বিশ্বজিৎ মিত্র: তান্ত্রিকের হাতে দেবী মহিষখাগীর পুজোর সূচনা। ‘আমার কুঁড়ে ঘরে থাকতে ভালো লাগছে না, অতি তাড়াতাড়ি মন্দির তৈরি করে দে’– স্বপ্নে দেবীর এই আদেশ পাওয়ার পরেই মন্দির তৈরি করে দেন রাজা। এরপর থেকেই ১০৮টি মহিষ বলি দিয়ে শুরু হয় মহিষখাগী মাতার পুজো অর্চনা।
জানা গিয়েছে, নদীয়ার শান্তিপুর শহরের প্রায় ৩৫০ বছরের প্রাচীন মহিষখাগী কালীমাতার পুজোর ইতিহাস অনন্য। শোনা যায়, এই স্থানে এক তান্ত্রিকের হাতে পুজোর সূচনা হয়, পরবর্তীতে চ্যাটার্জী বংশের কাঁধে পূজোর দায়িত্বভার পড়ে। কিন্তু দেবীর মন্দির না থাকায় স্বপ্নাদেশে দেবী তাঁর মন্দির নির্মাণ করে দেওয়ার কথা বলেন। স্বয়ং নদীয়ার মহারাজ কৃষ্ণচন্দ্র এই স্বপ্নাদেশ পান।
তবে এখন স্থানীয় বারোয়ারির তত্ত্বাবধানেই হয়ে আসছে ঐতিহ্যশালী এই পুজো। পুজোটি আগে ছিল চ্যাটার্জি বংশের দায়িত্বে, পরে তাঁরা গত হলে পুজোর দায়িত্বভার এসে পড়ে সংশ্লিষ্ট বারোয়ারির হাতে। আগের মন্দির বহু প্রাচীন হয়ে যাওয়ায় এখন মন্দিরটি নতুন করে নির্মাণ করতে হয়। এ কাজে এলাকাবাসীরাই সহযোগিতা করেন। শোনা যায়, বাঙালি বিয়ের রীতি অনুযায়ী পুজো করা হয় মহিষখাগী কালীমাকে। মাকে প্রথম পাটে তোলার সময়ে থাকে একাধিক নিয়মরীতি। পাটে তোলার পরে মন্দিরপ্রাঙ্গণ পরিষ্কার করে সেদিন ভোররাতে শুরু হয় দধিমঙ্গল। এর পরেই পুজোর বিভিন্ন রীতিনীতি মেনেই শুরু হয় দেবীর পূজার্চনা। পুজোর পরের দিন, অর্থাৎ, নিরঞ্জনের দিন সকালে মাকে দেওয়া হয় পান্তা ভাত, মাছের ঝোল । এরপর মাকে বরণ দিয়ে নিরঞ্জন করা হয়।
শান্তিপুর তো বটেই এছাড়াও বহু দূর দূরান্ত থেকে মানুষ আসেন এই পুজো দেখতে। ভক্তদের কাঁধে করেই নিরঞ্জনযাত্রায় নিয়ে যাওয়া হয় দেবী মহিষখাগীকে। মাকে পুনরাগমনের আহ্বান জানিয়ে হাজার হাজার ভক্ত খালি পায়ে নিরঞ্জনঘাট পর্যন্ত মায়ের শোভাযাত্রার সঙ্গে দৌড়াতে থাকেন।
(দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির টাটকা খবর, আপডেট এবং ভিডিয়ো পেতে ডাউনলোড-লাইক-ফলো-সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের App, Facebook, Whatsapp Channel, X (Twitter), Youtube, Instagram পেজ-চ্যানেল)