‘আমি তোর বাবার মতো বলে ব্রিজভূষণ আমাকে অসভ্যের মতো চটকেছে!’


জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: আত্মজীবনীতে ফের কুস্তি ফেডারেশনের প্রধান ব্রিজ ভূষণ শরণ সিংয়ের বিরুদ্ধে বোমা ফাটালেন অবসরপ্রাপ্ত কুস্তিগীর সাক্ষী মালিক। ব্রিজভূষণের বিরুদ্ধে পথে নেমেছিলেন সাক্ষী। এবার তাঁর আত্মজীবনী ‘উইটনেস’-এ জীবনের অজানা কাহিনি তুলে ধরেছেন সাক্ষী। ২০১২ সালে কাজাখস্তানের আলমাটিতে এশিয়ান জুনিয়র চ্যাম্পিয়নশিপে স্বর্ণপদক জেতার পর হোটেলের রুমে ব্রিজভূষণ তাঁকে ডেকেছিলেন হোটেল রুমে। সেখানেই তাঁকে চেপে ধরে কুস্তি ফেডারেশনের প্রধান। সেই সময় সাক্ষীর বয়স ছিল মাত্র ১৯ বছর। 

আরও পড়ুন- Cyclone Dana: ধেয়ে আসছে ‘ডানা’, প্রশাসনের তরফে শুরু মাইকিং, জারি আগাম সতর্কতা

সাক্ষী তাঁর আত্মজীবনীতে লিখেছেন যে জয়ের পরে, তাঁকে কুস্তি ফেডারেশনের প্রধান ব্রিজ ভূষণ শরণ সিং হোটেল রুমে ডাকে। সাক্ষীকে বলা হয় যে সেখানেই তাঁর সঙ্গে ফোনে বাবা-মার সঙ্গে কথা বলিয়ে দেওয়া হবে। বাবা-মায়ের সঙ্গে কথা বলিয়ে দেওয়ার অজুহাতেই তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয় ব্রিজভূষণের রুমে। সাক্ষী মালিকের অভিযোগ, ‘ব্রিজভূষণ শরণ সিং আমাকে আমার বাবা-মায়ের সঙ্গে কথা বলিয়ে দেন। এটায় কোনও ভুল ছিল না। যখন আমি তার সঙ্গে কথা বলেছিলাম এবং তাঁকে আমার ম্যাচ এবং আমার পদক সম্পর্কে বলেছিলাম, তখনও সেখানে অপ্রীতিকর কিছু মনে হয়নি আমার’।

এরপরেই নিজের আসল চেহারা দেখান ব্রিজভূষণ,এমনই দাবি সাক্ষীর। কুস্তিগীর লেখেন, ‘আমি ফোন রাখার পরে যখন ওর খাটে বসে ছিলাম তখন ও আমাকে জড়িয়ে ধরার চেষ্টা করে। আমি ওকে ধাক্কা দিয়ে কাঁদতে থাকি। এরপর ও পিছু হটে যায়। ও বুঝতে পেরেছিল যে আমি ওর কথা শুনব না। সঙ্গে সঙ্গেই বলতে শুরু করে যে ও নাকি আমাকে ‘বাবার মতো’জড়িয়ে ধরেছিল কিন্তু আমি জানতাম সেটা তেমনটা ছিল না। আমি তার রুম থেকে বেরিয়ে কাঁদতে কাঁদতে আমার রুমে ফিরে যাই।’

রেসলিং ফেডারেশন অফ ইন্ডিয়ার (ডব্লিউএফআই) প্রাক্তন প্রধান ব্রিজ ভূষণ সিং ছয়বার লোকসভা সাংসদ, তার বিরুদ্ধে একাধিক যৌননিগ্রহের অভিযোগ উঠেছে। সাক্ষী মালিক তাঁর আত্মজীবনীতে আরও উল্লেখ করে লিখেছেন যে ব্রিজ ভূষণ সিং বারবার তাঁকে ফোন করেছিলেন এবং তাঁকে তার পাশে থাকার জন্য অনুরোধ করেছিলেন। সাক্ষী সেই সময় তার ক্যাম্পের রুমমেট অনিতা শেরান এবং তাঁর মায়ের সঙ্গে আলমাটির ঘটনা শেয়ার করেছিলেন। সাক্ষী লেখেন, ‘যদিও গল্পটা ছড়ানোর ইচ্ছে ছিল না কিন্তু হয়ে গিয়েছিল। আলমাটিতে আমার কী হয়েছিল তা সকলেই জানত। এটা নিয়ে কেউ কথা বলেনি। আমিও করিনি। সেই ভয় এবং উদ্বেগ, ঘটনার কয়েক মাস পরে ২০১২ জুনিয়র ওয়ার্ল্ড চ্যাম্পিয়নশিপে আমার পারফরম্যান্সকে প্রভাবিত করেছিল, যেখানে আগের সংস্করণে ব্রোঞ্জ জেতার পরে আমি ফেভারিট ছিলাম’।

আরও পড়ুন- Naga Chaitanya-Sobhita Dhulipala’s wedding: সামান্থা অতীত! শোভিতার সঙ্গে ফের বিয়ের পিঁড়িতে নাগা চৈতন্য, প্রাক-বিবাহ অনুষ্ঠানেই…

শৈশবেও তাঁকে শ্লীলতাহানির শিকার হতে হয়। তিনি বলেন, ‘তবে দীর্ঘদিন ধরে আমি আমার পরিবারকে এটি সম্পর্কে বলতে পারিনি, কারণ আমি মনে করতাম যে আমার আমার দোষ ছিল। আমার টিউশন শিক্ষক আমাকে হয়রান করত। সে আমাকে অদ্ভুত সময়ে ক্লাসের জন্য তার বাড়িতে ডাকত এবং মাঝে মাঝে আমাকে স্পর্শ করার চেষ্টা করত। টিউশন ক্লাসে যেতে ভয় পেতাম, কিন্তু মাকে বলতে পারতাম না। এটি দীর্ঘ সময় ধরে চলে এবং আমি এটি সম্পর্কে অনেকদিন চুপ ছিলাম।’

সাক্ষী মালিক অবশেষে তাঁর মায়ের কাছে সব জানান, যিনি তাঁকে সমর্থন করেছিলেন। সাক্ষী লিখেছেন, ‘আমার মা শুধু টিউশন শিক্ষকের সঙ্গে ঘটনার সময়ই নয়, ব্রিজভূষণ সিং যখন আমাকে তাড়া করতে শুরু করেছিলেন তখনও আমাকে সমর্থন করেছিলেন। আমি আলমাটিতে যা ঘটেছিল তা ভুলে যাওয়ার চেষ্টা করেছি। আমার বাবা-মাও আমাকে এই পরামর্শই দিয়েছেন। তাঁরা আমাকে আমার প্রশিক্ষণ এবং প্রতিযোগিতায় মনোনিবেশ করতে বলেছিলেন।’

 

(দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির টাটকা খবর, আপডেট এবং ভিডিয়ো পেতে ডাউনলোড-লাইক-ফলো-সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের AppFacebookWhatsapp ChannelX (Twitter)YoutubeInstagram পেজ-চ্যানেল)





Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *