দানার প্রভাবে বুধবার থেকে ঝোড়ো হওয়ার সঙ্গে প্রবল বৃষ্টির জেরে দক্ষিণ ২৪ পরগনার উপকূলে চাষবাসের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। অবিরাম বৃষ্টিতে পুরোপুরি জলমগ্ন হয়ে পড়েছে সাগর, কাকদ্বীপ, নামখানা, পাথরপ্রতিমা, মথুরাপুর, রায়দিঘির অধিকাংশ ধানজমি। জমা জলে মাঠেই লুটিয়ে পড়েছে ধান। মাথায় হাত কৃষকদের। আদৌ এ বছর মাঠ থেকে সোনালি শস্য ঘরে নিয়ে যেতে পারবেন কি না, তা নিয়ে সংশয়ে চাষিদের একাংশ।
নামখানার বাসিন্দা প্রবোধ জানা বলেন, ‘ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে গত তিন দিন ধরে যে হারে বৃষ্টি হয়েছে, তাতে আমাদের ধান চাষে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। সমস্ত ধান গাছ মাঠে জমা জলের উপর শুয়ে পড়েছে। এখন সবে ধানের শিস বেরোনো শুরু হয়েছিল। যা পরিস্থিতি দ্রুত জল না নামলে এ ভাবে ধান গাছ জলে পড়ে থাকলে পচন ধরে নষ্ট হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।’
ক্ষতিগ্রস্ত চাষিরা চাইছেন, রাজ্য সরকার ক্ষতিপূরণের বিষয়টি যদি সহানুভূতির সঙ্গে দেখেন, তবে উপকার হয়। তবে জেলা কৃষিদপ্তর সূত্রে খবর, জেলায় নানা জাতের ধানের চাষ হয় এখানে। ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে প্রবল বৃষ্টিতে খেতের জলে ধান গাছ নুয়ে পড়লেও অনেকটাই উদ্ধার করা যাবে।
এ বারের অতিবৃষ্টির প্রভাব পড়েছে কাকদ্বীপ মহকুমার প্রায় সাড়ে ৯৪ হাজার হেক্টর কৃষিজমিতে। ক্ষয়ক্ষতির সঠিক পরিমাণ জানার জন্য ইতিমধ্যেই ব্লকস্তরে প্রতিনিধিদল তৈরি করা হয়েছে। তারা গ্রামে গ্রামে ঘুরছে। দক্ষিণ ২৪ পরগনার সহকারী কৃষি অধিকর্তা (প্রশাসন) দেবজ্যোতি মহলানবীশ বলেন, ‘প্রতি বছরই কৃষি দপ্তর প্রাকৃতিক দুর্যোগের পর ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের সহযোগিতা করে। এ বারও মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে বাংলা শস্যবিমা যোজনার মাধ্যমে সমস্ত ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে।’
প্রশাসন সূত্রে খবর, ইতিমধ্যেই কৃষকদের মধ্যে ফর্ম বিলি শুরু হয়ে গিয়েছে। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে কৃষকদের সহযোগিতার জন্য বিমার আবেদনপত্র জমা দেওয়ার মেয়াদ এক মাস পিছিয়ে দেওয়া হয়েছে। আগামী ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত আবেদনপত্র জমা দিতে পারবেন ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা।