সঞ্জয় রাজবংশী: বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে বাবা ও মেয়ের মর্মান্তিক মৃত্যু। মন্তেশ্বরে নেমেছে শোকের ছায়া। মন্তেশ্বর থানার অন্তর্গত গদ্ধারপাড়া এলাকায় মঙ্গলবার সকালে ঘটে এক হৃদয়বিদারক দুর্ঘটনা। বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মৃত্যু হয়েছে এক ছাত্রী ও তার বাবার। মৃতদের নাম বর্ষা নন্দী (১২) ও অরুণ নন্দী (৪৫)। ঘটনায় এলাকায় গভীর শোকের ছায়া নেমেছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, এদিন সকালবেলা বৃষ্টির মধ্যে জামা মেলতে গিয়েছিল ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্রী বর্ষা। বাড়ির পাশে একটি বৈদ্যুতিক খুঁটির সঙ্গে সংযুক্ত একটি জিআই (গ্যালভানাইজড আয়রন) তার তখন বিদ্যুৎ পরিবাহীতে পরিণত হয়েছিল। অজান্তেই ভিজে অবস্থায় সেই তারের সংস্পর্শে চলে আসতেই বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয় বর্ষা। মেয়ের চিৎকার শুনে তাকে বাঁচাতে ছুটে যান বাবা অরুণ নন্দী। কিন্তু তিনিও বিদ্যুতের শকের কবলে পড়ে যান। দু’জনকেই স্থানীয় বাসিন্দারা উদ্ধার করে মন্তেশ্বর প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যান। কিন্তু ততক্ষণে সব শেষ। চিকিৎসকরা বাবা-মেয়েকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।
স্থানীয়দের অভিযোগ, বিদ্যুতের খুঁটির জিআই তারে দীর্ঘদিন ধরেই ত্রুটি ছিল। ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্রী বর্ষার মৃত্যুর পর এই বিষয়ে বিদ্যুৎ বিভাগকে দায়ি করে ক্ষোভপ্রকাশ করেন প্রতিবেশীরা। তাঁদের দাবি, অবিলম্বে এলাকা জুড়ে বৈদ্যুতিক নিরাপত্তা পরিকাঠামোর খতিয়ে দেখা হোক ও এই মর্মান্তিক ঘটনার পিছনে দায়িদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হোক। স্থানীয় বিদ্যালয়ের ষষ্ঠ শ্রেণিতে পাঠরত বর্ষা পড়াশোনায় ভালো ও শান্ত স্বভাবের মেয়ে হিসেবে এলাকায় পরিচিত ছিল।
বাবা-মেয়ের এই মর্মান্তিক মৃত্যুতে গোটা গদ্ধারপাড়া এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। একটা তার যে এমন করুণ বীভৎস পরিণতি ডেকে আনতে পারে, তা বিশ্বাস করতে পারছেন না এলাকাবাসী। স্থানীয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। বিদ্যুৎ বিভাগকে বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে খতিয়ে দেখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তবে এই ঘটনার পর ফের একবার এই প্রশ্নটা উঠছেই যে, এমন মর্মান্তিক দুর্ঘটনা আর কতবার? বিদ্যুৎ সরবরাহ সংস্থার গাফিলতিতে আরও কত প্রাণ অকালে মৃত্যুমুখে পড়বে?
(দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির টাটকা খবর, আপডেট এবং ভিডিয়ো পেতে ডাউনলোড-লাইক-ফলো-সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের App, Facebook, Whatsapp Channel, X (Twitter), Youtube, Instagram পেজ-চ্যানেল)