জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: পতঞ্জলি বিশ্বাস করে, সত্যিকারের উন্নয়ন তখনই সম্ভব যখন আমরা নিজেদের সঙ্গে সঙ্গে পরিবেশেরও যত্ন নিই। তাদের লক্ষ্য শুধু ব্যবসা করা নয়, বরং এমন সমাধান তৈরি করা যা পৃথিবী এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্মের উপকারে আসে। পরিবেশের ক্ষতি ঠেকাতে পতঞ্জলি বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছে—সবুজ উদ্যোগকে উৎসাহিত করা, জৈব চাষে জোর দেওয়া এবং পরিবেশবান্ধব পদ্ধতি গ্রহণ করা তার মধ্যে অন্যতম। পতঞ্জলির কাছে টেকসই উন্নয়ন শুধু একটি কর্পোরেট দায়িত্ব নয়, বরং তাদের নীতির একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। তারা এমন একটি পৃথিবী গড়ে তুলতে চায় যেখানে মানুষ প্রকৃতির সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে বাস করে এবং আয়ুর্বেদ ও প্রাকৃতিক পদ্ধতির মাধ্যমে সুস্থতা অর্জন করে।
আরও পড়ুন: Patanjali’s Packaging: পতঞ্জলির প্যাকেজিং মডেল কেন FMCG ইন্ডাস্ট্রির জন্য একটি বড় উদাহরণ?
জৈব চাষ ও প্রাকৃতিক পদ্ধতিতে স্বাস্থ্য ও পরিবেশের উন্নতি
পতঞ্জলি আয়ুর্বেদ তাদের জৈব পণ্য ও প্রাকৃতিক চাষের পদ্ধতির মাধ্যমে শুধু ভোক্তাদের স্বাস্থ্য ভালো করেছে তা নয়, পরিবেশকেও রক্ষা করেছে। রাসায়নিকমুক্ত চাষের প্রচার, কৃষকদের প্রশিক্ষণ দেওয়া এবং পরিবেশবান্ধব মোড়ক ব্যবহার করে কোম্পানিটি একটি স্বাস্থ্যকর পৃথিবী গড়ে তোলার চেষ্টা করছে।
রাসায়নিক চাষ থেকে দূরে সরে আসা
পতঞ্জলি এখন জৈব চাষকে গ্রহণ করেছে, যেখানে রাসায়নিক সার ও কীটনাশকের ব্যবহার অনেক কমানো হয়েছে। এতে মাটির গুণমান উন্নত হচ্ছে এবং পানির দূষণও কমছে। এখন কৃষকরা গরুর গোবরের সার ও স্থানীয়ভাবে তৈরি প্রাকৃতিক ওষুধ ব্যবহার করছেন, যা ফসলকে ক্ষতিকর রাসায়নিক থেকে রক্ষা করছে। এই পদ্ধতি শুধু মাটি ও পানি দূষণ রোধ করছে না, বরং ভোক্তাদের পরিষ্কার ও স্বাস্থ্যকর খাদ্য সরবরাহ করছে।
প্রাকৃতিক পণ্যের প্রচার
পতঞ্জলির আয়ুর্বেদিক ওষুধ, জৈব খাদ্যদ্রব্য ও প্রাকৃতিক ত্বক পরিচর্যার পণ্যগুলিতে কোনো রাসায়নিক নেই। এসব পণ্য প্রাকৃতিক উপাদানে তৈরি হওয়ায় প্লাস্টিক বর্জ্য ও ক্ষতিকর রাসায়নিক দূষণ কমে যায়। ক্রেতারা যখন এসব পণ্য ব্যবহার করেন, তারা জানেন তারা নিজেদের স্বাস্থ্যের জন্য ভালো কিছু বেছে নিচ্ছেন এবং একই সঙ্গে পরিবেশেরও ক্ষতি করছেন না। এছাড়াও, কোম্পানিটি এখন পণ্যের মোড়কে পরিবেশবান্ধব, সহজে মিশে যাওয়া (biodegradable) উপাদান ব্যবহার শুরু করেছে।
স্বাস্থ্য ও পরিবেশ—উভয়ের জন্য উপকার
পতঞ্জলির জৈব অভিযান মানুষ ও পরিবেশ—দুটোর জন্যই উপকারী প্রমাণিত হচ্ছে। একদিকে ক্রেতারা পাচ্ছেন রাসায়নিকমুক্ত ও সতেজ পণ্য, অন্যদিকে মাটি ও পানির মান রক্ষা পাচ্ছে। এর ফলে কৃষকের আয়ও বেড়েছে এবং পরিবেশ উপকৃত হয়েছে। এই মডেলটি এখন ভারতের একটি টেকসই পদ্ধতি হয়ে উঠছে, যা স্বাস্থ্যের পাশাপাশি প্রকৃতিরও উপকার করছে।
যদিও জৈব পণ্য বাজারজাত ও সরবরাহে এখনো কিছু চ্যালেঞ্জ রয়ে গেছে, পতঞ্জলির বিশ্বাসযোগ্যতা ও সরাসরি ভোক্তার সঙ্গে সংযোগ থাকায় এই বাধাগুলো ধীরে ধীরে কাটিয়ে ওঠা সম্ভব হচ্ছে।
উপসংহার
পতঞ্জলির এই জৈব যাত্রা শুধু আমাদের স্বাস্থ্য ও চাষাবাদের প্রতি দৃষ্টিভঙ্গি বদলাচ্ছে না, বরং পুরো পরিবেশেও ইতিবাচক প্রভাব ফেলছে—প্রমাণ করছে যে ব্যবসা ও পরিবেশের দায়িত্ব একসঙ্গে নেওয়া সম্ভব।
(দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির টাটকা খবর, আপডেট এবং ভিডিয়ো পেতে ডাউনলোড-লাইক-ফলো-সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের App, Facebook, Whatsapp Channel, X (Twitter), Youtube, Instagram পেজ-চ্যানেল)