত্ত্বেও) আন্দোলনকারীদের হেনস্থা করাচ্ছে। তাই আসল কার্নিভাল হবে সব দাবি পূরণের পরে। সে দিন আপনারা ব্রিগেড প্যারেড গ্রাউন্ডের দখল নেবেন, এ বিশ্বাস আমাদের আছে।’
স্বাভাবিক ভাবেই এই বক্তব্যে তীব্র প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছে শাসকদল। তৃণমূলের প্রাক্তন সাংসদ কুণাল ঘোষ বলেন, ‘ব্রিগেডের মতো একটি রাজনৈতিক ভাবে তাৎপর্যপূর্ণ শব্দবন্ধ ব্যবহার করে আপনারা কী ইঙ্গিত দিতে চাইছেন? হিম্মত থাকে, আপনারা যান না, কাল থেকেই ব্রিগেডে বসুন।’ তাঁর মতে, আরজি করের নির্যাতিতার বিচার সকলেই চান। কিন্তু সেই দাবি থেকে সরে আসছেন আন্দোলনকারীরা। কুণালের দাবি, ‘আন্দোলনকারীরা কলকাতা পুলিশের তদন্তে সন্তুষ্ট নয়, সিবিআই তদন্তেও সন্তুষ্ট নয়। তা হলে সুপ্রিম কোর্টে এ নিয়ে আবেদন জানালেন না কেন, তার জবাব দিন আপনারা।’
এদিকে ১২ দিন পেরিয়েও ধর্মতলা ও শিলিগুড়িতে জুনিয়র ডাক্তারদের আমরণ অনশন চলছেই। প্রথম দিন থেকে যাঁরা অনশন করছিলেন, তাঁদের মধ্যে এখনও অনশন চালিয়ে যাচ্ছেন এসএসকেএমের অর্ণব মুখোপাধ্যায়, কলকাতা মেডিক্যালের স্নিগ্ধা হাজরা এবং কেপিসি-র সায়ন্তনী ঘোষ হাজরা। ধর্মতলাার আমরণ অনশন মঞ্চে সামিল বিবেকানন্দ ইনস্টিটিউট অফ মেডিক্যাল সায়েন্সেসের পরিচয় পণ্ডা, ন্যাশনাল মেডিক্যালের আলোলিকা ঘোড়ুই, অল ইন্ডিয়া ইনস্টিটিউট অফ হাইজিন অ্যান্ড পাবলিক হেলথের রুমেলিকা কুমার ও মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজের স্পন্দন চৌধুরী।
শিলিগুড়িতে আমরণ অনশন চালিয়ে যাচ্ছেন উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালের জুনিয়র ডাক্তার সন্দীপ মণ্ডল। তবে অনশনে প্রথম অসুস্থ হয়ে পড়া আরজি করের জুনিয়র ডাক্তার অনিকেত মাহাতো এখন অনেকটাই সুস্থ হয়ে উঠেছেন। সব ঠিক থাকলে তাঁকে আজ, বৃহস্পতিবার ছুটি দিয়ে দেওয়া হতে পারে।
এদিন বিকেলে, সন্ধ্যার মুখে ধর্মতলার অনশন মঞ্চ একপ্রকার তছনছ হয়ে যায় আচমকা প্রবল ঝোড়ো হাওয়া এবং তুমুল বৃষ্টিতে। পুরো এলাকায় জল জমে যায়। যদিও তার পরেও উৎসাহ ও মনোবলে ভাটা পড়েনি আন্দোলনকারীদের। অনশনকারীদের উৎসাহ দিতে আসা আন্দোলনের বহু সমর্থক বৃষ্টির মধ্যেই গানে, নাচে ও ড্রাম-গিটার বাজিয়ে এবং ‘উই ওয়ান্ট জাস্টিস’ কিংবা ‘জাস্টিস ফর আরজি কর’ স্লোগানে ভরিয়ে দেন ধর্মতলা চত্বর।