পিয়ালি মিত্র: কসবা তদন্তে বাড়ানো হলো সিটের সদস্য। আরও চারজন অফিসারকে যুক্ত করা হল। এক লেডি সাব ইনস্পেক্টর ও তিনজন সাব ইনস্পেক্টরকে যুক্ত করা হলো সিটে। আগেই একজন অ্যাসিন্ট্যান্ট কমিশনারের নেতৃত্বে পাঁচ জনের টিম গঠন করা হয়েছিল। সেই টিমকে সাহায্য করবে এই চারজন।
মনোজিতের বাড়িতে পুলিস:
কসবা কলেজের ধর্ষণের ঘটনায় মূল অভিযুক্ত মনোজিতের জামা প্যান্ট জুতো অন্তবার্স বাজেয়াপ্ত করল পুলিস। ঘটনার দিন যেগুলি তাঁর পরনে ছিল সেই সবগুলোই তদন্তের জন্য বাজেয়াপ্ত করেছে পুলিস। এতে মনে করা হচ্ছে, এই ঘটনায় বাজেয়াপ্ত জিনিসগুলো তদন্তে বড় সাহায্য করবে।
ফরেন্সিক পরীক্ষা:
নির্যাতিতার দেহরসের সঙ্গে অভিযুক্তের অন্তর্বাসে লেগে থাকা বীর্যের নমুনা মিলিয়ে দেখা যাবে। ইতোমধ্যেই মেয়েটির রক্ত, থুতু, লালারস, যৌনাঙ্গের তরল সংগ্রহ করা হয়েছে। তার সঙ্গেই মিলিয়ে দেখা হবে অভিযুক্তের নমুনা। মনোজিত্ কে বাড়িতে নিয়ে গিয়ে তার জিনিস বাজেয়াপ্ত করা হয়। সেগুলো পাঠানো হচ্ছে ফরেন্সিক পরীক্ষার জন্য।
কলেজের সিসিটিভি:
উল্লেখ্য, মোবাইলের ভিডিয়োর পর কলেজের সিসিটিভিতে মিলেছে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে জোড়াল প্রমাণ। ছাত্রীকে টেনে নিয়ে যাওয়ার ছবি ধরা পড়েছে ফুটেজে। গেটের কাছে লাগানো সিসিটিভি ক্যামেরায় ধরা পড়েছে সেই ছবি। দেখা গিয়েছে ব্যাগ নিয়ে হন্তদন্ত হয়ে গেটের দিকে হেঁটে আসছেন ওই ছাত্রী। তাঁর পিছনে আসছে মনোজিৎ এবং এই দুই শাগরেদ। তাঁরা ছাত্রীকে টেনে নিয়ে যাচ্ছে কলেজের ভিতরের দিকে। মনোজিতের কথা মতো ওই দুই অভিযুক্ত তাঁকে জোর করে গেটের কাছে থেকে টেনে গার্ড রুম নিয়ে যায় বলে অভিযোগপত্রে জানিয়েছিলেন ছাত্রী।
এবার সেই অভিযোগের স্বপক্ষে মিলল জোড়াল প্রমাণ। কলেজে রয়েছে মোট তিনটে সিসিটিভি। যদিও ইউনিয়ন রুম বা গার্ড রুমের সামনে সিসিটিভি নেই। তাঁকে টেনে নিয়ে যাওয়ার বেশ কিছুক্ষণ পর ছাত্রীকে বেরিয়ে যেতে দেখা যাচ্ছে। পরে একে একে অভিযুক্তদের বেরিয়ে যাওয়ার ছবিও ধরা পড়েছে সিসিটিভি ফুটেজে।
ঘটনার পুনর্নির্মাণ:
গতকাল রাতেই ঘটনাস্থলে ছাত্রীকে নিয়ে গিয়ে ঘটনার পুনর্নির্মাণ করে পুলিস। হেফাজতে অভিযুক্তদের মুখোমুখি জেরায় একে অপরের বিরুদ্ধে দায় ঠেলাঠেলি অভিযুক্তদের মধ্যে। মনোজিতের নির্দেশেই ছাত্রীকে টেনেহিচড়ে গার্ডের রুমে নিয়ে যায় প্রমিত ও জায়িব, দাবি পুলিশের জেরায়। অভিযুক্তদের বয়ানে বেশ কিছু জায়গায় অসঙ্গতি ও পরস্পর বিরোধী।
প্রমিতের বাড়িতে পুলিস:
কসবার সাউথ ক্যালকাটা ল কলেজে ছাত্রী ধর্ষণে ধৃত প্রমিতকে নিয়ে তাঁর বাড়িতে গেল পুলিশ। রবিবার সকাল থেকে তাই নিয়ে শোরগোল এলাকায়। বেশ কিছু ক্ষণ ধরে ধৃতের বাড়িতে তল্লাশি চালায় কলকাতা পুলিশের একটি দল।
স্থানীয় সূত্রে খবর, কসবার আইন কলেজে গণধর্ষণকাণ্ডে ধৃত প্রমিত, হাওড়ার চ্যাটার্জিহাট থানার বাসিন্দা। এলাকায় তিনি বেশ পরিচিত। ধর্ষণের ঘটনায় তাঁর নাম জড়ানোর প্রতিবেশীরা অবাক। গত বৃহস্পতিবার গ্রেফতার হয় এই প্রতীম। তার পর এই প্রথম বার তাঁকে নিয়ে বাড়িতে যায় পুলিশ। জানা যাচ্ছে, বাড়িতে বেশ কিছুক্ষণ তল্লাশি চলে। বাড়ির লোকজনের সঙ্গে কথাবার্তা বলে পুলিস। তার পর বেশ কিছু নথি উদ্ধার করে নিয়ে গিয়েছেন তদন্তকারীরা। ধৃত যুবককে নিয়ে পুলিশ যখন গাড়িতে ওঠে ভিড় জমে যায় আশপাশে। ঘটনার সময়কার সিসিটিভি ফুটেজ হাতে পেয়েছে পুলিশ। সেখানে ধৃত প্রমিত উপস্থিত ছিলেন বলেই জানা গিয়েছে।
আরও পড়ুন: Kasba Law College Incident: ছেলের ‘কীর্তি’ শুনে বিস্ফোরক মনোজিতের মা…
প্রতিবেশীরা জানাচ্ছেন, প্রতীম বরাবরই পড়াশোনায় ভাল। হাসিখুশি তরুণ। তাঁর সম্পর্কে এর আগে খারাপ কিছু কেউ শোনেননি। বাড়ির কেউ কোনও প্রতিক্রিয়া দিতে রাজি হননি।
ডিএনএ নমুনাও সংগ্রহ:
অভিযুক্ত তিন ছাত্রের ডিএনএ নমুনাও সংগ্রহ করা হয়েছে। ইতিমধ্যেই সিটের সদস্য সংখ্যা বাড়িয়ে ৯ করা হয়েছে। নতুন সদস্যদের মধ্যে রয়েছেন একজন মহিলা সাব-ইনস্পেক্টরও।
(দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির টাটকা খবর, আপডেট এবং ভিডিয়ো পেতে ডাউনলোড-লাইক-ফলো-সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের App, Facebook, Whatsapp Channel, X (Twitter), Youtube, Instagram পেজ-চ্যানেল)