জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: বলিউডের একসময়ের জনপ্রিয় অভিনেত্রী তিনি। দক্ষিণের অভিনেত্রী নম্রতা শিরোদকর তার বোন হয় এবং দক্ষিণী তারকা মহেশ বাবু তার ভগ্নিপতি। অক্ষয় কুমার, গোবিন্দ, চাঙ্কি পাণ্ডে, সুনীল শেঠির সঙ্গে একসময় চুটিয়ে কাজ করেছেন বলিউডে। নাচ, লাস্য, অভিনয় তাঁকে অন্যদের থেকে আলাদা করেছিল। কিন্তু একসময় নিজের রাজত্ব ছেড়েই দেশ ছাড়েন শিল্পা শিরোদকর (Shilpa Shirodkar)। এরপরেই ধীরে ধীরে হারিয়ে যান ইন্ডাস্ট্রি থেকে।
শিল্পা জানান, বিদেশে স্বাচ্ছন্দ্যময় জীবনযাপন করতেই তিনি এই সিদ্ধান্ত নেন। সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে শিল্পা শিরোদকর অপরেশ রঞ্জিতের সঙ্গে বিয়ে, স্বামীর ব্যাংকার হওয়া, ডাবল এমবিএ করা, জীবনের বিভিন্ন দিকের পরিবর্তন আসার মতো জীবনের নানা গল্প শোনান। আসলে শিল্পা শিরোদকর লন্ডনে চলে গিয়েছিলেন এবং তিনি তাঁর সিদ্ধান্তের জন্য কখনও অনুশোচনা করেননি।
শিল্পা শিরোদকর বলেন, ‘বিরতি নেওয়ার জন্য আমার কোনও অনুশোচনা নেই। আমি ব্যস্ত থাকার অভাব বোধ করি, তবে আমি এমন মিষ্টি, সুন্দর এবং সাধারণ মানুষের সাথে বিয়ে করে খুশি, আমার সংসার জীবন শুরু করা আমার পক্ষে খুব গুরুত্বপূর্ণ ছিল। দুর্ভাগ্যবশত আমি ভারত ছেড়েছি এবং এ কারণে আমার পক্ষে কাজ চালিয়ে যাওয়া কঠিন হয়ে পড়েছিল। আমি আমার স্বামীর সঙ্গে দেখা করি এবং দেড় দিনের মধ্যে আমি তাকে বিয়ের জন্য হ্যাঁ বলে দিই। পড়াশোনার জন্য বিদেশে যাচ্ছিলেন তিনি। আমি ওর সততা পছন্দ করতাম’।
শিল্পা শিরোদকর বলেন, ‘আমি ক্লাস টেন ফেল। আমার স্বামী একজন ব্যাংকার। তিনি ডাবল এমএ এবং খুব শিক্ষিত। কিন্তু ওর সামনে নিজেকে কখনও ছোট মনে হয়নি’। বিয়ের পর সিনেমার অফার পেয়েছিলেন? এমন প্রশ্নে শিল্পা বলেন, ‘বিয়ের পর মেয়েরা সেভাবে সিনেমার অফার পেতেন না তখন। আমি খুব একটা বড় তারকাও ছিলাম না।’
বিয়ে ও বিরতির পর আবারও পর্দায় ফিরেছিলেন শিল্পা। কাজ শুরু করেন ছোটপর্দায়। তবে প্রত্যাবর্তনের পর কেরিয়ারের একসময়ের যে খ্যাতি এবং স্বীকৃতি উপভোগ করছিলেন তা আর পাননি এ অভিনেত্রী। একসময় ডিপ্রেশনে ভুগতেন শিল্পা। অভিনেত্রী বলেন, “আমি কোনো সিনেমা পাইনি, আবার খুঁজিওনি। টেলিভিশনের দিকেও তাকাইনি। আমি যখন ভারতে ফিরি, তখন আমার মানসিক অবস্থা খুবই খারাপ ছিল। বাবা-মা দুজনকেই হারিয়েছি, এবং আমি গভীর ডিপ্রেশনে ছিলাম। আমি আসলে বোনের পাশে থাকার জন্য ভারতে ফিরেছিলাম। কাজের কথা মাথাতেই ছিল না।”
“২০১০ সালে যখন আমি ফিরে আসার সিদ্ধান্ত নিই, তখন আপারেশের কেরিয়ার তুঙ্গে ছিল। কিন্তু ও বুঝেছিল, আমাকে ফিরতেই হবে, এবং সে সবকিছু ছেড়ে আমার সঙ্গে ভারতে ফিরে আসে”, বলেন শিল্পা। যদিও ফিরে আসার সময় কোনও অভিনয়ে ফেরার ইচ্ছে ছিল না, তবুও সময়ের সঙ্গে সঙ্গে তিনি আবার অভিনয় জগতে প্রবেশ করেন, এমনকি টেলিভিশনের জন্য প্রযোজক হিসেবেও কাজ করেন। কিন্তু এই পেশাগত প্রত্যাবর্তনের পেছনে লুকিয়ে ছিল এক গভীর মানসিক যন্ত্রণার সময়কাল।
তিনি বলেন, “আমি প্রচণ্ড কাঁদতাম, চোখের জল থামাতে পারতাম না। ভালো কিছু হলেও কান্না থামত না। আমি যেন রোবট হয়ে গিয়েছিলাম, জীবনের প্রতি কোনো আগ্রহ ছিল না। প্রচণ্ড ওজন বেড়ে গিয়েছিল, চোখের নিচে কালি পড়ে গিয়েছিল, ঘর থেকে বের হতাম না, কোনো কিছুই করতাম না—শুধু মেয়েকে স্কুলে দিয়ে আসা আর নিয়ে আসা। বাড়িতে কারো সঙ্গেও কথা বলতাম না। কথা বললেও ভুল বোঝাবুঝি হতো। মাঝে মাঝে মনে হত, দেওয়ালে মাথা ঠুকি।”
আপনি কি অবসাদগ্রস্ত? বিষণ্ণ? চরম কোনও সিদ্ধান্ত নেবেন না। আপনার হাত ধরতে তৈরি অনেকেই। কথা বলুন প্লিজ…
iCALL (সোম-শনি, ১০টা থেকে ৮টা) ৯১৫২৯৮৭৮২১
কলকাতা পুলিস হেল্পলাইন (সকাল ১০টা-রাত ১০টা, ৩৬৫ দিন) ৯০৮৮০৩০৩০৩, ০৩৩-৪০৪৪৭৪৩৭
২৪x৭ টোল-ফ্রি মানসিক স্বাস্থ্য পুনর্বাসন হেল্পলাইন– কিরণ (১৮০০-৫৯৯-০০১৯)
(দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির টাটকা খবর, আপডেট এবং ভিডিয়ো পেতে ডাউনলোড-লাইক-ফলো-সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের App, Facebook, Whatsapp Channel, X (Twitter), Youtube, Instagram পেজ-চ্যানেল)
