অয়ন ঘোষাল: প্রতিদিনের মতো প্রাতঃভ্রমণে গিয়ে একাধিক বিষয়ে নিজের বক্তব্য জানান দিলীপ ঘোষ। পাথরপ্রতিমা বিস্ফোরণ থেকে শুরু করে রাম নবমী নিয়েও কথা বলেন তিনি।
পাথরপ্রতিমা বিস্ফোরণ
যতবার বিস্ফোরণ হয় ততবার প্রশ্ন ওঠে বাজি না অন্য কিছু। নৈহাটিতে বিস্ফোরণ হয়েছিল। গঙ্গার অপর প্রান্তের হুগলির কাচ ভেঙে গেছিল। আমি নিজে পিংলা গেছি। বর্ধমান গেছি। শেষ পর্যন্ত কতজন গ্রেফতার হয়? কতজন সাজা পায়? কেউ জানে না। আমি এগরাতে ভয়ঙ্কর দৃশ্য দেখেছি। কোনো ক্রিয়া প্রতিক্রিয়া নেই। কিছুদিনের মধ্যে মানুষ ভুলে যায়। কিছু গরীব মানুষ যারা এইসব কারখানায় কাজ করেন তারা নিজেরাও অনেকসময় জানেন না কি বানাচ্ছেন। আদৌ এই সরকার চিন্তিত? এটা অন্তর্ঘাত কিনা কোনোদিন কেউ ভেবে দেখেছে? কোথায় তৈরি হচ্ছে? কোথায় যাচ্ছে? আগে আমরা শুনেছিলাম এই রাজ্যে তৈরি জিনিস অন্য রাজ্যে যেমন ঝাড়খণ্ড ওড়িশা যাচ্ছে। এমনকি বাংলাদেশেও যায়। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই বিষয়গুলো কখনও আলোচনা করেন না। উনি শুধু হিন্দু মুসলমান করেন। মানুষের প্রাণ যাচ্ছে সেটা নিয়ে উনি কিছু বলেন না। করেন না।
Zee ২৪ ঘণ্টার সব খবরের আপডেটে চোখ রাখুন। ফলো করুন Google News
NIA প্রয়োজন?
আমরা দাবি করছি NIA হোক। কারণ এই সরকার চায়না। ওরা চায় এই ধরনের ঘটনা ঘটুক। মানুষের মনে আতঙ্ক তৈরি হোক। ভোটের আগে এরকম ভয়ের পরিবেশ তৈরি হোক। ভোটারদের প্রভাবিত করে। কেউ যেন আতঙ্কে বাড়ি থেকে না বেরোয়। জায়গায় জায়গায় দাঙ্গা বাঁধানো হচ্ছে। রাজ্যে শান্তিতে থাকার দিন শেষ হয়ে গেছে। আমরা কেন্দ্রীয় এজেন্সির হস্তক্ষেপ চাইছি।
এগরায় অভিযুক্ত ওড়িশা পালানোর চেষ্টা করেছিল
বাইকে চেপে বর্ডার পেরোনোর চেষ্টা করেছিলেন উনি। কেউ কেউ বাংলাদেশ পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। পাথরপ্রতিমার কোন ভিতরে প্রত্যন্ত এলাকা। সেখানে এই ধরনের কারখানা কেন? বজবজ বা অন্যন্য এলাকায় তো বাজি ঘরে ঘরে তৈরি হয়। সেখানে এরকম ঘটনা কম ঘটে। কিন্তু এইসব প্রত্যন্ত এলাকায় এরকম ঘটনা ঘটে কেন? রহস্যটা কি?
বিধায়ক বলছেন লাইসেন্স ছিল
কিসের লাইসেন্স ছিল? এই ধরনের বিস্ফোরক তৈরির লাইসেন্স ছিল? এটাই তদন্ত হওয়া উচিত। ওই পাওয়ারফুল বিস্ফোরক আসলে কি ছিল? সেখানে কি অন্য কোনো কাজ হচ্ছিল?
বাজি ছিল কি আদৌ?
এই বাজি তো বাইরে ফাটানো হয়। তখন তো এরকম বিস্ফোরণ হয়না। কিন্তু এখানে এমন বিস্ফোরণ হল কেন? দেহ ছিন্নভিন্ন হয়ে গেছিল পিংলায়। আমি নিজে গিয়ে দেখেছি। বাড়ি উড়ে গেছে। পাকা বাড়ি। এতো পাওয়ারফুল বাজি হয়?
আপনারা কি যাবেন?
সরকারের যাওয়া উচিত। প্রশাসনের যাওয়া উচিত। আমরাও যেতে চাই। সরকার যেতে দেবেনা। কারণ সরকার সমস্ত তথ্য লোপাট করতে চায়। অপরাধীদের গা ঢাকা দেওয়ার সুযোগ দিতে চায়। ওখান থেকে নৌকা করে বাংলাদেশ চলে যায় অনেকে।
কলকাতা জুড়ে রাম নবমী পোস্টার
এই ধরনের আয়োজন বাড়ছে। হিন্দু সমাজ মোঘল পাঠান ব্রিটিশ দাসত্বে ছিল। হীনমন্যতায় ভুগছিল। দেশ স্বাধীন হওয়ার পরেও হিন্দুদের ওপর অত্যাচার চলছিল। রাম নবমীর আগেই দাঙ্গা বাঁধানোর চেষ্টা হচ্ছে ভয় পাওয়ানোর চেষ্টা হচ্ছে। এবারের কুম্ভ দেখুন। লক্ষ লক্ষ মানুষ গেছে। মুসলমান সমাজ যদি ঈদ মহরম পালন করতে পারে, তাতে সবাই অংশ নিতে পারে, তাহলে হিন্দুদের সবথেকে বড় উৎসব রাম নবমীতে সবার অংশগ্রহণ করা উচিত। যারা ভয় দেখাচ্ছেন তাদের থেকে সবার আলাদা থাকা দরকার।
আরও পড়ুন- Newtown Murder Case: CCTV ফুটেজ দেখে তাজ্জব পুলিস, নিউটাউন খুনে চাঞ্চল্যকর মোড়…
অনুমতি আছে পুলিশের?
সবকিছুর পারমিশন লাগে নাকি? কার বাড়িতে কালীপুজো হবে। পারমিশন লাগবে? কার বাড়িতে বিয়ে হবে। পারমিশন লাগবে? এটা কি মোঘল সাম্রাজ্য চলছে? পুলিসকে ইনফর্ম করা হয়েছে। পুলিশের কাজ বিষয়টা যাতে নির্বিঘে হয় সেটা দেখা। পুজো হবে কিনা, শোভাযাত্রা হবে কিনা, সেটা যারা আসবেন তারা ঠিক করবেন।
উত্তরবঙ্গের ১০ বিধায়কের দিল্লিতে বৈঠক
খুব পুরোনো ইস্যু। আমাদের পুরনো লোকেরা কামতাপুরী এবং গ্রেটার কোচবিহার আন্দোলন থেকে উঠে এসেছেন। মূল কারণ অনুন্নয়ন। একসময় সিপিএম ঘাঁটি ছিল উত্তরবঙ্গ। এখন বিজেপির ঘাঁটি। মানুষের ধারণা বিজেপি তাদের জন্য কিছু করবে। তাই তারা আমাদের ভোট দেয়। ওখানে সমস্যা সমাধানের চেষ্টা কেন্দ্রীয় সরকার সাধ্যমতো করেছে। হাইওয়ে দিয়েছে। ট্রেন দিয়েছে। বন্দে ভারত দিয়েছে। মেডিক্যাল কলেজ দিয়েছে। এইমস দিয়েছে। হাইকোর্ট বেঞ্চ দিয়েছে। বাকি উন্নয়ন অর্থাৎ শিক্ষা থেকে স্বাস্থ্য, সেটা তো রাজ্যকে দিতে হবে। ওরা ঠিক করেছে দেবেই না। ওখানকার জনপ্রতিনিধিদের দায়িত্ব এই সমস্যা দূর করা। টাকা শ্যাংশন, কিন্তু রাস্তা হয়না। এটা কতদিন চলতে পারে?
আরও পড়ুন- Weather Update: বুধবার থেকেই ধেয়ে আসছে বৃষ্টি, সঙ্গে দমকা ঝোড়ো হাওয়া! নিমেষে মিটবে দাবদাহ…
রেড রোড থেকে মুখ্যমন্ত্রীর বার্তা
কালকের ভাষণে সম্প্রীতি কোথায় ছিল আমি জানিনা। দেখে নেব, করে নেব, আমি একাই একশো, এটা কোন ধরনের সম্প্রীতির বার্তা? সম্প্রীতি সেটাই যেখানে উনি বলতেন আসুন সবাই মিলে একসঙ্গে থাকি। উনি উস্কাচ্ছেন। এটা সম্প্রীতি নয়। উনি জানেন সম্প্রীতি না ভাঙলে উনি ভোটে জিততে পারবেন না। পশ্চিমবঙ্গে তৃণমূল আসার পরেই বিজেপি বেড়েছে। উনি যাই বলুন। সিপিএমের অত্যাচারে তৃণমূল এসেছিল। তৃণমূলের অত্যাচারে লোকে বিজেপির দিকে আসছে। ভাষণ দিলে রাজনীতির মঞ্চে দিক। পবিত্র ঈদের মঞ্চ অপবিত্র করে কেন উনি রাজনীতির ভাষণ দিচ্ছেন? আমি মুসলমানদের বলব যারা ওনার তাবেদারি করছে তাদের থেকে নিজেকে বিচ্ছিন্ন করুন। ইসলাম যদি শান্তির ধর্ম হয় তাহলে শান্তির কথা হোক। ঈদ কে অপবিত্র করার অধিকার কে দিয়েছে?
কেন্দ্রের অনেক সূযোগ সুবিধা মুসলিমরা পেয়েছে
সাচার কমিটির রিপোর্টে বলা হয়েছে দেশের মধ্যে পশ্চিমবঙ্গের মুসলিম সবথেকে পিছিয়ে। মানসিক সামাজিক আর্থিক ভাবে পিছিয়ে আছে। এখানে যারা শাসন করেছে তারা বরাবরই মুসলমানদের নিয়ে রাজনীতি করেছে। উন্নয়ন করেনি। পাশেই একটা গ্রাম। ঈদে লাইট লাগিয়েছে। নিচের রাস্তা ভাঙা। মুসলিম এলাকায় রাস্তা হয়না কেন? উন্নয়ন হয়না কেন? তৃণমূল জানে, আমি কাজ করি বা না করি মুসলমান আমাকে ভোট দেবে। এটা ব্লক ভোট। মুসলমানরা যদি বিজেপির ভয়ে তৃণমূল কে ভোট দেয় তাহলে এই হবে। বিজেপিকে ভয় পাওয়ার কোনো কারণ নেই। বিজেপি তোমাদের ভোট চায় না। কিন্তু তোমাদের সমাজের কথা ভেবে শিক্ষিত মানুষ অন্য জায়গায় চলে যাচ্ছে। একটা বড় জনসংখ্যা এই ভাবে পিছিয়ে থাকছে। সে আপনি মুখে যতই এগিয়ে বাংলা বলে চেচান। উত্তরপ্রদেশে দেখুন, যোগী বলেছেন দেশে মুসলমানদের জন্য সব থেকে নিরাপদ রাজ্য উত্তরপ্রদেশে। সেখানে তারা দিব্যি আছে। উন্নয়নের স্বাদ পাচ্ছে। এখানে ঈদের সময় তাদের ভরকাবেন তারা হিন্দু পাড়ায় গিয়ে অত্যাচার করবে!
(দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির টাটকা খবর, আপডেট এবং ভিডিয়ো পেতে ডাউনলোড-লাইক-ফলো-সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের App, Facebook, Whatsapp Channel, X (Twitter), Youtube, Instagram পেজ-চ্যানেল)