Howrah City Police: প্রতারণায় গ্রেপ্তার ছেলে, শিবপুরে আত্মঘাতী বাবা-মা – howrah police investigating unnatural death case of a parents


এই সময়, হাওড়া: দাদু ছিলেন নামী চিকিৎসক। দক্ষিণ হাওড়ার শিবপুর বটানিক গার্ডেনের পাশেই লক্ষ্মীনারায়ণতলায় সাহানা পরিবারের বিশাল চারতলা বাড়ি আজও এলাকার অন্যতম দ্রষ্টব্য। সম্ভ্রান্ত সেই পরিবারের সন্তান প্রতারণার অভিযোগে গ্রেপ্তার হয়েছিলেন সিআইডির হাতে। সেই ঘটনা জানতে পেরে মঙ্গলবার রাতে আত্মঘাতী হলেন ওই যুবকের বাবা-মা। বাবার নাম মলয় সাহানা (৬২), মা মধুরিমা সাহানা (৫৫)। এজেসি বোস বি গার্ডেন থানার পুলিশ অস্বাভাবিক মৃত্যুর একটি মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করেছে।হাওড়া সিটি পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, দিন তিনেক আগে কুড়ি লক্ষ টাকা প্রতারণার অভিযোগে বেহালা থেকে সিআইডি গ্রেপ্তার করে কৌস্তভ সাহানা নামে এক যুবককে। অভিযোগ, হাইকোর্টের এক বিচারপতির সই জাল করে কলকাতার কালীঘাটের এক বৃদ্ধার বাড়ি ও জমি বিক্রি করে দেন ওই যুবক। আইনি খরচ বাবদ আরও কুড়ি লক্ষ টাকা ওই বৃদ্ধার থেকে হাতিয়ে নেন কৌস্তভ। বৃদ্ধার সন্দেহ হওয়ায় টালিগঞ্জ থানায় তিনি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। আদালতের নির্দেশে এই ঘটনার তদন্তভার নেয় সিআইডি। তার পর থেকেই কৌস্তভ পালিয়ে বেড়াচ্ছিলেন।

শুধু এই ঘটনাই নয়, আরও অনেকের সঙ্গে মোটা টাকার প্রতারণার অভিযোগ রয়েছে কৌস্তভের বিরুদ্ধে। ছেলের এই কীর্তিকলাপে পাওনাদারদের ভয়ে বাড়ি থেকে পালিয়ে বেড়াচ্ছিলেন মলয় ও মধুরিমা। মঙ্গলবার রাতেই হাওড়ার বাড়িতে ফেরেন দম্পতি। বুধবার তাঁদের এক আত্মীয় এসে দেখেন তিনতলায় কৌস্তভদের ঘরের দরজা বন্ধ। অনেক ডাকাডাকির পর দরজা না খোলায় খবর দেওয়া হয় পুলিশে। দরজা ভেঙে পুলিশ আধিকারিকরা দেখেন সিলিং ফ্যানের সঙ্গে গলায় ফাঁস দিয়ে একই দড়িতে মুখোমুখি ঝুলছে ওই দম্পতির দেহ। পুলিশের অনুমান, রাতে তাঁরা আত্মহত্যা করেন। মৃতদেহ ময়নাতদন্তে পাঠানো হয়েছে।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, কৌস্তভের দাদুর আট ছেলে। চতুর্থ ভাই মলয় বাদে প্রায় সকলেই নানা পেশায় সুপ্রতিষ্ঠিত। একই বাড়িতে বাস করলেও পরিবারের বাকিদের সঙ্গে তেমন যোগাযোগ ছিল না মলয় ও মধুরিমার। প্রতিবেশীদের অভিযোগ, ছেলের এই প্রতারণার কাজে প্রচ্ছন্ন মদত ছিল বাবা-মায়েরও। পাওনাদারদের ভয়ে গত বছর দুয়েক ধরে হাওড়ার বাড়িতে থাকতেন না মলয় ও মধুরিমা। কৌস্তভও বেশ কয়েক বছর ওই বাড়িতে তেমন আসেননি। মাঝেমধ্যে রাতের অন্ধকারে সাহানা দম্পতি এক দু’দিনের জন্য এলেও, খবর পেলে পাওনাদারেরা ভিড় করতেন বাড়িতে। তাই দু-একদিন পরেই আবার বেপাত্তা হয়ে যেতেন তাঁরা।

শেয়ালের মুখে আটকে থাকা জার, খোলা হলো ৮ দিন পর
এ দিন ওই দম্পতির মৃত্যুর খবর পেয়েও বেশ কয়েকজন পাওনাদার সেখানে ভিড় করেন। স্থানীয় বাসিন্দারা ওই পরিবার নিয়ে বেশি মুখ খুলতে চাননি। তাঁদের আশঙ্কা, সাহানাদের নিয়ে কিছু বললে পাওনাদাররা তাঁদের বাড়িতেই ভিড় করবেন। এ দিন আত্মহত্যার ঘটনা জানাজানি হওয়ার পরেও প্রতিবেশীরা অনেকেই ওই বাড়ি এড়িয়ে যান। প্রতিবেশীদের দাবি, ছেলে গ্রেপ্তার হওয়ার পর বাবা-মায়ের উপর পাওনাদারদের চাপ বাড়ছিল। সেই চাপ সহ্য করতে না পেরেই তাঁরা আত্মহত্যা করতে পারেন বলে অনুমান পুলিশেরও। তবে ঘর থেকে কোনও সুইসাইড নোট উদ্ধার হয়নি।



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *