Wb Forest Department,নেকড়ে বাঁচাতে ইসিএল, রেলকে চিঠি বন দপ্তরের – forest department letter to ecl and railways to save wolf


বিশ্বদেব ভট্টাচার্য, আসানসোল
মূলত শিল্পাঞ্চল, বনভূমি সে অর্থে নেই বললেই চলে, তবুও পশ্চিম বর্ধমান জেলায় উল্লেখযোগ্য হারে বাড়ছে ভারতীয় ধূসর নেকড়ে, হায়না, গোল্ডেন জ্যাকেল, প্যাঙ্গোলিনের মতো বন্যপ্রাণ। এ বার এই বন্যপ্রাণীদের বাঁচিয়ে রাখতে বিশেষ উদ্যোগ নিল জেলা বন দপ্তর। তারা বন্যপ্রাণীগুলোর বসবাসের উপযোগী পরিবেশ গড়ে তুলতে চিঠি দিল ইসিএল, রেল থেকে বেসরকারি বিদ্যুৎ উৎপাদনকারী সংস্থার নিজস্ব কয়লাখনির কর্তাদের। কী পদক্ষেপ করলে ওই বন্যপ্রাণীগুলোর যথাযথ সংরক্ষণ করা যাবে তার বিস্তারিত ব্যাখ্যা দেওয়া রয়েছে ওই চিঠিতে।সাম্প্রতিক অতীতে নেকড়ে, হায়না, শিয়ালের মতো প্রাণীর ভালোমতো উপস্থিতির প্রমাণ মিলেছে আসানসোল-দুর্গাপুর খনি এলাকা ও সংলগ্ন ছোট ছোট বনাঞ্চলে। এ বার তাদের সংরক্ষণ ও জীবনধারা চর্চা করার জন্য বন দপ্তর ও ওয়াইল্ড লাইফ ইনফর্মেশন অ্যান্ড নেচার গাইড সোসাইটি বা উইংস যৌথ ভাবে কাজ শুরু করেছে। এই প্রকল্পে আর্থিক সহায়তা করছে ডব্লিউডব্লিউএফ। এই প্রকল্পের মাধ্যমে আসানসোল ও পার্শ্ববর্তী এলাকার জঙ্গল, খনি, খোলামাঠে নেকড়ে ও অন্য বন্যপ্রাণীদের গতিবিধি খতিয়ে দেখা হবে। প্রাণীগুলোকে রক্ষা করার জন্য নির্দিষ্ট পরিকল্পনা নিয়ে এগোতে চায় বন দপ্তর। এ জন্য ব্যবহার করা হবে ক্যামেরাও।

রাষ্ট্রায়ত্ত ও বেসরকারি সংস্থাগুলোকে চিঠি দেওয়া প্রসঙ্গে পশ্চিম বর্ধমানের ডিএফও অনুপম খান জানান, রেল, ইসিএলকে বলা হয়েছে, ধূসর নেকড়ে, হায়না, প্যাঙ্গোলিন থেকে শুরু করে রক পাইথন পর্যন্ত নানা ধরনের বন্যপ্রাণী ও সরীসৃপ ওই সব সংস্থাগুলোর অধীনে থাকা এলাকায় রয়েছে বলে তাঁরা জানতে পেরেছেন। এই প্রাণীগুলোকে রক্ষা করার জন্য ৬ দফা সিদ্ধান্তের কথা ওই চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে।

‘এই সময়’কে ডিএফও বলেন, ‘চিঠিতে আমরা বলেছি, ইসিএলের খনিগুলোয় যাতায়াতের রাস্তায় স্পিডব্রেকার বসিয়ে গাড়ির গতি কমানোর ব্যবস্থা নিতে হবে। নজর রাখতে হবে যাতে খনি এলাকায় ৪০ কিমি-এর বেশি গতিতে গাড়ি না চলে।’ চিঠির সঙ্গে ওই সব পশুদের ছবিও পাঠিয়েছে বন দপ্তর যাতে তা থেকে আধিকারিক এবং কর্মীরা প্রাণীগুলোকে চিনতে পারেন। ডিএফও বলেন, ‘প্রয়োজনে এ বিষয়ে ওই সব সংস্থার কর্মীদের সচেতন করতে বা প্রশিক্ষণের জন্য আমরা উদ্যোগ নেব। এ ছাড়া বলা হয়েছে, ওই পশুদের কেউ মারা গেলে সঙ্গে সঙ্গে খবর দিতে হবে বন দপ্তরে।’

শিল্পাঞ্চলের কোন কোন এলাকায় এই বন্যপ্রাণের খোঁজ মিলেছে? ডিএফও জানান, জামুড়িয়ার কাছে কয়লাখনি, আইসিএমএল-এর সরিষাতলি কয়লাখনি, পাণ্ডবেশ্বর খনি এলাকা, সালানপুরের আল্লাডি লাগোয়া জঙ্গলে নেকড়ের অস্তিত্ব পাওয়া গিয়েছে। তিনি বলেন, ‘শুনেছি চিত্তরঞ্জনের শ্মশানঘাট পেরিয়ে বিশাল জঙ্গলেও এদের অস্তিত্ব রয়েছে। ভারতীয় ধূসর নেকড়ে এই অঞ্চলে পরিবেশগত ভারসাম্য তৈরি ও জীববৈচিত্র বজায় রাখার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিচ্ছে।’

এর ফলে ভবিষ্যৎ প্রজন্মও এদের দেখা পাবে বলে ডিএফও মনে করেন। আসানসোল টেরিটোরিয়াল রেঞ্জের রেঞ্জ অফিসার তমালিকা চন্দ জানান, এই প্রকল্পে নেকড়েদের সম্পর্কে অজানা বহু তথ্য সামনে আসবে। সাধারণ মানুষকেও জড়িয়ে নেওয়া হবে এই প্রকল্পে বলে তিনি জানান।



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *