জেল্লা বাড়াতে গ্লুটাথিয়ন! সাপ্লিমেন্টই পেতেছিল শেফালীর মারণফাঁদ? রূপটানের ভরসাতেই…


জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: কোভিডের (COVID-19) সময়ে প্রিয়জনদের হারিয়ে, মানুষ ভীষণ ভাবে উপলব্ধি করেছিল যে, মৃত্যু বড়ই অনিশ্চিত। সম্প্রতি আমদাবাদ বিমান দুর্ঘটনার (Ahmedabad Plane Crash) পর আবারও সেই লব্জ মানুষের মুখে ঘুরছে। গতকাল অর্থাত্‍ শুক্রবার রাতে আবারও এমন এক খবর এসেছে, যা বিহ্বল করেছে। মাত্র ৪২-এ প্রয়াত হয়েছেন অভিনেত্রী শেফালী জরীওয়ালা (Shefali Jariwala)! জানা যাচ্ছে হৃদযন্ত্র বিকল হয়েই মৃত্যু হয়েছে ‘কাঁটা লাগা’ (Kaanta Laga) স্টারের। যদিও শেফালীর প্রয়াণের কারণ নিয়ে রহস্য ঘনিয়েছে। 

২৭শে জুন কী ঘটেছিল শেফালীর সঙ্গে যা তাঁর স্বাস্থ্যের অবনতির কারণ ছিল? ধারাবাহিক ঘটনাবলী

শেফালী গত ২৭ জুন তাঁর বাড়িতে পুজোর জন্য উপবাস করেছিলেন। একই দিনে তিনি একটি নিয়মিত অ্যান্টি-এজিং ইঞ্জেকশনও নিয়েছিলেন। রাত ১০টা এবং ১১টার দিকে তিনি অসুস্থ বোধ করেছিলেন এবং জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন। এরপর তাঁকে তাৎক্ষণিকভাবে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়, যেখানে পৌঁছানোর পর তাঁকে মৃত বলেই ঘোষণা করা হয়। শেফালী গত ৮ বছর ধরে অ্যান্টি-এজিং চিকিৎসাধীন ছিলেন। অর্থাত্‍ বয়স কমিয়ে যৌবন ধরে রাখার মরিয়া প্রয়াস! তদন্তের সময় পুলিস এবং ফরেনসিক বিশেষজ্ঞরা শেফালীর বাড়িতে ইন্ট্রাভেনাস গ্লুটাথিয়ন, ভিটামিন সি ইঞ্জেকশনও এবং অ্যাসিডিটির ওষুধও পেয়েছেন। গ্লুটাথিয়ন এবং ভিটামিন সি উভয়ই মূলত ত্বক সাদা করার ডিটক্সিফিকেশন করে। ত্বকের গঠন উন্নত করার জন্য ব্যবহৃত হয়।

আরও পড়ুন: একত্রে চন্দ্র-কেতু-বুধ! ‘আচমকাই মৃত্যু’ হবে শেফালীর! ভয়ংকর ভবিষ্যদ্বাণী ভাইরাল…

 গ্লুটাথিয়ন কী?

গ্লুটাথিয়ন একটি শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, যা শরীরে প্রাকৃতিক ভাবেই তৈরি হয়। মূলত তিনটি অ্যামিনো অ্যাসিড দ্বারা গঠিত- গ্লুটামিন, গ্লাইসিন এবং সিস্টাইন। এটি জারণ ক্ষতি এবং কোষের মৃত্যু রোধ করতে সাহায্য করে। কোষের স্বাস্থ্য এবং টিস্যুর ক্ষতি মেরামতের ক্ষেত্রে এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। বয়সের সঙ্গে সঙ্গে দুর্বল পুষ্টি, পরিবেশগত বিষাক্ত পদার্থ এবং স্ট্রেসের মতো কারণে গ্লুটাথিয়নের মাত্রা সাধারণত হ্রাস পায়। 

সৌন্দর্য চিকিৎসায় কেন এটি ব্যবহার হয়?

গ্লুটাথিয়ন, মেলানিনের মাত্রা কমিয়ে এবং ত্বকের গঠন উন্নত করে কাজ করে। ‘এটি টাইরোসিনেজ এনজাইমকে দমন করে মেলানিনের মাত্রা কমায়, যার ফলে ত্বক উজ্জ্বল করে এবং আরও সমান রঙের দেখায়। এটি অক্সিডেটিভ স্ট্রেসের বিরুদ্ধেও লড়াই করে, ত্বকের বার্ধক্য কমিয়ে দেয়, পিগমেন্টেশন কমিয়ে দেয় এবং সামগ্রিক ত্বকের উজ্জ্বলতা এবং রেডিয়েন্স বাড়ায়।’ বলছেন এমবিবিএস এবং এমডি চর্মরোগ বিশেষজ্ঞ এবং নান্দনিক চিকিৎসক ডাঃ চাঁদনী জৈন গুপ্ত। 

গ্লুটাথিওন ব্যবহারের সর্বোত্তম উপায় কী – ওরাল, টপিকাল বা ইঞ্জেকশন?

ডঃ জৈন এই প্রসঙ্গে বলছেন, ‘যদিও ওরাল সাপ্লিমেন্টগুলি সুবিধাজনক এবং ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয়, তবে তাদের শোষণের হার কম।  ইঞ্জেকশনগুলি দ্রুত কাজ করে। আরও ভালো দৃশ্যমান ফলাফল দেয়, তবে চিকিৎসকদের তত্ত্বাবধানে তা করা প্রয়োজন হয়। ত্বকে কম ঢোকে বলে সাময়িক ফর্মগুলি কম কার্যকর। সাধারণভাবে, সৌন্দর্য-সম্পর্কিত উদ্দেশ্যে  ইঞ্জেকশন এবং ওরাল সাপ্লিমেন্ট বেশি পছন্দ করা হয়’। তবে, তিনি সতর্ক করেছেন যে এটি চিকিৎসকদের তত্ত্বাবধানেই নেওয়া উচিত।

আরও পড়ুন: স্বাভাবিক মৃত্যু? বাড়িতে মিলল যৌবন ধরে রাখার ওষুধ! শেফালীর হার্ট অ্যাটাক কী তাহলে…

কেন গ্লুটাথিয়নের সঙ্গে ভিটামিন সি একসঙ্গে প্রয়োগ করা হয়?

ডঃ জৈনের মতে, ‘গ্লুটাথিয়ন সাধারণত ভিটামিন সি এর সঙ্গে জুড়ে দেওয়া হয়-শোষণ এবং কার্যকারিতা বাড়ানোর জন্য। ভিটামিন সি অক্সিডাইজড গ্লুটাথিয়ন পুনরুজ্জীবিত করতে সাহায্য করে এবং কোলাজেন উৎপাদন বৃদ্ধি করে, স্কিন টোন এবং টেক্সচার আরও উন্নত করে। একসঙ্গে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সুরক্ষা এবং ত্বক-উজ্জ্বল ফলাফলের জন্য একটি সমন্বয়মূলক প্রভাব তৈরি করে’

 গ্লুটাথিওনের সঠিক মাত্রা কী?

বিশেষজ্ঞ প্রতিদিন ২৫০ মিলিগ্রাম থেকে ১০০০ মিলিগ্রাম পর্যন্ত ওরাল নেওয়ার পরামর্শ দেন। ডঃ জৈন আরও সতর্ক করে বলেন যে, এটি শুধুমাত্র চিকিৎসকদের তত্ত্বাবধানেই নেওয়া উচিত। অতিরিক্ত মাত্রায় গ্রহণের ফলে গ্যাস্ট্রোইনটেস্টাইনাল অস্বস্তি, ত্বকে ফুসকুড়ি, অথবা বিরল ক্ষেত্রে কিডনি বা লিভারে চাপ পড়তে পারে। এটি দীর্ঘমেয়াদে প্রাকৃতিক মেলানিন উৎপাদনেও প্রভাব ফেলে।

সম্ভাব্য পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াগুলি কী কী?

ডঃ জৈন বলছেন, ‘গ্লুটাথিয়ন ডিটক্সিফিকেশন এবং ত্বক ব্লিচিংয়ের জন্য ব্যাপকভাবে বিক্রি হয় তবে এর সুরক্ষা এবং কার্যকারিতা সম্পর্কিত ক্লিনিকাল তথ্য এখনও বিচারাধীন। ওরাল বা ইনজেকশনযোগ্য আকারে অতিরিক্ত বা অনিয়ন্ত্রিত সেবনের ফলে সংবেদনশীল ব্যক্তিদের মধ্যে গ্যাস্ট্রোইনটেস্টাইনাল সমস্যা, অ্যালার্জির প্রতিক্রিয়া, অথবা কিডনি/হেপাটিক চাপের মতো পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে। বিশেষ করে  ইঞ্জেকশনযোগ্য গ্লুটাথিয়ন কেবলমাত্র ডাক্তারের নির্দেশনায় নেওয়া উচিত। কারণ এর দীর্ঘমেয়াদী পরিণতি সম্পর্কে খুব কমই জানা গিয়েছে।’

আরও পড়ুন: ছাই হয়ে গেলেন ‘কাঁটা লাগা’ গার্ল শেফালী, চিতা জ্বলতেই কান্নায় ভেঙে পড়লেন স্বামী…

 
উচ্চ মাত্রায় গ্লুটাথিওন নিলে কি হৃদয়ের উপর চাপ সৃষ্টি করতে পারে?

ডঃ জৈন বলছেন,’উচ্চ মাত্রার গ্লুটাথিয়ন সরাসরি হৃদজনিত রোগের সঙ্গে সম্পর্কিত কিনা তার সীমিত প্রমাণই রয়েছে। তবে দীর্ঘমেয়াদী অপব্যবহার বা অতিরিক্ত ইঞ্জেকশন নিলে সম্ভাব্য ভাবে ইলেক্ট্রোলাইট ভারসাম্য বা রক্তচাপকে ব্যাহত করতে পারে, যা পরোক্ষভাবে হৃদযন্ত্রের উপর চাপ সৃষ্টি করতে পারে। উচ্চ মাত্রার ব্যবহার করার আগে, বিশেষ করে  ইঞ্জেকশনের জন্য, ডাক্তারের সঙ্গে পরামর্শ করা ভাল’

 

(দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির টাটকা খবর, আপডেট এবং ভিডিয়ো পেতে ডাউনলোড-লাইক-ফলো-সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের AppFacebookWhatsapp ChannelX (Twitter)YoutubeInstagram পেজ-চ্যানেল)

 





Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *