প্রসেনজিত্ সর্দার: রাজ্জাক খাঁ খুনের ঘটনায় ভেঙে পড়লেন আরাবুল ইসলাম, পুরনো দিনের স্মৃতিতে চোখ ভিজল তৃণমূল নেতার।
স্মৃতিমেদুর আরাবুল ইসলাম:
রাজ্জাক খাঁ খুনের ঘটনায় কান্নায় ভেঙে পড়লেন একসময়ের ভাঙ্গড়ের দাপুটে তৃণমূল নেতা আরাবুল ইসলাম। রাজনীতির ময়দানে দীর্ঘদিন একসঙ্গে পথচলা, একসঙ্গে মঞ্চ ভাগ, এমনকি বহুবার একসঙ্গে খাওয়া-দাওয়া— সেই রাজ্জাক খাঁ আজ নেই। এই মর্মান্তিক ঘটনার খবর পেয়ে আবেগ ধরে রাখতে পারলেন না আরাবুল ইসলাম।
তিনি বলেন, ‘যখন ক্ষমতায় ছিলাম, রাজ্জাক আমার ছায়াসঙ্গী ছিল। একসাথে অনেক লড়াই করেছি, অনেক পরিকল্পনা করেছি এলাকার উন্নয়নের জন্য। আজ তাকে এমনভাবে হারাতে হবে, ভাবিনি।’
রাজ্জাক খাঁ-কে ঘিরে রাজনৈতিক মহলে নানা আলোচনা, তবে আরাবুলের চোখে শুধুই একজন পুরনো সহকর্মীর স্মৃতি। রাজ্জাকের মৃত্যুতে শোকের ছায়া ভাঙ্গড় জুড়ে, রাজনৈতিক দ্বন্দ্ব ভুলে অনেকেই তার প্রতি শ্রদ্ধা জানাচ্ছেন।
ঘটনার তদন্ত:
পুলিস ইতিমধ্যে তদন্ত শুরু করেছে, ঘটনার পিছনে কোন ষড়যন্ত্র আছে কিনা, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তবে রাজ্জাক খাঁ-র মৃত্যুতে ভাঙ্গড় রাজনীতির এক অধ্যায় যেন শেষ হয়ে গেল, বলেই মনে করছেন অনেকেই।
রাজ্জাক খাঁ-র মৃতদেহর অপেক্ষায়:
শুক্রবার সন্ধ্যেয় রাজ্জাক খাঁ-র মৃতদেহ আসার অপেক্ষায় বিধায়ক শওকত মোল্লা, ভিড় জমেছে তৃণমূল কর্মী-সমর্থকদের। খুন হওয়া তৃণমূল নেতা রাজ্জাক খাঁ-র মৃতদেহ এখনও ময়নাতদন্ত থেকে ফিরে আসেনি, তবে ইতিমধ্যেই তাঁর শেষ যাত্রায় অংশ নিতে ভিড় জমাতে শুরু করেছেন তৃণমূল কর্মী-সমর্থকরা।
অপেক্ষায় শওকত মোল্লা:
বসে রয়েছেন ক্যানিং পূর্বের বিধায়ক শওকত মোল্লা-সহ বহু তৃণমূল নেতৃত্ব। চোখেমুখে শোকের ছাপ, অপেক্ষায় সকলেই—কখন ফিরবে রাজ্জাক খাঁ-র নিথর দেহ। তাঁকে শেষবারের মতো দেখতে ও শ্রদ্ধা জানাতে আসছেন বিভিন্ন প্রান্ত থেকে মানুষজন। রাজনৈতিক মহলে গভীর শোকের ছায়া। দীর্ঘদিন ধরে ভাঙ্গড়ে তৃণমূল সংগঠনের অন্যতম শক্তিশালী মুখ ছিলেন রাজ্জাক খাঁ। তাঁর মৃত্যুতে এলাকা জুড়ে তৈরি হয়েছে উত্তেজনা ও শোকের আবহ।
Pune Crime: বেআইনি নির্মাণের রিপোর্টিং সাহসিনীর! লাইভেই হায়নার মতো তরুণীকে ঘিরে ধরে…ছিঃ…
ঘটনার বিবরণ:
উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার তৃণমূল নেতাকে লক্ষ্য করে দেদার গুলি। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় তৃণমূল নেতার। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, নিহত তৃণমূল নেতার নাম রজ্জাক খাঁ। গত রাতে তিনি তৃণমূল কর্মী আরাবুল খানের সঙ্গে বিজয়গঞ্জ পার্টি অফিসে মিটিং করেন। মিটিং করে রজ্জাক খাঁ বিজয়গঞ্জ বাজারের দিকে বুলেটে করে বাড়ি ফিরছিলেন। রাস্তাতেই রজ্জাক খাঁকে নৃশংস খুন করা হয়।
পুলিসের অনুমান, ঘটনাস্থলের দুদিকে রয়েছে ভেরি, সেখানে আগে থেকেই ওই জায়গায় লুকিয়ে ছিল আততায়ীরা। তিনি যে ওই রাস্তা দিয়ে ফেরেন বা ফিরবেন সে খবর আগে থেকে ছিল দুষ্কৃতীদের কাছে, অনুমান পুলিসের। তবে এই ঘটনা পরিকল্পিত বলেই মনে করছে পুলিস।
হত্যার কারণ:
আরও জানা গিয়েছে, রজ্জাক বিধায়ক শওকত মোল্লার ঘনিষ্ঠ। অন্যদিন তিনি সাধারণত ৭-৭.৩০টা নাগাদ বাড়ি ফিরে যান। কিন্তু গতকাল রাত হয়ে গিয়েছিল। সেই খবরও হামলাকারীদের কাছে আগে থেকেই ছিল বলে মনে করছে পুলিস। বাইকে তাঁর সঙ্গে পাড়ার দুই যুবক ছিল। তাদের পুলিস জিজ্ঞাসাবাদ করছে।
সূত্রের খবর, ঘটনাস্থল থেকে চারটে গুলির খোল উদ্বার হয়েছে। তৃণমূল নেতার বুকে গুলি করা হয়। সেই সঙ্গে মুখ, চোখ সহ একাধিক জায়গায় ধারালো অস্ত্র দিয়ে কোপানো হয়। ইতোমধ্যেই রেজ্জাক খাঁয়ের বুলেটটিও বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। ইতোমধ্যেই এই ঘটনায় দুজনকে আটক করা হয়েছে বলে জানা গিয়েছে।
এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে তীব্র উত্তেজনা ছড়ায় ভাঙড় এলাকায়। দোষীদের গ্রেফতার দাবিতে পথ অবরোধ করেন রজ্জাকের অনুগামীরা। ভাঙড় এখন কলকাতা পুলিসে এলাকায়। রাতেই ঘটনাস্থলের উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছেন কলকাতা পুলিস কমিশনার মনোজ ভার্মা। ঘটনাস্থলে আজ হোমিসাইড শাখা তদন্তে নেমেছে।
(দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির টাটকা খবর, আপডেট এবং ভিডিয়ো পেতে ডাউনলোড-লাইক-ফলো-সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের App, Facebook, Whatsapp Channel, X (Twitter), Youtube, Instagram পেজ-চ্যানেল