পার্থ চৌধুরী: ক্ষ্যাপা খুঁজে ফিরে পরশপাথর। তা বলে হেঁটে হেঁটে ২০৯৫ কিলোমিটার! তাও আবার দণ্ডি কেটে! সবাই শুনে বলবেন ‘পাগল নাকি?’ আসলে বাবা মহাদেবের ভক্তরা সাধারণত ক্ষ্যাপাই হন।
আর হবে নাই বা কেন? বাবা মহাদেব নিজেই তো ক্ষ্যাপা, আত্মভোলা। এই রকম এক রসিক পাগলকে দেখতে এখন ঢ্ল নেমেছে বিভিন্ন এলাকায়।
পূর্ব বর্ধমানের ভাতার থানার প্রত্যন্ত গ্রাম সেরুয়া। সেখানকার বাসিন্দা দীপ বাগ। মাত্রই ২১ বছর বয়স তার। তার এক ধনুকভাঙ্গা পণ। পায়ে হেটে তামিলনাড়ুর আদিযোগী মহাদেবের মন্দিরে যাবেন তিনি। একেই এই সুদীর্ঘ ২০৯৫ কিলোমিটার পথ। পথে নানা বিঘ্ন। প্রচুর সময় লাগছে। ভাতার থেকে বর্ধমান আসতেই তেইশ দিন লেগে গেছে! আদিযোগী পৌঁছাতে কত বছর, কত মাস লাগবে কোনো হিসেব নেই। তার উপর আরো একটা কথা আছে। এই গোটা পথটাই সে যেতে চায় দণ্ডি কেটে। রাতে দন্ডি কাটা কঠিন। তাই কেবল দিনের বেলাতেই দন্ডি কাটছে সে।
দীপ জানাল, ছোট থেকেই বাবা মহাদেবের ভক্ত সে।বাবার নামে মাতোয়ারা। বাড়ি থেকে মা বাবার পুরো সমর্থন আছে এই ভক্তিমার্গে যাত্রায়। প্রশাসনের সহযোগিতাও সে পাচ্ছে। তবে সবচেয়ে বেশি মনোবল তাকে যোগাচ্ছেন ভক্তরাই। তাকে দেখতে মানুষের ঢ্ল নামছে। আছে যুবক যুবতীরাও। ভিড়ের মধ্যে থাকা ভক্ত রীতা ধর বললেন, এই ভক্তিপ্রাণ মানুষটিকে দেখতেই এসেছি।
আরও পড়ুন-চলন্ত বাসেই সন্তানের জন্ম তরুণীর, তারপর সদ্যোজাতককে নিয়ে ভয়ংকর কাণ্ড করলেন মা…
আরও পড়ুন-দক্ষিণবঙ্গে কমবে বৃষ্টি, বাড়বে তাপমাত্রা, তবে…
তেইশ দিন হল দীপ বেরিয়েছে ভাতার থেকে। এখন সবে বর্ধমান পেরোচ্ছে। এখনও বহু পথ বাকি। তার ধারণা, খরচ ঠিক উঠে যাবে। পথশ্রমের পরোয়া সে করে না। কারণ কে না জানে, ভোলেবাবা পার করেগা! ত্রিশূলধারী পার করে গা!
ভক্তরা জানাচ্ছেন, আদিযোগী শিব মূর্তি হল ৩৪-মিটার-লম্বা (১১২-ফুট), ৪৫-মিটার-দৈর্ঘ্য (১৪৭-ফুট) এবং ২৫-মিটার-প্রস্থের (৮২-ফুট) ইস্পাতের তৈরি একটি শিব মূর্তি। আদিযোগী তামিলনাড়ুর কোয়েম্বাটুরের থিরুনামে অবস্থিত। এটি গিনেস বিশ্ব রেকর্ডে বিশ্বের “সৰ্ববৃহৎ আবক্ষ ভাস্কর্য” হিসাবে স্বীকৃতি পেয়েছে। দন্ডি কেটে সেখানে দন্ডি কেটে পদযাত্রার এই অভিযাত্রা সম্ভবত এই প্রথম।
(দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির টাটকা খবর, আপডেট এবং ভিডিয়ো পেতে ডাউনলোড-লাইক-ফলো-সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের App, Facebook, Whatsapp Channel, X (Twitter), Youtube, Instagram পেজ-চ্যানেল)