শ্রীকান্ত ঠাকুর: শতাব্দী প্রাচীন রামনবমী মেলা ঘিরে উৎসবের আমেজ দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার বালুরঘাটে। স্থানীয়ভাবে ‘ডাবের মেলা’ নামে পরিচিত এই ঐতিহ্যবাহী মেলার সূচনা হয়েছিল প্রায় একশো বছর আগে। কথিত আছে, ওপার বাংলা থেকে রামের একটি মূর্তি এনে এক সন্ন্যাসী এই মন্দির প্রতিষ্ঠা করেন। সেই থেকে প্রতি বছর রামনবমী উপলক্ষে এই মেলা ও পূজোর আয়োজন হয়ে আসছে।
Zee ২৪ ঘণ্টার সব খবরের আপডেটে চোখ রাখুন। ফলো করুন Google News
রামনবমী উপলক্ষে এদিন ভোরবেলা থেকেই আত্রেয়ী নদীতে পুণ্যস্নান করতে হাজির হন হাজার হাজার ভক্ত। স্নান সেরে তাঁরা রামমন্দিরে পুজো দিতে ভিড় জমান। প্রত্যন্ত গ্রাম থেকে আগত সাধারণ মানুষ নিজের সাধ্য অনুযায়ী চাল, ডাল, কাঁচা সবজি এবং ডাব উৎসর্গ করেন ভগবান রামের উদ্দেশ্যে। এই উৎসর্গপ্রথাই মেলার ‘ডাবের মেলা’ নামটির পেছনের কারণ বলে অনেকে মনে করেন।
এবারও তার ব্যতিক্রম হয়নি। সকাল থেকেই জনসমুদ্র উপচে পড়েছে আত্রেয়ী নদীর তীরে এবং রামমন্দির প্রাঙ্গণে। পুলিস এবং প্রশাসনের তরফ থেকে নিরাপত্তা ব্যবস্থা করা হলেও বিপুল সংখ্যক ভক্তের উপস্থিতিতে দুর্ঘটনার আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন অনেকে। মন্দির প্রাঙ্গণে প্রবেশ এবং নদীতে স্নানের সময় নিয়ন্ত্রণে রাখতে হিমশিম খেতে হচ্ছে প্রশাসনকে।
এই ঐতিহ্যবাহী মেলার একদিকে যেমন ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্য বজায় রয়েছে, তেমনি অন্য দিকে, রাজ্য-রাজনীতিতেও রামনবমী এক গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু হয়ে উঠেছে। যখন রাজ্য জুড়ে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল রামনবমীকে কেন্দ্র করে নিজেদের শক্তি প্রদর্শনে রাস্তায় নামছে, তখন বালুরঘাটের সাধারণ মানুষ রাজনীতি থেকে দূরে থেকে কেবলমাত্র ভক্তি ও ঐতিহ্যের মধ্যে সীমাবদ্ধ রেখেছেন এই উৎসবকে।
মেলার রঙ, মানুষের বিশ্বাস আর ধর্মীয় ঐতিহ্য মিলিয়ে বালুরঘাটের রামনবমী এখন শুধুমাত্র একটি ধর্মীয় অনুষ্ঠান নয়, বরং মানুষের আবেগ ও সামাজিক সংস্কৃতির অবিচ্ছেদ্য অংশে পরিণত হয়েছে। প্রশাসনের কড়া নজরদারির মধ্যে দিয়ে এবারের মেলা শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন হবে বলেই আশা সকলের।
(দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির টাটকা খবর, আপডেট এবং ভিডিয়ো পেতে ডাউনলোড-লাইক-ফলো-সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের App, Facebook, Whatsapp Channel, X (Twitter), Youtube, Instagram পেজ-চ্যানেল)