রণজয় সিংহ: চার বছর আগে রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে বিজেপি সমর্থকের ন’বছরের মেয়েকে ধর্ষণ করেছিলেন তৃণমূল নেতা! ২০২১ সালের ‘ভোট পরবর্তী হিংসা’ সংক্রান্ত ওই মামলায় অভিযুক্ত সেই তৃণমূল নেতা, অবসরপ্রাপ্ত স্কুলশিক্ষককে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিল মালদহ জেলা আদালত।
নাবালিকা ধর্ষণের ঘটনা:
২০২১ সালে নাবালিকা ধর্ষণের ঘটনায় দোষী সাব্যস্ত রফিকুল ইসলামকে সাজা ঘোষণা করল আদালত। তৃণমূল কংগ্রেস নেতা রফিকুল ইসলামকে যাবজ্জীবন সাজা দিল আদালত। সিবিআই সমস্ত তথ্য রিপোর্ট মালদা জেলা আদালত তাকে দোষী সাব্যস্ত করেছে। নাবালিকা ধর্ষণের ঘটনায় অভিযুক্ত হয় মানিকচকের এই তৃণমূল কংগ্রেস নেতা। নির্বাচন পরবর্তী সন্ত্রাসের ঘটনায় সিবিআই যে তদন্ত করছিল তাতে এই মামলাটিও দাখিল করা হয়। তাতেই দোষী সাব্যস্ত হয়েছে এই ব্যক্তি। আজ তার যাবজ্জীবন সাজা ঘোষণা হল।
অভিযোগ প্রমাণিত:
রফিকুল ইসলামকে আদালতে তুলেছিল পুলিশ। শুক্রবার তার সাজা ঘোষণা হওয়ার কথা ছিল। ইতোমধ্যেই সিবিআই সমস্ত তথ্য রিপোর্ট আদালতে পেশ করেছে। মালদা জেলা আদালত, তাকে দোষী সাব্যস্ত করেছে। ২০২১ সালে নাবালিকা ধর্ষণের ঘটনায় অভিযুক্ত হয় মানিকচকের এই তৃণমূল কংগ্রেস কর্মী। নির্বাচন পরবর্তী সন্ত্রাসের ঘটনায় সিবিআই যে তদন্ত করছিল তাতে এই মামলাটিও দাখিল করা হয়। তাতেই দোষী সাব্যস্ত হয়েছে এই ব্যক্তি।
আরও পড়ুন: Rajanya Haldar: ‘মনোজিতের মোবাইলে আমারও AI করা নগ্ন ছবি! আমি হেরে গিয়েছি…’
ভোট পরবর্তী হিংসা মামলা:
২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনের ফলপ্রকাশের পর অশান্তির ঘটনা ঘটেছিল রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে। তা নিয়ে মামলা হয় কলকাতা হাই কোর্টে। এর পর উচ্চ আদালতের নির্দেশেই সেই সময়ে ঘটা খুন-ধর্ষণের ঘটনার তদন্তে নামে সিবিআই। আদালত সূত্রে খবর, ভোট পরবর্তী হিংসা মামলার অন্তর্গত মোট ৫৫টি ঘটনার তদন্তের দায়িত্বভার পেয়েছিল তারা। তার মধ্যেই একটি ছিল মালদহের মানিকচক ব্লকের এই নাবালিকা ধর্ষণের অভিযোগ। ভোট পরবর্তী হিংসা সংক্রান্ত এই প্রথম কোনও মামলায় রায় দিল আদালত।
বৃহস্পতিবারই মালদহের অতিরিক্ত নগর দায়রা আদালতের দ্বিতীয় (এডিজে-২ কোর্ট) বিচারক রাজীব সাহা অভিযুক্ত তৃণমূল নেতা রফিকুল ইসলামকে দোষী সাব্যস্ত করেছিলেন। সাজা ঘোষণা হল শুক্রবার। সিবিআইয়ের আইনজীবী অমিতাভ মৈত্র বলেন, ‘পকসো আইনে মামলা চলছিল। সাক্ষ্য দিয়েছেন মোট ২২ জন। সিবিআইয়ের দায়ের করা ভোট পরবর্তী হিংসা সংক্রান্ত কোনও মামলায় এই প্রথম সাজা ঘোষণা হল।’
ঘটনার বিবরণ:
আদালত সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০২১ সালের ৫ জুন চতুর্থ শ্রেণির ওই ছাত্রীকে ফাঁকা ঘরে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ করার অভিযোগ উঠেছিল রফিকুলের বিরুদ্ধে। অভিযোগ ছিল, নির্যাতিতার পরিবার বিজেপি সমর্থক হওয়ায় রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে সেই বাড়ির মেয়েকে ধর্ষণ করেন শাসক দলের নেতা। পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ অভিযুক্তকে গ্রেফতার করে। তার পর থেকেই অভিযুক্ত কারাগারে বন্দি। স্থানীয় সূত্রে খবর, প্রথমে সে সিপিএমের সঙ্গে যুক্ত ছিল। পরে সে তৃণমূলে যোগ দেয়।
নির্যাতিতার পরিবার জানিয়েছে, মেয়েটি এখন সপ্তম শ্রেণিতে পড়াশোনা করে। নাবালিকার মা বলেন, ‘মেয়ে বাড়ির সামনে খেলা করছিল। ওকে ঘরে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ করা হয়েছিল। বিধানসভা ভোটে বিজেপি করার কারণে শাস্তি দেওয়া হয়েছিল আমাদের’।
(দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির টাটকা খবর, আপডেট এবং ভিডিয়ো পেতে ডাউনলোড-লাইক-ফলো-সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের App, Facebook, Whatsapp Channel, X (Twitter), Youtube, Instagram পেজ-চ্যানেল)