Mukul Dev: পাইলট থেকে অভিনেতা, বলিউডে রাজনীতির শিকার! বাবা-মাকে হারিয়ে অবশেষে…


জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: সিনেমার মঞ্চ ছাড়লেন মুকুল দেব (Mukul Dev) । ৫৪ বছর বয়সে অভিনেতার প্রয়াণে ইন্ডাস্ট্রিতে শোকের ছায়া।‘ইয়ামলা পাগলা দিওয়ানা’, ‘সন অফ সরদার’, ‘আর… রাজকুমার’, এবং ‘জয় হো!’-র মতো সিনেমায় মনে রাখার মতো অভিনয় করা মুকুল দেব আর নেই। ৫৪ বছর বয়সে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। ভারতীয় সিনেমায় তাঁর সফর ছিল এক অসাধারণ গল্প – আকাঙ্ক্ষা, লড়াই, এবং নিজের সংস্কৃতির শিকড়ে ফিরে যাওয়ার এক গল্প।

পাইলট থেকে অভিনয় জগতে

অভিনয়ের কেরিয়ার শুরু করার আগে মুকুল ছিলেন একজন প্রশিক্ষিত কমার্শিয়াল পাইলট। তিনি ইন্দিরা গান্ধী ইনস্টিটিউট অফ অ্যারোনটিক্স থেকে প্রশিক্ষণ নেন এবং তাঁর ব্যাচে চতুর্থ স্থান অর্জন করেন। কিন্তু তাঁর মন পড়েছিল অন্যখানে। অষ্টম শ্রেণিতে পড়াকালীন, দূরদর্শনের এক অনুষ্ঠানে মাইকেল জ্যাকসনের সাজে নাচ করে নিজের প্রথম পারিশ্রমিক পান – তখনই বিনোদন জগতের প্রতি তাঁর ভালোবাসা গড়ে ওঠে।

আরও পড়ুন- Mukul Dev Death: ‘নেশায় ডুবে থাকত, একমাত্র মেয়েও চলে গেছে…’, অবসাদেই অকাল প্রয়াণ মুকুলের!

ছোটপর্দা থেকে বড়পর্দা

১৯৯৬ সালে মুকুল টেলিভিশনে ‘মুমকিন’ ধারাবাহিকে বিজয় পান্ডের চরিত্রে অভিনয়ের মাধ্যমে আত্মপ্রকাশ করেন। তিনি দূরদর্শনের কমেডি শো ‘এক সে বাড়কর এক’-এও অভিনয় করেন। একই বছরে তিনি বলিউডে পা রাখেন ‘দস্তক’ ছবির মাধ্যমে, যেখানে সদ্য মিস ইউনিভার্স হওয়া সুস্মিতা সেনের সঙ্গে কাজ করেন। এ ছবিতে তিনি এসিপি রোহিত মালহোত্রার ভূমিকায় অভিনয় করেন। এই সিনেমা থেকেই তাঁর চলচ্চিত্র জীবনের শুরু।

বলিউডে বাধা, টিভিতে নতুন জীবন

যদিও বলিউডে মেইনস্ট্রিম হিরোর জায়গা করে নেওয়া তাঁর পক্ষে কঠিন ছিল। ‘ক্যা কহেনা’ ছবিতে তাঁকে নেয়া হলেও পরে সইফ আলি খান দিয়ে রিপ্লেস করা হয়, যার জন্য প্রযোজক রমেশ তৌরানী তাঁকে বাদ দেন। ২০০০ সালের পর তিনি আবার টেলিভিশনের দিকে ফিরে আসেন – ‘কাহানি ঘর ঘর কি’, ‘প্যায়ার জিন্দেগি হ্যায়’-এর মতো সিরিয়ালে তাঁর কাজ প্রশংসিত হয়। তিনি নিজেই বলেন, “টিভি আমার ক্যারিয়ারকে আবার জীবিত করেছিল।”

আরও পড়ুন- Mukul Dev Death: মাত্র ৫৪ বছরেই সব শেষ! প্রয়াত অভিনেতা মুকুল দেব, শোকস্তব্ধ সিনেদুনিয়া…

আঞ্চলিক সিনেমায় উজ্জ্বল ভূমিকা

তিনি পঞ্জাবি, বাংলা ও তেলুগু ছবিতেও অভিনয় করেন। বিশেষ করে পাঞ্জাবি ছবিতে ভালো সাফল্য পান। নিজেই বলেছিলেন, “আমি এই (পাঞ্জাবি) মাটির সন্তান। আমার বাবার গ্রাম জলন্ধরের কাছে, আর আমি পাতিয়ালায় ৪-৫ বছর পাইলট হিসেবে প্রশিক্ষণ নিয়েছি – ভাষা কোনো সমস্যা ছিল না।”

লেখালেখির জগতে পা

অনেকেই জানেন না যে মুকুল একজন লেখকও ছিলেন। তিনি হংসল মেহতার ছবি ‘ওমের্তা’-র সহ-চিত্রনাট্য লিখেছিলেন। তিনি বলেছিলেন, “আমি একজন অভিনেতা, এখন লেখাও করি – লেখার প্রতি ভালোবাসা এসেছে পড়ার অভ্যাস থেকে।”

ব্যক্তিগত জীবন 

প্রায়শই তাঁকে তাঁর বড় ভাই রাহুল দেব নিয়ে প্রশ্ন করা হতো। উত্তরে তিনি বলতেন, “রাহুল আমার দাদা। ইন্ডাস্ট্রিতে আমার পাশে দাঁড়ানোর মতো একজন রয়েছে – এটা ভালো লাগে।” মেয়ের সঙ্গে থাকতেন মুকুল কিন্তু কিছুদিন আগে মেয়েও চলে যান। সম্প্রতি একাই থাকতেন। 

আরও পড়ুন- Purnam Shaw: ‘ঘরে চোখ বেঁধে ফেলে রেখেছিল, খেতেও দিত না, অমানবিক অত্যাচার করেছে পাকিস্তান’, দাবি পূর্ণমের বাবার…

শেষ বিদায়

মুকুল দেবের মৃত্যুতে বলিউড ও টিভি জগত শোকাহত। তাঁর ভাই রাহুল দেব ইনস্টাগ্রামে একটি ছবি শেয়ার করে জানান, “আমাদের ভাই মুকুল দেব গত রাতে শান্তভাবে দিল্লিতে প্রয়াত হয়েছেন। তিনি তাঁর মেয়ে সিয়া দেব-কে রেখে গেছেন। আমাদের পরিবারে এখন গভীর শোক বিরাজ করছে।” শনিবার বিকেল ৫টায় তাঁর শেষকৃত্য অনুষ্ঠিত হবে। মুকুল দেব তাঁর জীবনের নানা রকম অভিজ্ঞতা, চরিত্র ও সংগ্রামের মধ্য দিয়ে প্রমাণ করে গেছেন – সাফল্য শুধু গ্ল্যামার নয়, বরং আত্মিক সৃষ্টিশীলতাও।

(দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির টাটকা খবর, আপডেট এবং ভিডিয়ো পেতে ডাউনলোড-লাইক-ফলো-সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের AppFacebookWhatsapp ChannelX (Twitter)YoutubeInstagram পেজ-চ্যানেল)





Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *