Cyclone Dana,ঘুরপথে গেল ৪০০ অন্তর্জাতিক উড়ান – 400 foreign flights diverted to kolkata airport due to cyclone dana fears


এই সময়: উত্তাল সমুদ্র। তার আকাশে ক্রদ্ধ মেঘের সারি। সেই অশান্ত মেঘপুঞ্জকে এড়িয়ে গেল প্রায় চারশো আন্তর্জাতিক উড়ান। বুধবার মাঝরাতে বঙ্গোপসাগরের আকাশ ছেড়ে আরও উত্তর ঘেঁষে, অনেকটা ঘুরপথে কলকাতার আকাশ দিয়ে পূব থেকে পশ্চিম এবং পশ্চিম থেকে পূবে উড়ে গেল যাত্রীবাহী সেই সব উড়ান।এদিকে বৃহস্পতিবার সন্ধে ৭টায় কলকাতা থেকে গুয়াহাটির উদ্দেশে ইন্ডিগোর উড়ান রওনা হওয়ার পরেই সমস্ত ডিপারচার বন্ধ করে দেওয়া হয়। সন্ধে ৬টা ১১ মিনিটে নেমেছে অমৃতসর থেকে আসা ইন্ডিগোর উড়ান। তারপরে আর কোনও উড়ান ওঠানামা করেনি। সবমিলিয়ে ডোমেস্টিক ডিপারচারে বাতিল হয়েছে ১৪৯টি উড়ান। অ্যারাইভালে ১৩২টি। বাতিল হয়েছে ১৪টি আন্তর্জাতিক ডিপারচার এবং সম-সংখ্যক অ্যারাইভাল।

বিমানবন্দর সূত্রের খবর, পরিস্থিতি পর্যালোচনা করার পরে আজ, শুক্রবার সকাল ন’টায় আবার খোলা হবে বিমানবন্দর। শুরু হবে উড়ান পরিষেবা। বৃহস্পতিবার সন্ধের পর থেকে বাতিল হওয়া বহু উড়ান একে একে শহর ছেড়ে উড়বে। রাতের দিকে যে আন্তর্জাতিক উড়ানগুলি ছাড়তে পারেনি, সেগুলিও সকালের পরে ছাড়ার কথা।

তাই এয়ার এশিয়ার উড়ানে বৃহস্পতিবার রাতে সপরিবারে ব্যাঙ্কক যাওয়ার কথা ছিল ত্রিদিবেশ বন্দ্যোপাধ্যায়ের। তিনি জানিয়েছেন, শুক্রবার সকাল দশটায় তাঁদের উড়ান ছাড়বে বলে উড়ান সংস্থার তরফে জানানো হয়েছে। বৃহস্পতিবার সন্ধে ছ’টার পর থেকে কার্যত কলকাতা বিমানবন্দরের টামির্নালের দরজাও বন্ধ করে দেওয়া হয়। উড়ান ধরার আশায় বেশ কিছু যাত্রী পৌঁছে গিয়েছিলেন বিমানবন্দরে। তাঁদের অনেকেই টামির্নালের দোতলায় থ্রি-সি গেটের ভিতরে লাউঞ্জে অপেক্ষা করবেন বলে জানান। অনেকে কাছের হোটেলে চলে যান।

দুর্যোগের সতর্কতা আগে থেকেই ছিল। নোটাম (নোটিস টু এয়ারমেন) জারি করে কলকাতা বিমানবন্দর থেকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল দানা-র কথা। বলা হয়েছিল, সাধারণত প্রতি রাতে বঙ্গোপসাগরের মাথার উপরে প্রধানত যে দু’টি রুটে প্রায় চারশো আন্তর্জাতিক উড়ান যাতায়াত করে, দানা বসে রয়েছে তার উপরেই। সে আকাশে ঢুকলেই বিপদ!

কলকাতা বিমানবন্দরের আবহাওয়া দপ্তরের অধিকর্তা গণেশ দাস বৃহস্পতিবার বিকেলে জানিয়েছেন, বুধবার রাতে সমুদ্রের উপরের আকাশে হাওয়ার ঝাপটা ছিল। এই আবহাওয়া এড়িয়ে চলে বিমান। কিন্তু, উড়ান তো সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে প্রায় ৩৫ হাজার ফুট উপর দিয়ে উড়ে যায়। সাইক্লোনের প্রভাব কি অত উপরেও থাকতে পারে? আবহাওয়া বিশেষজ্ঞ জিসি দেবনাথের কথায়, ‘সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে সাইক্লোনের এফেক্ট প্রায় ১২ কিলোমিটার উপর পর্যন্ত থাকে। প্রায় ৪০ হাজার ফুট। সেই সাইক্লোন আরও বাড়তে পারে। ফলে, ওই এলাকা দিয়ে বিমান নিয়ে যাওয়া সবসময়ের জন্যই ভীষণ ঝুঁকির।’

কলকাতা বিমানবন্দর সূত্রের খবর, অস্ট্রেলিয়া, সিঙ্গাপুর, ব্যাঙ্কক, ভিয়েতনাম, মায়ানমার, কম্বোডিয়া, মালয়েশিয়া, ফিলিপিন্স, ইন্দোনেশিয়া থেকে প্রতি রাতে বহু আর্ন্তজাতিক উড়ান পশ্চিম এশিয়া, ইউরোপ, আমেরিকায় যাতায়াত করে। তাদের প্রায় সবক’টিই ইয়াঙ্গনের আকাশ বা এফআইআর (ফ্লাইট ইনফরমেশন রিজিয়ন) ছেড়ে কলকাতার আকাশে ঢোকে। উড়ানগুলি বঙ্গোপসাগরের আকাশে ঢুকে খানিকটা উড়ে কলকাতার এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোল (এটিসি) ছেড়ে ঢুকে যায় চেন্নাই এটিসি-র আওতায়। সেখান থেকে আরব সাগর টপকে মাসকট হয়ে আরও পশ্চিমে উড়ে যায়। কেউ কেউ আবার চেন্নাই থেকে উত্তরের দিকে ঘুরে দিল্লি হয়ে পাকিস্তানের আকাশে ঢোকে।

সূত্রের খবর, বুধবার মাঝ রাতে বঙ্গোপসাগরের উপরে দু’টি রুটই কার্যত বন্ধ হয়ে যায়। প্রায় চারশো আন্তর্জাতিক উড়ান ইয়াঙ্গন থেকে সটান উত্তরে উড়ে বাংলাদেশে ঢোকে। রাজশাহী থেকে ঢুকে আসে কলকাতার আকাশে। শহরের উপর দিয়ে জামশেদপুর ঘুরে সেগুলি চলে যায় মুম্বইয়ের দিকে।



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *