জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: সোমবার কিশোর কুমারের (Kishore Kumar) জন্মদিন। সকাল থেকেই গানে গানে কিংবদন্তিকে স্মরণ করছেন সঙ্গীতপ্রেমীরা। এরই মাঝে ফের আলোচনার কেন্দ্রে কিশোর কুমার। সম্প্রতি ৭১ তম জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে অভিনেতা শাহরুখ খান এবং অভিনেত্রী রানি মুখার্জির প্রথম পুরস্কার জয়ের খবর নিয়ে যখন তোলপাড় চলছে, তখন অনেকেই বলিউড এর স্বর্ণযুগের সেইসব কিংবদন্তিদের কথা স্মরণ করছেন যাঁরা তাঁদের অসাধারণ প্রতিভার স্বাক্ষর রেখেও কোনোদিনও জাতীয় পুরস্কার জেতেননি। সেই তালিকায় রয়েছেন ধর্মেন্দ্র, রাজেশ খান্না, দেব আনন্দ, মধুবালার মতো নক্ষত্রেরা। কিন্তু সব থেকে অবাক করা বিষয় হল, এই তালিকায় রয়েছে কিংবদন্তি কিশোর কুমারের নাম।
আরও পড়ুন- Tv Actor: ২ কোটি ঋণ, ছেলের স্কুলের বাইরে বিক্রি করছিলেন সবজি! ‘সাইয়ারা’ ভাগ্য বদলে দিল এই অভিনেতার…
কিশোর কুমার শুধু একজন গায়ক ছিলেন না, ছিলেন একজন অসাধারণ অভিনেতা, সুরকার, এবং পরিচালক। ‘চলতি কা নাম গাড়ি’, ‘পড়োসান’, এবং ‘হাফ টিকিট’-এর মতো কালজয়ী চলচ্চিত্রে তাঁর অভিনয় আজও দর্শকের হৃদয়ে গেঁথে আছে। তবে তাঁর সাফল্যের মুকুটে জাতীয় পুরস্কারের পালকটি কোনোদিনও যুক্ত হয়নি। সম্প্রতি, এক সাক্ষাৎকারে কিশোর কুমারের পুত্র অমিত কুমার এই নিয়ে এক চাঞ্চল্যকর তথ্য সামনে এনেছেন।
অমিত কুমার জানান, ১৯৬৪ সালের ছবি ‘দূর গগন কি ছাও মে’-র জন্য কিশোর কুমার জাতীয় পুরস্কারের খুব কাছে পৌঁছে গিয়েছিলেন। এই ছবিতে তিনি তার পুত্র অমিত কুমারের বিপরীতে একটি গম্ভীর চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন। ছবিটি বক্স অফিসে দারুণ সফল হয় এবং জাতীয় পুরস্কারের জন্য বিবেচিতও হয়েছিল। কিন্তু সেই সময় মন্ত্রকের এক আধিকারিক পুরস্কার দেওয়ার জন্য উৎকোচ দাবি করেন।
অমিত কুমারের কথায়, “দিল্লি থেকে আমার বাবার কাছে ফোন আসে। সেই সময় ‘হকিকত’, ‘দোস্তি’ এবং ‘দূর গগন কি ছাও মে’-এর নাম জাতীয় পুরস্কারের জন্য বিবেচনা করা হচ্ছিল। ফোনের অপর প্রান্ত থেকে বলা হয়, যদি বাবা কিছু দেন, তাহলে তাকে মনোনয়ন পাইয়ে দেওয়া হবে। বাবা বলেছিলেন, ‘আমার ছবির সাফল্য নিয়ে তোমরা কেন মাথা ঘামাচ্ছো? আমার ছবি হিট করেছে, এটাই যথেষ্ট।” অমিত কুমার আরও বলেন যে ছবিটি মুম্বইয়ের সুপার সিনেমায় ২৩ সপ্তাহ ধরে চলেছিল এবং দিল্লি ও উত্তর প্রদেশে রজত জয়ন্তী পালন করেছিল। পরে ছবিটির স্বত্ব একটি তামিল প্রযোজকের কাছে বিক্রি করা হয়। সেই রিমেক ছবিটি, যার নাম ছিল‘রামু’, সেটি জাতীয় পুরস্কার জিতেছিল।
প্রসঙ্গত, ১৯৭৫-৭৭ সালের জরুরি অবস্থার সময়, আকাশবাণী ও দূরদর্শনে কিশোর কুমারের গান প্রচার বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। এর কারণ ছিল, কিশোর কুমার একটি সরকারি অনুষ্ঠানে গান গাইতে রাজি হননি, যা সরকারের নির্দেশ ছিল। তিনি তাঁর যথাযথ পারিশ্রমিক চেয়েছিলেন। এর প্রতিক্রিয়ায়, সরকার তাঁর গান প্রচার বন্ধ করে দেয়। এই ঘটনাটি সে সময় ব্যাপক আলোচিত হয়েছিল এবং অনেকেই কিশোর কুমারের এই সাহসের প্রশংসা করেছিলেন।
(দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির টাটকা খবর, আপডেট এবং ভিডিয়ো পেতে ডাউনলোড-লাইক-ফলো-সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের App, Facebook, Whatsapp Channel, X (Twitter), Youtube, Instagram পেজ-চ্যানেল)