কলকাতায় পুজো কার্নিভালে ডিউটি ছিল পুরসভার চিকিৎসক তপোব্রতর। তাঁর শার্টে লাগানো ব্যাজে লেখা ছিল ‘প্রতীকী অনশনকারী’। অভিযোগ, সেই কারণে তাঁকে আটক করে ময়দান থানার পুলিশ। সোমবার রাতে কার্নিভালের ডিউটিতে যাওয়ার পথে ব্যারিকেড পেরোনোর সময়ে পুলিশের হাতে মার খেতে হয় শিলিগুড়ি পুরসভার ২৮ নম্বর ওয়ার্ডের স্বাস্থ্যকেন্দ্রে কর্মরত ওই চিকিৎসককে। শিলিগুড়ি শহরের হিলকার্ট রোডের গান্ধি চকে রাত দশটা নাগাদ মহিলা পুলিশকর্মীরা ওই চিকিৎসক হীরকব্রত সরকারের কাছে সিকিউরিটি পাস দেখতে চান।
তিনি সেটা দেখাতে না-পারায় তাঁকে প্রথমে শারীরিক ভাবে হেনস্থা করা হয়। তিনি প্রতিবাদ করলে মারধর করা হয়। খবর পেয়ে পুলিসের উর্ধ্বতন কর্তারা সেখানে পৌঁছন এবং ওই চিকিৎসককে অশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাজ করেন বলে অভিযোগ। এর পরে ওই চিকিৎসকের সঙ্গে থাকা বাইকে চড়েই তাঁকে শিলিগুড়ি থানায় নিয়ে গিয়ে বসিয়ে রাখা হয়। রাত দেড়টা নাগাদ পুলিশ আধিকারিকেরা জেরা করতে গিয়ে যখন বুঝতে পারেন যে চিকিৎসক পুরসভারই কর্মী, তখন তাঁকে ব্যক্তিগত জামিনে মুক্তি দেওয়া হয়।
দার্জিলিং জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক তুলসী প্রামাণিককে ফোন করা হলে তিনি ধরেননি। পুলিশ সরকারি ভাবে এই বিষয়ে কোনও মন্তব্য করেনি। তবে পুলিশের পক্ষ থেকে ইতিমধ্যেই ওই চিকিৎসকের বিরুদ্ধে সোমবার রাতে গান্ধি চকে কর্তব্যরত মহিলা পুলিশকর্মীদের হেনস্থার পাল্টা অভিযোগ আনা হয়েছে। ফলে আরও হেনস্থার মুখে পড়ার আশঙ্কায় ওই চিকিৎসক এই ব্যাপারে শিলিগুড়ি থানায় অভিযোগ দায়ের পর্যন্ত করেননি। তিনি বলেন, ‘আমার যা বক্তব্য সেটা পুরসভার উর্ধ্বতন কর্তাদের লিখিত ভাবে জানিয়েছি। এর বাইরে আর কিছু বলার নেই।’
সোমবার রাতে ওই চিকিৎসক পুলিশকে যে বয়ান দিয়েছেন তাতে তিনি জানিয়েছেন, কার্নিভালে ডিউটি করার জন্য তাঁকে নির্দেশ দেওয়া হয়। রাত দশটা থেকে তাঁর ডিউটি শুরু হওয়ার কথা। কার্নিভালের ডিউটির জন্য তাঁর নামে সিকিউরিটি পাস ইস্যু করা হয়েছিল। সেই সিকিউরিটি কার্ড নিয়ে অ্যাম্বুল্যান্সের চালক আগেই মহানন্দা নদীর পাড়ে লালমোহন মৌলিক ঘাটে চলে গিয়েছিলেন। সেই কারণেই সিকিউরিটি পাশ ছাড়াই তিনি রওনা হন।
সেখানে কর্তব্যরত পুলিশকর্মীদের তিনি সমস্যার কথা জানিয়ে সাহায্য চান। তাঁরা কোনও সাহায্য করতে অস্বীকার করেন। অন্যদিকে, অ্যাম্বুল্যান্স চালক ফোন না-ধরায় তিনি ব্যারিকেড পেরোনোর চেষ্টা করেন। তখনই কয়েকজন মহিলা পুলিশকর্মী তাঁকে ধরে মারধর শুরু করেন বলে অভিযোগ। গভীর রাতে বাড়ি ফেরার পরে এখন রীতিমতো আতঙ্কিত ওই চিকিৎসক।
তাঁর আশঙ্কা, মহিলা পুলিশকর্মীদের গায়ে তিনি হাত তুলেছেন, এমন ভুয়ো অভিযোগ করে আরও হেনস্থার চেষ্টা করা হবে তাঁকে। আইএমএ-র শিলিগুড়ি শাখার সম্পাদক শঙ্খ সেন বলেন, ‘দুভার্গ্যজনক ঘটনা। আমি পুর কমিশনারের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি। তিনি খোঁজ নিয়ে জানাবেন বলেছেন। কমিশনারের বক্তব্য জানার পরে মন্তব্য করব।’