শতাব্দীপ্রাচীন সমাধিক্ষেত্র! আজ আর কেউ মোমবাতি জ্বালতেও আসেন না এখানে, অথচ…।Graveyard in Rangamati, Britishers Graveyard, Rangamati Tea Garden, Christmas, No People in Graveyard


অরূপ বসাক: বড়দিনের উৎসবে মাতোয়ারা গোটা দেশ। আলোর সাজে সেজেছে বিভিন্ন রাস্তাঘাট, চা-বাগান, গির্জা। কিন্তু ব্যতিক্রম শুধু রাঙামাটি চা-বাগানের রাঙাকোট ডিভিশনের শতাব্দীপ্রাচীন সমাধিক্ষেত্র। বড়দিনের আনন্দের মধ্যেও জনশূন্য এবং অন্ধকারে ডুবে থাকে এক এলাকা। বছরের এই বিশেষ দিনে সেখানে মোমবাতি জ্বালাতেও কেউ যান না।

আরও পড়ুন: Kazakhstan Plane Crash: বীভৎস বড়দিন! কাজাকাস্তানে ভেঙে পড়ল বিমান! রানওয়ে যেন মৃত্যু-উপত্যকা…

১৮৬৬ সালে রাঙামাটি চা-বাগান প্রতিষ্ঠিত হয়। একইভাবে পরাধীন ভারতে ডুয়ার্সের বিভিন্ন প্রান্তে প্রচুর চা-বাগান বানিয়েছিলেন ব্রিটিশরা। ১৮৭৫ থেকে ১৮৮৫ সালের মাঝামাঝি রাঙামাটি চা বাগানের চাইবাসা লাইনে ৫ বিঘা জমিতে তৈরি হয়েছিল এই ব্রিটিশ সমাধিক্ষেত্র। বাগানের সাহেব মালিক, ম্যানেজার ও তাঁদের আত্মীয়দের অনেকেরই মৃত্যু হয়েছিল ডুয়ার্সের এই ছোট্ট জনপদেই। আগে এই এলাকাটি একদিকে ছিল হিংস্র জীবজন্তুর বাসস্থান ও ম্যালেরিয়া, কালাজ্বর ইত্যাদি রোগের আঁতুড়ঘর। তৎকালীন ব্রিটিশ ভারতের রাঙামাটি, সাতখাইয়া, বাগরাকোট, কাঠামবাড়ি, কৈলাসপুর, নিদাম, গুরুজংঝোরা, বড়দিঘি, সামসিং-সহ পশ্চিম ডুয়ার্সের বিভিন্ন চা-বাগানের ব্রিটিশদের দেহ সমাধিস্থ করা হয়েছিল এই চাইবাসা সমাধিক্ষেত্রেই।

ওই এলাকায় প্রায় একশোর বেশি সমাধি থাকলেও অধিকাংশই এখন নিশ্চিহ্ন হতে চলেছে বলে দাবি স্থানীয়দের। তবে এটির সংরক্ষণ করা গেলে মালবাজারের পর্যটন-মানচিত্রে অনায়াসে স্থান পেতে পারে এই ঐতিহাসিক সমাধিক্ষেত্রটি। ডুয়ার্সের বিভিন্ন চা-বাগানের কর্মীদের সমাধি রয়েছে এখানে। বহু ইউরোপীয়র মরদেহ শায়িত আছে এখানে।

আরও পড়ুন: Miracles of Jesus: থামিয়ে দিলেন ঝড়, মৃতকে দিলেন প্রাণ! বাকরোধ করা অজস্র অলৌকিকতায় যিশু আজও স্বর্গীয় রহস্য…

স্থানীয় বাসিন্দা বিশ্বজিৎ নন্দী বলেন, ‘এখন এখানে কেউ আসে না। বড়দিনে মোমবাতির আলো পর্যন্ত চোখে পড়ে না। আগে একজন রাতে পাহারা দিলেও, এখন তা-ও থাকেন না। আগে এই দিনে বিদেশ থেকে বহু পর্যটকেরা এখানে ঘুরতে আসতেন। সমাধিতে মোমবাতি জ্বালাতেন। এখন আর এখানে কেউ আসেন না। এলাকায় নেই একটিও সীমানা-প্রাচীর। রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে প্রতিদিন একটু একটু করে নষ্ট হচ্ছে ইতিহাসের এই সাক্ষী এই সমাধিতল। নেচার অ্যান্ড অ্যাডভেঞ্চার সোসাইটির সম্পাদক আশিক আলী বলেন, একসময় এখানে প্রচুর ভেষজ উদ্ভিদের গাছ ছিল। সবই ধ্বংসের মুখে। দিনে-দুপুরে সব চুরি হয়ে যাচ্ছে। দেখার কেউ নেই।  ইতিহাসপ্রেমী এবং পর্যটক সুদীপ দাস বলেন, রাজ্য সরকারের তরফে এই সমাধিক্ষেত্রকে হেরিটেজ সাইট ঘোষণা করা হোক। সমাধিক্ষেত্রটিকে হেরিটেজ সাইট ঘোষণা করা হলে সেখানে ফের আসবেন ব্রিটিশেরা। তাঁরা তাঁদের মৃত আত্মীয়পরিজনদের স্মরণ করবেন এখানে। তখন ফের ডুয়ার্সের নাম উজ্জ্বল হবে। একটা ভালো টুরিজম স্পষ্টও হয়ে উঠবে এটি। এখন থেকে রক্ষণাবেক্ষণ শুরু করলেও সমাধিক্ষেত্রটিকে বাঁচানো যাবে, না হলে এটি এক সময় নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে, চুরি হয়ে যাবে এই সমাধিক্ষেত্রের মুল্যবান পাথর এবং স্ট্যাচুও।

(দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির টাটকা খবর, আপডেট এবং ভিডিয়ো পেতে ডাউনলোড-লাইক-ফলো-সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের AppFacebookWhatsapp ChannelX (Twitter)YoutubeInstagram পেজ-চ্যানেল)

 





Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *