অয়ন ঘোষাল: আজ, শুক্রবার বিভিন্ন বিষয়ে মন্তব্য করলেন বিজেপি নেতা দিলীপ ঘোষ। তবে তাঁর কথার সিংহভাগ জুড়ে থাকল কাশ্মীর প্রসঙ্গই। বললেন, কাশ্মীরে পাথর-ছোঁড়া মানুষ আজ প্রাণপণে ইনসানিয়ত দেখাচ্ছে! আর কী বললেন?
দিলীপ ঘোষ বললেন, ‘প্রায় ৬ বছর হতে চলল ৩৭০ প্রত্যাহার হয়েছে। আমি তার মধ্যে নিজে দুবার ঘুরে এসেছি– একবার লে-লাদাখ গিয়েছি। তারপর অমরনাথ গিয়েছি। আমি নিজে দেখেছি, কী বিপুল মানুষের ঢল। কোনো সমস্যা নেই। যাঁরা খুব আগ্রহ দেখিয়েছিলেন নির্বাচন দিন, কেন্দ্র নির্বাচনের ব্যবস্থা করে দিয়েছে সেখানে। কিন্তু এখন সেখানে কেন গুলি চলছে, তার জবাব নির্বাচিত সরকারকেই দিতে হবে। এই নির্বাচিত সরকারের আমলে এতবড় বিপর্যয় হল কেন? কেন গোটা দেশ গোটা বিশ্ব কেঁপে গিয়েছে?’
দিলীপ আরও যোগ করেন, ‘কেন্দ্র সরকার সঙ্গে সঙ্গে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে পাঠিয়েছে। তোমরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারোনি। প্রতি বছর প্রায় দেড় কোটি পর্যটক কেন্দ্র সরকারের আশ্বাসে যাচ্ছিলেন। স্থানীয় মানুষ এখন হাহাকার করছেন। বলছেন, আমরা ছাড়ব না। হোটেল খালি হয়ে গিয়েছে। এবার স্থানীয় মানুষ খাবেন কী? ওঁরা ৪০ বছর সন্ত্রাসবাদ দেখেছেন। সেই সময়টা ওঁরা কাটিয়ে উঠেছেন। তবে আমার মনে হয়, এই আতঙ্ক বেশিদিন থাকবে না। কারণ সাপের মাথা মোদী থেঁতলে দিয়েছেন। মাঝে মাঝে শুধু লেজটা নড়ে উঠছে।’
ছন্দে ফেরা জম্মু-কাশ্মীরের যুবসমাজকে বিপথে চালিত করতেই কি ফের সন্ত্রাসবাদের জিগির?
‘লোকের হাতে কাজ আছে। সবার হাতে পয়সা আছে। সবাই ভালো আছে– এটা সন্ত্রাসবাদীরা মেনে নিতে পারছিল না। কেউ হাতে বন্দুক তুলে নিতে রাজি হচ্ছিল না। তাই এইভাবে পর্যটকদের ভয় দেখিয়ে তাঁদের আসা বন্ধ করে আবার হাতে বন্দুক তুলে দেওয়ার চেষ্টা। পাথর গ্রেনেড তুলে দেশবিরোধী কাজ করিয়ে নেওয়ার চেষ্টা। আমার মনে হয়, ওখানে কয়েকজন বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতা এইভাবে খুব সুবিধা করতে পারবেন না। গোটা দেশ সঙ্গে আছে। ওখানে মানুষ ঝাঁপিয়ে পড়েছে। সরকার আগে সার্জিক্যাল স্ট্রাইক করেছিল। আমার ধারনা, সরকার আবার সেরকমই কিছু করবে। মোদীর উপর ভরসা রাখা উচিত। যাঁরা চলে গেলেন, তাঁদের জন্য শান্তিকামনা করব। কিন্তু এখন গোটা দেশ একসঙ্গে লড়বে।’
শুভেন্দু অধিকারীর স্লিপ অফ টাং। আদালতে মামলা-প্রসঙ্গে
‘মানুষ আবেগের বশে এরকম বলে ফেলেন। আমাদের মুখ্যমন্ত্রী মাঝে মাঝেই এরকম ভুল বলেন। প্রধানমন্ত্রীকে নিয়েও ট্রোল হয়। আসলে ওঁরা এখন কোণঠাসা হয়ে গিয়ে জঙ্গিদের সঙ্গে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছেন। এই ধরনের ছেঁদো রাজনীতি না করাই ভালো।’
বাঙালি বিএসএফ জওয়ান সীমান্ত পেরিয়ে বিপাকে
‘এরকম ঘটনা বহুবার হয়েছে। বাংলাদেশের বিডিআর এখানে ঢুকে বিএসএফকে ছিনিয়ে নিয়ে গিয়েছিল– সেইদিন চলে গিয়েছে। অভিনন্দন বর্তমান সসম্মানে ফিরে এসেছিলেন। ইনিও ফিরে আসবেন। ভগবানের উপর ভরসা রাখুন। সরকারের উপর ভরসা রাখুন।’
ওদিকে জল বন্ধ। এদিকে আরেক দেশের ক্ষেত্রে কি জল খুলে দেওয়ার দরকার আছে?
‘ছোট ছোট দেশ। দুর্বলতা এবং দারিদ্র্যে পূর্ণ। সেখানে কিছু মানুষ এই দুর্বলতাকে কাজে লাগাচ্ছে। আমাদের সরকার সংযম রেখেছে। কয়েকটা লোকের জন্য ২০ কোটি মানুষের দেশকে সাজা দেওয়া যায় না। তারা আমাদের প্রতিবেশী। আমাদের ভাই। একই শরীর থেকে আমাদের জন্ম। সেটা আমরা ভুলিনি। ওখানে লোক বুঝতে শুরু করেছে, চক্রান্ত করে ওখানে সরকার ফেলা হয়েছে। মানুষ জাগছে। আমার ধারণা, বাংলাদেশে শান্তি ফিরবে। পাকিস্তানকে শিখিয়েছি। এবার বাংলাদেশকেও বুঝতে হবে, ভারতের পাশে থাকলেই তারা শান্তিতে থাকবে।’
জঙ্গিদের খোঁজ দিলে ২০ লাখ!
‘এটা সরকারের কাজ। মাথার দাম ঘোষণা দীর্ঘদিন ধরেই চলে। এরা জঙ্গল দিয়ে এসেছে, কোনো গ্রাম দিয়ে এসেছে। কেউ না কেউ তো অবশ্যই সহযোগিতা করেছে। তারা সামনে আসবেই। এখানে বিষ থাকলে ওপার থেকে তো আসবেই। সরকার চেষ্টা করছে, যাতে দ্বিতীয়বার এই ঘটনা না ঘটে। কাশ্মীর ভূস্বর্গ। আমি নিজে উপলন্ধি করেছি। গোটা বিশ্ব ভারতের পাশে আছে। এটাই বোধহয় কাশ্মীরে শেষ হিংসার ঘটনা।’
(দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির টাটকা খবর, আপডেট এবং ভিডিয়ো পেতে ডাউনলোড-লাইক-ফলো-সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের App, Facebook, Whatsapp Channel, X (Twitter), Youtube, Instagram পেজ-চ্যানেল)