Alipurduar Incident,গণধর্ষণ-খুনের পরে পুড়িয়ে দেওয়া হলো শিশুকন্যার দেহ, জয়গাঁর ঘটনায় গ্রেপ্তার তিন – alipurduar police recovered a burnt body of child and 3 arrested


এই সময়, আলিপুরদুয়ার: কৃষ্ণনগরের ছায়া এ বার আলিপুরদুয়ারে! এক শিশুকন্যাকে গণধর্ষণ-খুনের পরে দেহ পুড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগে উত্তপ্ত ভুটান লাগোয়া সীমান্ত শহর জয়গাঁ। হতদরিদ্র পরিবারের সাত বছরের একটি মেয়েকে চাউমিন খাওয়ানোর লোভ দেখিয়ে নিয়ে যায় পাড়ারই এক পরিচিত ব্যক্তি। ঘটনা গত ১৫ অক্টোবরের। ওই দিন দুপুরের পর থেকে আর খোঁজ মেলেনি দ্বিতীয় শ্রেণির সেই পড়ুয়ার। বেপাত্তা ছিল ওই প্রৌঢ়ও। ওই রাতেই শিশুকন্যার পরিবারের তরফে জয়গাঁ থানায় অপহরণের মামলা করা হয়।এক সপ্তাহ পরে মঙ্গলবার সকালে একটি ঝোপ থেকে ওই শিশুকন্যার অর্ধদগ্ধ পচাগলা মৃতদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। ওই ঘটনাকে কেন্দ্র করে চরম উত্তেজনা ছড়ায় জয়গাঁ শহর জুড়ে। বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করে ক্ষিপ্ত জনতা। সমস্ত দোকানপাট বন্ধ করে দেওয়া হয়। পরে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

ঘটনায় অভিযোগ দায়ের হওয়ার পর থেকেই তদন্ত শুরু করেছিল পুলিশ। এলাকার সিসি টিভি ফুটেজ পরীক্ষা করে দেখা যায়, ১৫ তারিখ দুপুরে মেয়েটির হাত ধরে যাচ্ছে পাড়ার ওই ব্যক্তি। কিন্তু গোয়েন্দা কুকুর নামিয়ে তন্নতন্ন করে তল্লাশি চালিয়েও ওই শিশুকন্যা ও অভিযুক্তের কোনও হদিশ পাওয়া যায়নি। অভিযুক্ত পেশায় একজন ইট ভাটার শ্রমিক হওয়ায় পুলিশ রাজ্যের ও বিহারের বেশির ভাগ ইটভাটায় তল্লাশি চালায়। কিন্তু লাভ হয়নি।

সোমবার গভীর রাতে পুলিশ জানতে পারে যে, অভিযুক্ত নেপাল সীমান্ত লাগোয়া একটি ইট ভাটায় ঘাপটি মেরে আছে। সঙ্গে সঙ্গে জেলা পুলিশের একটি দল সেখানে রওনা দেয়। অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করে জেরা করার পর পুলিশ মৃতদেহটির হদিশ পায়। সেই সঙ্গে ধৃতের কাছ থেকে জানা যায় যে, শিশুকন্যাকে গণধর্ষণের পর খুন করে জ্বালিয়ে দেওয়ার ঘটনায় আরও দু’জন জড়িত। তাদেরকেও গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

পুলিশের দাবি, ঘটনার সময়ে তিন জনই আকন্ঠ মদ্যপান করে ছিল। নির্জন জায়গায় নিয়ে গিয়ে প্রথমে ওই শিশুকন্যার উপর যৌন নির্যাতন চালানো হয়। তারপর খুন করে প্রমাণ লোপাটের জন্য দেহটি জ্বালিয়ে দেওয়া হয়। ঘটনায় অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে পকসো আইনের ৬ নম্বর ধারা যুক্ত করা হয়েছে, সঙ্গে পরিকল্পিত খুনের ধারাও জুড়ে দেওয়া হয়েছে। যার সর্বোচ্চ সাজা ফাঁসি।

ওই শিশুকন্যার বাবা পক্ষাঘাতে আক্রান্ত হয়ে বেশ কিছু দিন ধরে শয্যাশায়ী। মা রাজমিস্ত্রির জোগানদারের কাজ করে কোনও রকমে সংসার চালান। এ দিন কান্নায় ভেঙে পড়ে মা বলেন, ‘আমার মেয়েটাকে শেষ করে দিলো পশুটা। আমি ওকে নিজে হাতে হত্যা করে জেলে যেতে চাই। আইন তো আমায় সে সুযোগ দেবে না! এটাই আক্ষেপের।’

মৃতদেহটি পুড়ে ও পচে গিয়ে এতটাই বিকৃত হয়ে গিয়েছে যে, শুধুমাত্র ময়নাতদন্তের মাধ্যমে সব কিছু প্রমাণ করা খুবই দুরূহ কাজ বলে মনে করছেন পুলিশ কর্তারা। ফলে কেমিক্যাল অ্যানালিসিসের কথাও ভাবা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন জেলার পুলিশ সুপার ওয়াই রঘুবমশী। তিনি বলেন, ‘জঘন্যতম অপরাধ। আমি নিন্দার ভাষা খুঁজে পাচ্ছি না। জঘন্য এই অপরাধের জন্য পুলিশের পক্ষ থেকে সর্বোচ্চ সাজার সুপারিশ করা হচ্ছে।’



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *