বিধান সরকার: খুনই করা হয়েছে যুগলকে!২৪ ঘণ্টার মধ্যেই বৈদ্যবাটি যুগলের রহস্যমৃত্যুর কিনারা করল পুলিস (Baidyabati Couple Murder)। খুনের ঘটনায় গ্রেফতার ২ জন। ধৃতদের নাম অর্জুন পাসোয়ান ও নাসিরুদ্দিন শেখ। ধৃতদের একজন অর্জুন, অপর্ণার বোনের প্রেমিক! গতকাল ভোর রাতে হুগলির বৈদ্যবাটিতে রহস্যজনক মৃত্যু হয় যুগলের (Baidyabati Murder)! রাত ৩ টে নাগাদ যুগলের ‘বাবা গো, মা গো’ চিৎকার শুনে ছুটে আসেন প্রতিবেশীরা। রক্তাক্ত অবস্থায় দেখতে পান মণীশ ভাদুড়ী(৩৫) ও অপর্ণা মাঝি(৩২)-কে। এরপরই খবর পেয়ে শ্রীরামপুর থানার পুলিস এসে যুগলের রক্তাক্ত দেহ উদ্ধার করে (Hooghly Schocker)।
দুই বোনেরই পরকীয়া!
বৈদ্যবাটি পুরসভার ১৮ নম্বর ওয়ার্ডের সীতারাম বাগান এলাকার একটি বাড়িতে ভাড়া থাকতেন মণীশ ও অপর্ণা। বৈদ্যবাটি রাজার বাগান এলাকায় মণীশের বাড়ি। কিন্তু গত ৬ বছর ধরে সীতারাম বাগানে ভাড়া ছিলেন দুজনে। অপর্ণা তাঁর স্বামীকে ছেড়ে এসে মণীশের সঙ্গে থাকতেন। পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, অপর্ণার ছোটো বোন রিম্পার সঙ্গে একটি পানশালায় আলাপ হয় হাওড়া চামরাইলের বাসিন্দা পেশায় গাড়িচালক অর্জুন পাসোয়ানের। আলাপ গভীর হয়। রিম্পাও তাঁর স্বামীকে ছেড়ে এসে অর্জুনের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ হন (Extra-marital Affair)। রিম্পার বড়দি তাঁদের দুজনকে তেলেঙ্গানায় কাজের ব্যবস্থা করে দেন। সেখানে কিছুদিন থাকার পর আবার তাঁরা ফিরে আসেন। বিভিন্ন বিনোদন পার্কে দুজনে ঘুরতেও যান। মাস তিনেক মেলামেশা করার পর রিম্পা জানান, তাঁর অর্জুনকে পছন্দ না। আরেকজনের সঙ্গে সম্পর্ক তৈরি হয় রিম্পার।
কীভাবে খুন?
রিম্পার দিদি অপর্ণা তখন অর্জুনকে তাঁর বোনের সঙ্গে মেলামেশা করতে বারণ করে দেন। কিন্তু নাছোড়বান্দা অর্জুন বারণ শোনেন না। অপর্ণার বাড়িতে এসে তাঁদের হুমকি দিয়ে যায়। এক্ষেত্রে অর্জুনকে আবার সঙ্গ দেন তাঁর জামাইবাবু নাসিরুদ্দিন সেখ। ঘটনার ৩ দিন আগে আবার বৈদ্যবাটিতে আসেন অর্জুন। সেখানে অপর্ণার সঙ্গে তাঁর বচসা হয়। প্রকাশ্যে অপর্ণা তাঁকে চড়, থাপ্পড় মারেন। এই অপমান ও তাঁর সঙ্গে প্রতরণার বদলা নিতেই সম্ভবত খুনের পরিকল্পনা করেন অর্জুন। ঘটনার দিন অর্থাৎ বুধবার শিয়ালদা থেকে ছুরি কিনে বৈদ্যবাটিতে আসেন অর্জুন। রাত পর্যন্ত ওই এলাকায় ঘাপটি মেরে বসে থাকেন। ভোররাতে অর্জুন অপর্ণার ঘরে ঢুকে ঘুমন্ত অবস্থায় থাকা অপর্ণা ও মনীশের উপর ছুরি দিয়ে একাধিকবার আঘাত করেন। শরীরের বিভিন্ন জায়গা ছুরির আঘাতে ফালাফালা হয়ে যায়। রাত ৩টে নাগাদ প্রতিবেশীরা ‘বাবা গো, মা গো, বাঁচাও’ চিৎকার শুনতে পান। এরপরই এলাকা থেকে গা ঢাকা দেন অর্জুন।
২ জনকে ধরতে পুলিসের ২ টিম
তদন্তে নেমে চন্দননগর পুলিস কমিশনারেটের পুলিস কমিশনার অমিত পি জাভালগি, ডিসিপি শ্রীরামপুর অর্ণব বিশ্বাস গতকালই ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। তদন্ত শুরু করে শ্রীরামপুর থানার পুলিস। মৃত অপর্ণার পরিবারে তাঁর মা ও বোনকে জিজ্ঞাসা করে পুলিস অর্জুনের কথা জানতে পারে। অর্জুন আর নাসিরুদ্দিন যে তাদের হুমকি দিত একথাও জানতে পারে। এরপরই পুলিস ওই ২ জনকে ধরার ফাঁদ পাতে। দুটো টিম তৈরি করে। একটি জগদীশপুরের চামরাইলে যায়। অপরটি যায় মহেশতলায়। অতঃপর স্থানীয় পুলিসের সাহায্য নিয়ে ২ জনকে গ্রেফতার করে পুলিস।
(দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির টাটকা খবর, আপডেট এবং ভিডিয়ো পেতে ডাউনলোড-লাইক-ফলো-সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের App, Facebook, Whatsapp Channel, X (Twitter), Youtube, Instagram পেজ-চ্যানেল)