এই সূত্রেই কৃষকদের ক্ষতি কতটা, তা যাচাই করতে সমীক্ষা করানোর নির্দেশও দেন তিনি। আবহাওয়া পরিস্থিতির সম্পূর্ণ উন্নতি না-হওয়া পর্যন্ত ত্রাণ শিবিরগুলি চলবে বলে শুক্রবার জানান মুখ্যমন্ত্রী। পাশাপাশি বিভিন্ন ত্রাণ শিবিরে আশ্রয় নেওয়া মানুষজন যাতে এখনই নিজেদের বাড়ি না ফেরেন, তা নিশ্চিত করতেও বলেন জেলা প্রশাসনকে। একই সঙ্গে জমা জল থেকে মশাবাহিত বিভিন্ন রোগের প্রাদুর্ভাবের কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে মশারি বিলির পরামর্শ দেন মমতা।
ত্রাণ নিয়ে কোনও অভিযোগ যে তিনি শুনতে চান না, তা স্পষ্ট করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘কেউ যেন না বলেন, আমি ত্রাণ পাইনি। দুর্যোগে যাঁদের বাড়ি ভেঙে গিয়েছে, তাঁরা যেন ক্ষতিপূরণ থেকে বঞ্চিত না হন।’ সে কারণে তিনি সরকারি কর্মীদের ফিল্ড ভিজ়িট করা অর্থাৎ সরেজমিন পর্যবেক্ষণ করে রিপোর্ট জমা দিতে বলেছেন। বিপর্যস্ত এলাকায় আরও দু’দিন জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা দল (এনডিআরএফ) এবং রাজ্য বিপর্যয় মোকাবিলা দল (এসডিআরএফ)-এর কর্মীদের মোতায়েন রাখারও নির্দেশ দেন তিনি।
ঘূর্ণিঝড় দানার গতিবিধিতে নজর রাখতে বৃহস্পতিবার রাতভর নবান্নেই ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নবান্ন সূত্রে জানা গিয়েছে, শুক্রবার সকালে একাধিক বার নিজের ১৪ তলার দপ্তর থেকে কন্ট্রোল রুমে নেমে এসে দুর্যোগ-পরিস্থিতির খোঁজখবর নিয়েছেন তিনি। কখনও যোগাযোগ করেছেন জেলাশাসকদের সঙ্গে, কখনও বা শীর্ষ পুলিশ আধিকারিকদের সঙ্গে। শুক্রবার দুপুরে সামগ্রিক পরিস্থিতি এবং উদ্ধারকাজের বিষয়ে সবিস্তার জানিয়ে সাংবাদিক বৈঠক করেন মুখ্যমন্ত্রী। সেখানে তিনি বলেন, ‘২ লক্ষ ১৬ হাজার মানুষকে উদ্ধার করা হয়েছে। দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন কৃষকেরা।’
মমতার সংযোজন, ‘চাষিরা যাতে কোনওভাবেই ক্ষতিগ্রস্ত না হন তা দেখতে হবে। কৃষকদের স্বার্থকে আমাদের প্রাধান্য দিতে হবে।’ দুর্যোগ নিয়ে পর্যালোচনা বৈঠকে মুখ্যসচিবকে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘চাষে ক্ষতি কতটা হয়েছে, তা দেখার জন্য দুর্যোগ থামা মাত্রই কৃষি দপ্তরের কর্মীদের মাঠে নেমে বিশদ সমীক্ষা করতে হবে। কোন ফসলের কতটা ক্ষতি হয়েছে তার একটা বিস্তারিত রিপোর্ট নবান্নে পাঠাতে হবে।’
এই দায়িত্ব তিনি কৃষি দপ্তরের প্রধান সচিব ওঙ্কার সিং মীনাকে দিয়েছেন। এদিন জেলাশাসকদের সঙ্গে বৈঠকে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে ফের ক্ষোভ উগড়ে দেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘বাংলাকে তো বন্যার টাকা দেওয়া হয় না। বাজেটে অন্য রাজ্যকে বন্যার প্যাকেজ দেওয়া হয়। তাতে আমার কোনও আপত্তি নেই। কিন্তু বাংলাকে কেন বঞ্চিত করা হবে?’