বিধান সরকার: সদ্য ফাঁসির সাজা শুনিয়েছে আদালত,তবু নির্বিকার বিশাল।আদালত থেকে বেরিয়ে প্রিজন ভ্যানে ওঠার সময় তেমনই উদ্ধত ভঙ্গিতে বলল,খুব তাড়াতাড়ি বেরবো। কে এই বিশাল দাস,যার ফাঁসির সাজা ঘোষনার পর আবির খেলা হয়।
২০২০ সালের ৩ রা নভেম্বর। দক্ষিণ ২৪ পরগনার জীবনতলা থানা এলাকায় গ্রামবাসীদের উপর গুলি চালিয়ে ধরা পরে গ্রামবাসীদের হাতে। তাকে চিনতে না পারায় লোকজন জানতে চায় কে এই দুষ্কৃতি। বিশাল বলে ইউটিউব খুলে দেখো আমি কে! বিশাল দাসের নাম আগেই হয়েছে অপরাধ জগতে। বিষ্ণু মালকে নৃশংস ভাবে খুন করে গা ঢাকা দিয়েছিল ক্যানিং এলাকায়। সেখানে ধরা পড়ে।
আরও পড়ুন- Bishnu Mal Murder Case: প্রথমে খুন, তারপর দেহ ছয় টুকরো করে…চুঁচুড়ার নারকীয় ঘটনায় ফাঁসির সাজা!
হুগলি চুঁচুড়া রবীন্দ্র নগর এলাকার কুখ্যাত দুষ্কৃতি টোটোন বিশ্বাসের হাত ধরে উত্থান চুঁচুড়া সেগুন বাগান এলাকার বাসিন্দা বিশালের।সেই টোটোন তাকে মেরে রেল লাইনে ফেলে রাখে একবার।প্রাণে বেঁচে এলাকা ছাড়ে বিশাল।আলাদা দল করতে শ্রীরামপুর শেওড়াফুলি বর্ধমানের দুষ্কৃতিদের জড়ো করে।
২০১৭ সালের ৩ রা মার্চ টোটোনের ডেরায় ঢুকে টোটোনের দাদা তারক বিশ্বাসকে গুলি বোমা মেরে খুন করে। ওই বছরই ৩ নভেম্বর বলাগড়ে গ্যাঙ ওয়ারে শুটু আউট হয়। তাতে গুলিবিদ্ধ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয় বিশাল। জেল থেকে ছাড়া পেতেই শুরু হয় তোলাবাজি।ভয় দেখিয়ে টাকা আদায়। টোটোনের সঙ্গে শত্রুতার জেরে এলাকায় লুকিয়ে ঢুকতে শুরু করে বিশাল। পুলিস সূত্রে খবর,একাধিক অপরাধের অভিযোগ রয়েছে বিভিন্ন থানায়।
বিষ্ণু মাল হত্যাকান্ডের পর পুলিশের হাতে আসে কুখ্যাত বিশাল। ২০২০ সালের নভেম্বর থেকে জেলেই রয়েছে। চুঁচুড়া ফার্স্ট ফাস্ট ট্রাক কোর্টে বিচার চলাকালীন নজির বিহীন নিরাপত্তা করতে হয়েছে পুলিশকে।কারন জেলে থেকেই স্বাক্ষীদের ভয় দেখানো প্রলোভন দেখিয়ে স্বাক্ষীকে বিরূপ করা,বিষ্ণুর পরিবারকে হুমকি দেওয়া এসব চলতে থাকে। তা সত্ত্বেও পুলিস ৩৪ জনের স্বাক্ষ নিতে পারে।
আরও পড়ুন- Viral Samosa in Bardhaman: সিঙাড়াপ্রেমীদের রসনা তৃপ্তিতেই ‘রোদ্দুর’ বর্ধমানের চাতরের অমলকান্তি…
চন্দননগর পুলিশ কমিশনার অমিত পি জাভালগি জানান,বিশালের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ ছিল। তবে বিষ্ণু মাল খুনের ঘটনায় তাকে গ্রেফতার করা,দেহাংশ উদ্ধার করা মামলার চার্জশিট দেওয়া এবং সরকারি আইনজীবী যেভাবে সওয়াল জবাব করেছেন তাতে এই সাজা প্রত্যাশিত ছিল।
এক নিরপরাধ যুবককে এভাবে খুন করায় চুঁচুড়া শহরবাসীকে নাড়িয়ে দেয়। সেই মামলার রায় কবে হবে সেই অপেক্ষা ছিল। যেদিনই মামলার দিন পড়েছে উই ওয়ান্ট জাস্টিস লেখা বিশালের ফাঁসি চাই লেখা পোস্টার ব্যানার নিয়ে আদালত চত্বরে জরো হন।তাই আজ আদালত ফাঁসির সাজা ঘোষনা করার পরই উল্লাস দেখা যায় বিষ্ণুর পরিবার ও প্রতিবেশীদের মধ্যে।হয় আবির খেলা।বিষ্ণু মা বাবা বোনের চোখে তখন জল।যে লড়াই তাড়া করেছেন ভয় ভীতিকে উপেক্ষা করে তার জয় হয়েছে।ছেলে বিচার পেয়েছে।
(দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির টাটকা খবর, আপডেট এবং ভিডিয়ো পেতে ডাউনলোড-লাইক-ফলো-সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের App, Facebook, Whatsapp Channel, X (Twitter), Youtube, Instagram পেজ-চ্যানেল)