রণজয় সিংহ: জীবনের ৩৬ বছর কেটে গেল জেলের চারদেওয়ালের মধ্যে। বহু প্রিয়জনকে হারিয়েছেন। সেই যন্ত্রণা বুকে নিয়ে মালদহ জেলা সংশোধনাগার থেকে বেরিয়ে এলেন ১০৪ বছরের বৃদ্ধ রসিক চন্দ্র মণ্ডল। সর্বোচ্চ আদালতের নির্দেশেই মুক্তি দেওয়া হয়েছে রসিককে। খুনের ঘটনায় দোষী সাব্যস্ত হওয়ায় প্রায় চার দশক বন্দি ছিলেন জেলের কুঠুরিতে।
আরও পড়ুন-বিয়ের আসরে উড়ল টাকা, বরকে ২.৫ কোটি, জুতো চুরির জন্য শ্যালিকাকে ১১ লাখ, দেখুন Video
টানা ৩৬ বছর জেলবন্দি দশার মধ্যে তাঁকে ছাড়ানোর জন্য় বারবার হাইকোর্টে আবেদন করেন তাঁর পরিবার। কিন্তু বারবারই তা নাকচ করে দেয় আদালত। শেষপর্যন্ত সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করেন রসিকবাবুর ছেলে। আর সেই সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশেই ছাড়া পেলেন রসিক। ইতিমধ্যে তাঁর জীবন থেকে হারিয়ে গিয়েছে ৩৬টি বসন্ত। গত ২৯ নভেম্বর রসিককে খালাস করার নির্দেশ জারি করে সুপ্রিম কোর্টে। সেই খবরে খুশির জোয়ার রসিকবাবুর পরিবারে।
প্রসঙ্গত, ৩৬ বছর আগে এক খুনের ঘটনায় নাম জড়ায় মালদহের মানিকচক গ্রাম পঞ্চায়েতের পশ্চিম নারায়ণপুর কলোনির বাসিন্দা রসিক চন্দ্র মন্ডল-সহ বেশ কয়েকজনের। ১৯৮৮ সালের ৮ নভেম্বরের ঘটনা। রাতের অন্ধকারে বাড়িতে ঢুকে রসিকবাবুর ভাই সুরেশ মন্ডলকে গুলি করে খুনের ঘটনা ঘটে। সেই সময় জমি বিবাদ নিয়ে দুই ভাইয়ের মধ্যে বচসা চলছিল। মৃতের বাড়ির দাবি দাদা রসিক মন্ডলই খুন করেছে তার ভাইকে। মানিকচক থানায় দাদা রসিক চন্দ্র মন্ডল সহ বেশ কয়েকজনের নামে খুনের অভিযোগে লিখিত অভিযোগ দায়ের হয়। অভিযুক্ত রসিক চন্দ্র মন্ডল ও তার সহযোগী মথুরাপুরের বাসিন্দা জিতেন মন্ডলকে গ্রেপ্তার করে মানিকচক থানার পুলিস। সেই সময় থেকে সংশোধনাগারের বন্দি দশা শুরু বৃদ্ধ রসিকবাবুর। মাঝে বেশ কয়েক বছর জামিনে মুক্তি পেলেও আবারো সংশোধনাগারে বন্দি দশা। তার স্থায়ী ঠিকানা হয়ে দাঁড়ায় মালদহ জেল সংশোধনাগার। ভারতীয় আইন অনুযায়ী একটি নির্দিষ্ট বয়সের পরে জেল বন্দিদের মুক্তি দেওয়া হয়। তবে রসিকবাবুর সঙ্গে এমনটা ঘটেনি। কিন্তু হাল ছাড়েনি রসিক বাবুর ছেলে ও পৌত্ররা। হাইকোর্ট কখনো সুপ্রিম কোর্টে বারবার আবেদন জানিয়েছেন জামিনের। শেষমেষ ফল এসেছে।
(দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির টাটকা খবর, আপডেট এবং ভিডিয়ো পেতে ডাউনলোড-লাইক-ফলো-সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের App, Facebook, Whatsapp Channel, X (Twitter), Youtube, Instagram পেজ-চ্যানেল)