Muhammed Shami’s maintenance case: শামী নাকি আসামি! ‘ক্রিমিনাল’ পেসারের কাছ থেকে মাসে ৪ লক্ষ টাকার খোরপোশ আদায় করছেন হাসিন জাহান…


অর্ণবাংশু নিয়োগী:  কলকাতা হাই কোর্টে ধাক্কা খেলেন মহম্মদ শামী। ভরণপোষণ বাবদ প্রাক্তন স্ত্রী হাসিন জাহানকে প্রতি মাসে দেড় লাখ টাকা করে দিতে হবে শামীকে। মেয়ের জন্য মাসে দিতে হবে আরও আড়াই লাখ টাকা করে। চাইলে মেয়ের পড়াশোনা বা অন্য প্রয়োজনে আরও টাকা খরচ করতে পারেন ভারতীয় দলের ক্রিকেটার। গার্হস্থ্য হিংসার মামলার নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত এই টাকা দিতে হবে তাঁকে। প্রাক্তন স্ত্রী হাসিন জাহানের আবেদনের প্রেক্ষিতে এই নির্দেশ দিলেন বিচারপতি। মঙ্গলবার এই নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি অজয় কুমার মুখোপাধ্যায়।

কলকাতা হাই কোর্টের নির্দেশ

মহম্মদ শামীকে মাসিক ৪ লক্ষ টাকা খোরপোশ বাবদ দিতে হবে। স্ত্রীর মাসিক খরচ বাবদ দেড় লক্ষ টাকা ও নাবালিকা মেয়ের খরচের জন্যে আড়াই লক্ষ টাকা অর্থাৎ সব মিলিয়ে মাসে ৪ লক্ষ টাকা খোরপোশ দিতে হবে শামীকে।

ঘটনার সূত্রপাত: 

২০১৪ সালে মডেল এবং অভিনেত্রী জাহানের সঙ্গে বিয়ে হয় শামী। ২০১৫ সালে তাঁদের কন্যাসন্তানের জন্ম। কিন্তু তাঁদের দাম্পত্য সুখের হয়নি। ২০১৮ সালে যাদবপুর থানায় শামি এবং তাঁর পরিবারের বিরুদ্ধে গার্হস্থ্য হিংসার অভিযোগ দায়ের করেন জাহান। স্ত্রী নির্যাতন, বিষ খাওয়ানো, খুনের চেষ্টা, ধর্ষণ-সহ একাধিক অভিযোগ করা হয় শমীর বিরুদ্ধে। বিবাহবিচ্ছেদ চেয়ে আদালতেরও দ্বারস্থ হন জাহান। 

আরও পড়ুন: Chitpur murder case verdict: চিত্‍পুর দম্পতি হত্যাকাণ্ডে সঞ্জয়কে ফাঁ*সি দিলেন বিচারক! যদিও আরজি কর কাণ্ডে তিনিই সঞ্জয়কে…

প্রোটেকশন অফ উইমেন ফ্রম ডোমেস্টিক ভায়োলেন্স অ্যাক্ট ২০০৫ অনুযায়ী মামলা দায়ের করেন তিনি। মামলার খরচ এবং অন্তর্বর্তিকালীন ভরণপোষণ বাবদ ১০ লাখ টাকা চেয়েছিলেন। নিজের জন্য মাসে ৭ লাখ এবং মেয়ের জন্য মাসে ৩ লাখ টাকা চান। কিন্তু নিম্ন আদালতে তাঁর এই আবেদন গ্রাহ্য হয়নি। 

খোরপোশ মামলা: 

২০১৮ সালে শামীর কাছ থেকে খোরপোশ বাবদ ৭ লক্ষ টাকা দাবি করেছিলেন হাসিন জাহান। আরও ৩ লক্ষ টাকা দাবি করেছিলেন মেয়ের পড়াশোনার খরচ বাবদ। কিন্তু সেই সময় আদালতে সেই আবেদন খারিজ হয়ে যায়। জানিয়ে দেওয়া হয়, হাসিন নিজে মডেলিং করে আয় করেন। তাই শামীকে কোনও খোরপোশ দিতে হবে না। সেই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে লড়াই চালিয়ে যান হাসিন। আলিপুর আদালত শুধুমাত্র তাঁর সন্তানকে ৮০,০০০ টাকা প্রতি মাসে দেওয়ার নির্দেশ দেয় শামীকে। পরে জেলা জজ সেই নির্দেশ সংশোধন করে জাহানকেও মাসে ৫০ হাজার টাকা করে দেওয়ার নির্দেশ দেন।

এই নির্দেশের বিরুদ্ধে হাই কোর্টের দ্বারস্থ হন জাহান। তাঁর আইনজীবী বলেন, মাসে জাহানের আয় ১৬ হাজার টাকা। ব্যাঙ্কে স্থায়ী আমানত থেকে সুদ বাবদ এই টাকা পান তিনি। এই টাকায় তাঁর এবং কন্যার খরচ চালানো সম্ভব নয়। অথচ শমীর সঙ্গে থাকার সময় থেকে তাঁরা ব্যয়বহুল জীবনযাপনে অভ্যস্ত হয়ে পড়েছেন। ফলে তাঁর প্রতি মাসে খরচ হয় প্রায় ৬ লাখ টাকা। অন্য দিকে, তাঁর প্রাক্তন স্বামীর ২০২০-২১ অর্থ বর্ষের আয় প্রায় ৭.১৯ কোটি টাকা। সামর্থ্য থাকতেও তিনি টাকা দিতে চাইছেন না।

আরও পড়ুন:  Delhi Horror: বোরখা পরে প্রেমিকার ৫ তলার ছাদে! একধাক্কায় নীচে ফেলে সম্পর্কের টানাপোড়েনে ইতি প্রেমিকের…

 

শামীর জবাব আদালতে: 

তাঁর প্রাক্তন স্ত্রী একজন সফল মডেল এবং অভিনেত্রী। বিজ্ঞাপনেও কাজ করেন। তাঁর মাসিক আয় অন্তত ৫ লাখ টাকা। এ ছাড়াও বিভিন্ন ব্যাঙ্কে তাঁর বেশ কিছু আমানত রয়েছে। তথ্য গোপনের অভিযোগও করেন শামী।

প্রথমে আলিপুর আদালত স্ত্রী ও সন্তানের জন্যে মাসিক ৮০ হাজার টাকা দিতে শমীকে নির্দেশ দেয়। পরে জেলা জজ সেই নির্দেশ সংশোধন করে স্ত্রীর জন্যে মাসিক ৫০ হাজার টাকা ও সন্তানের জন্যে ৮০ হাজার টাকা মেটাতে নির্দেশ দেয়। কিন্তু সেই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে হাসিন হাই কোর্টের দ্বারস্থ হন। তাঁর দাবি, নিজের মাসিক খরচ প্রায় সাড়ে ৬ লক্ষ টাকা। স্বামীর বার্ষিক আয় প্রায় সাড়ে ৭ কোটি। কিন্তু টাকা দেওয়ার সমর্থ্য থাকলেও স্ত্রী ও সন্তানের প্রয়োজনীয় টাকা দিচ্ছেন না জাতীয় দলের তারকা ক্রিকেটার। হাই কোর্ট তাই শামীর আয়ের কথা মাথায় রেখে এই নির্দেশ দিয়েছে।

বিস্ফোরক হাসিন জাহান: 

আদালতে জয় পেয়েছেন। তারপরেই প্রাক্তন স্বামীর বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন হাসিন জাহান। স্পষ্ট জানিয়েছেন, মডেলিং দুনিয়ায় তাঁর কেরিয়ার শেষ করে দিয়েছেন তারকা পেসার মহম্মদ শামি। আপাতত তাঁর কোনও রোজগার নেই। তবে আদালতের নির্দেশে খোরপোশ পেয়ে খুশি হাসিন।

সংবাদসংস্থা এএনআইয়ের কাছে তিনি বলেন, ‘বিয়ের আগে মডেলিং করতাম। তাতে আমার খরচ দিব্যি চলে যেত। কিন্তু শামী আমার কাজ করা বন্ধ করে দেয়। আমাকে গৃহবধূ হয়ে থাকতে বাধ্য করেছিল। যেহেতু শামীকে খুব ভালোবাসতাম, তখন এসব মেনে নিয়েছি। কিন্তু এখন আমার কোনও উপার্জন নেই। আমাদের যাবতীয় খরচের দায়িত্ব শামীকে নিতেই হবে। তাই ও যখন দায়িত্ব নিতে অস্বীকার করল, বাধ্য হয়ে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছি। ঈশ্বরকে অশেষ ধন্যবাদ, আমাদের দেশে এখনও আইন রয়েছে যা সকলকে নিজেদের দায়িত্বের কথা মনে করিয়ে দেয়।’

(দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির টাটকা খবর, আপডেট এবং ভিডিয়ো পেতে ডাউনলোড-লাইক-ফলো-সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের AppFacebookWhatsapp ChannelX (Twitter)YoutubeInstagram পেজ-চ্যানেল)





Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *